
বই আলোচনা – লাইব্রেরি শার্ট খোলো, তৃষ্ণা বসাক, আলোচক-অমিতাভ সরকার
অক্ষরের মহাসপ্তমী রাতে প্রেমের ইষ্ট মন্দিরে
পড়তে বসে গেছি। আগেও পড়েছিলাম কিছুটা। আবারও পড়লাম। পরেও পড়ব।
এ এক নান্দনিকতার অপরূপ আনন্দ।সমস্তের মস্ত যোগান। অচেনার দূরাভিমুখে প্রেমের সুফি যাত্রা। ভেসে যাচ্ছি আমিও। কোথায়? কোন প্রদেশে! জানি না। বুঝতে পারছি না। কাব্য নদীর বেভুল অতলে অন্তরের শব্দাত্মা। কিছুতেই উঠতে পারছি না। ভাবনার মেঘ নিকটে, শ্যামলিমা বনানী স্তুতির আরও অভ্যন্তরে চলে যাচ্ছি। বিষয়বস্তু আর নিছক মূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে নেই। এর মধ্যে পাচ্ছি প্রাণের মায়াবী রূপস্পন্দন। ভিতরে কারা যেন গল্প করছে। একটু আধটু শব্দ শোনা যাচ্ছে, যত শুনছি আমিও ঢুকে যাচ্ছি চিন্তার সেই অমোঘ সাগর সরোবরে। কবি কথা গাইছেন। অক্ষরের পর অক্ষরের চাপানো শব্দের পালতোলা জাহাজের উপরে আমি একা, যাপনার খেয়ালী পাড়ে বসে সময়ের হাওয়া খাচ্ছি। মশা কামড়াচ্ছে, রক্ত চুষছে, বিচলিত করছে ক্রমাগত, কিন্তু প্রতিহত করতে পারছে না।
শান্তির বাদলা ভাষায় কখন যে ঘুমিয়ে পড়ছি, আবার কাজের বাস্তবতায় কখন যে জেগেও উঠছি, তা আমি নিজেই জানি না।
আমার লেখা কবিতার বই দিতে গিয়েছিলাম। করোনার পর এখন আর তেমন খোলে না। আর খুললেও তাও বেশ অনিয়মিত। জীবনে মনের কথা শোনার পাঠক আজ বেশ কম।
রাত পড়ে আসছে। খেতে উঠব। থালায় খাবার তো সাজানোই আছে এতকাল ধরে। খেয়ালই করিনি কোনোদিন।
অনুভূতির কোষাগারে এত বই পড়ে ওঠা আদৌ কতটা সম্ভব? আপনি পারেন। তাই আপনি আপনি। আমি পারি না, তাই আমি একটু জ্বলে উঠেই থেমে যাই।
বইটা পোশাক ছাড়তে ছাড়তে পাঠকের আয়নায় নিজের মুখ দেখে।
আবার নতুন কোনো পাঠক। আমার থেকে অনেক অনেক গুণ বেশি পড়ার, জানার, লেখার।
‘জোৎস্নাস্নাত স্নানঘর, হে পাঠক, স্নান করবে এসো,
বুদ্ বুদ অক্ষরগুলি ভেসে যায়, জুড়ায়
এস্প্রেসো…( পাঠকের স্নান, পৃষ্ঠা সংখ্যা-২৭)
বই-লাইব্রেরি শার্ট খোলো
কবি-তৃষ্ণা বসাক
প্রকাশক-ধানসিড়ি
প্রথম প্রকাশ-জুলাই ২০২২
দাম-১৪০
পৃষ্ঠাসংখ্যা-৬৪
অমিতাভ সরকার
বারাসাত, কলকাতা-৭০০১২৪
ছবি – বইয়ের প্রচ্ছদ, বইয়ের কবিতার একটি পাতা, অমিতাভ সরকার, কবি তৃষ্ণা বসাক

