The untold love story

https://www.facebook.com/storyandarticle/posts/194604235800219

ভালোবাসার জন্য অনন্তকালের প্রয়োজন নেই,,,, একটি মূহুর্তই যথেষ্ট। এক পসরা আবেগ,,,এক ঝুলি নিরবতা,,, হৃদয়ের নির্মলতা,,, আমার মনে হয় ভালোবাসার জন্য এইটুকুই প্রয়োজন। এখানে হাত ধরে সারাজীবন চলার প্রয়োজন হয় না,,,, প্র‍য়োজন হয় সারাজীবন ছায়া হয়ে পাশে থাকার,,,,সকল বিপদে আগলে রাখার,,,ভালোবাসার মানুষটির কষ্টকে নিজের ভিতরে যাপন করার। ব্যাস,,,এইটুকুই,,,, যদিও আমার definition এর সাথে অনেকের মতবাদ মিলবে না।
তাতে কি?? আমি তো মানি।

ভালোবাসাময় আবেগে হয়তো প্রতিটি মানুষ জড়িয়ে যায়। আমার সাথেও এমন টা হয়েছিল। স্কুল লাইফ থেকে অনেক ছেলেদের crush ছিলাম আমি। যখন crush বা ভালোবাসা কি জিনিস এইটাই বুঝতাম না,,তখন ও নানাভাবে নানা মানুষের অপ্রিয় কথা আমার শুনতে হয়েছে। ভয়ে কুকরিয়ে উঠেছি। পারিনি কারোর সাথে share করতে।
সেই ছোট্ট থেকে এই জিনিসটা কে আমি ভয় পেতাম। অনেক মানুষের অনেক কথা আর ভয়ের অতলে ধীরে ধীরে ডুবে যেতাম। এইভাবে ভয় পেতে পেতেই এক সময় University তে উঠে পরি। তখনো আমার মনে like,,love,,relationship নিয়ে অনেক ভয় জমা ছিল। ছিল না কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা।

University তে যাওয়ার ঠিক কিছু দিনের মাথায় একজনকে খুব ভালো লাগতে শুরু করে আমার। আমার থেকে দুই batch senior…. একজন।

রিশায়ান আহমেদ অর্নীল।
তার নামটা যেমন সুন্দর,,, মানুষটাও ঠিক তেমনি সুন্দর । তাকে দেখে আমার মনে ভালোবাসা নিয়ে জমে থাকা ভয়টা যেন নতুন পরিণতি পায়।
campus এ থাকা কালীন সব সময় সে আমাকে company দিত। varsity এর বড় ভাই হিসেবে অনেক টা শ্রদ্ধা করতাম তাকে। অনেক মেয়েদের ক্রাস ছিল সে। তাকে দেখলে সবাই যেন এক দৃষ্টিতে তাকিয়েই থাকত। আমার খুব jealous feel হত। চাইতাম না তার আশেপাশে কাউকে।

(যাই হোক আমার পরিচয় টাই তো দেওয়া হয়নি। আমি নিরীন আরিশা নির্ঝর।)

“””””” one day in college campus “”””””

অর্নিল- আচ্ছা নিরু,,,তুই কি জানিস যে তুই অপরাধী।

আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে ভ্রু কুচকে তার দিকে তাকালাম।

অর্নিল- কি?? বিশ্বাস হলো না??

আমি- নাহ,,,হয়নি😏

অর্নিল- আচ্ছা,,,তুই একাই কেন তিন তিনটে মানুষের নাম দখল করে রাখছিস??
নিরীন আরিশা নির্ঝর।
তিনটি নাম। তিন জন মানুষের নাম হতে পারত।

আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি।

আমি- অহ,,,আচ্ছা। তাই না?? তো আপনার নামটা তো আপনি অন্তত ঠিক করতে পারতেন,,, রিশায়ান আহমেদ অর্নিল না রেখে,,,,,, আলু,, পটল,,রাখতে পারতেন। এটা তো অনেক টা সুন্দর হত তাইনা??ছোট নাম,,,কারোর নাম দখল ই হত না।

অর্নিল- like seriously?? আলু,,,পটল….😆😂🤣😂🤣
এইসব কারো নাম হয় নাকি??
তোর মনে চাইলে তুই রাখ।

আমি- আমি তো আর কারোর নাম নিয়ে বিশ্লেষণ করিনি। বা,,,বলিওনি যে নাম এইটা রাখার কি দরকার ছিল। 😎

অর্নিল- হুম,,,বুঝেছি। তোর সাথে কথায় পারা যাবে না।

এইভাবে ছোট ছোট খুনশুটির মধ্যে দিয়ে আমার আর অর্নীলের সম্পর্ক টা অনেক টা এগিয়ে যায়। আমার কাছে তা ভালোবাসায় convert হয়।
জানিনা অর্নিলের কাছে তা কি ছিল।
আমি ভেবেছি অর্নিল ও বুঝি আমায় ভালোবাসে । কিন্তু কোনো দিনো মুখ ফুটে সে কিছু বলেনি। আর আমি,,,,আমি তো এইসব বিষয়ে কোনো দিন কিছু বলতেই পারতাম না।

এইভাবে প্রায় দুই বছর কেটে যায়। বাসা থেকে আমাকে বিয়ের জন্য প্রেশার দেয়। কিন্তু আমি তো বিয়ে করতে চাই না।
আমি তো একজনকে ভালোবাসি,,, মনে প্রানে ভালোবাসি। বাসায় না পারছিলাম তার কথা বলতে আর না পারছিলাম অর্নিল কে বলতে।
অর্নিল কে আমি অনেক ভাবে বোঝানুর try ও করেছিলাম। জানি না ও বুঝেছিল কি না!! আমি ওকে আমার বিয়ের কথা বলেছি অনেক বার। সে শুধুই অবাক চোখে তাকিয়ে ছিল। কিচ্ছু বলেনি। জিনিস টা আমায় খুব রাগাত। পারতাম না কিচ্ছু বলতে। ইচ্ছে করত টেনে ধরে একটা চড় লাগিয়ে বলি,,,,,,
বোঝেন না আমি আপনাকে কতোটা ভালোবাসি। এতোটা স্বার্থপর কেন আপনি? আমার মনের কথাগুলো একবার ও কেন জানতে চান না?? আমি যে আপনাকে ছাড়া অন্য কাওকে আমার জীবনে কল্পনা করতে পারি না। আমি যে আপনার ভালোবাসার অতল গভীরে তলিয়ে গেছি। আপনার হাসিতে মুগ্ধ হয়েছি। আপনার চোখের মায়ায় পরেছি। খুন হয়েছি আপনার গভীর সেই চাহনিতে,,,আমি যে বাকি জীবনটা আপনার সাথে কাটাতে চাই,,,,,, শুধু আপনাকেই ভালোবাসতে চাই।
কিন্তু তা আর বলা হয়ে উঠে না।
অর্নিল ও কোনোদিন আমাকে কিচ্ছু বলে না। কিন্তু আমি তার চোখের ভাষা হয় তো বুঝতাম।
আমি যখন তাকে আমার বিয়ের কথা বলতাম,,,,, তখন তার চোখে আমার জন্য ভয় দেখতে পেতাম,,,দেখতে পেতাম অনেক না পাওয়া।


আজ পাঁচ বছর পরে আমাকে আবার যে সেই চোখের দিকে তাকাতে হবে আমি ভাবিনি। সেই মুগ্ধ চাহনিতে আবার মাতাল হতে হবে ভাবিনি। তার মুখের কথায় দিশেহারা হতে হবে ভাবিনি। আজ আমি একদম স্তব্ধ। সেই চোখ,, সেই হাসি। একি রয়ে গেছে। পাঁচ বছরে এক ফুটাউ পালটায় নি অর্নিল।
অর্নিল ও আমার দিকে মুগ্ধ চোখে চেয়ে আছে। তার চোখে সেদিনের মত আজ ও কিছু না পাওয়া দেখতে পাচ্ছি। দেখতে
পাচ্ছি অনেক না বলা কথা।

আমি airport এ বসে আছি। আমার buisness এর কাজে আমাকে london যেতে হবে।

অর্নিল- কিরে নিরু,,,,,কেমন আছিস?? মনে আছে তোর আমার কথা??

আমি- সব কিছু কি এত সহজে ভোলা যায়??

অর্নিল- আজ ও তোর কথার প্যাঁচ টা রয়ে গেছে।
btw,,,,কোথায় যাচ্ছিস??

আমি- london…আপনি??

অর্নিল-আমি তো আমার এক ভাইকে receive করতে এসেছি।
তুই কি একা যাচ্ছিস?? তোর husband কোথায়??

আমি তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে জানিয়ে দিলাম,,,,,
সবার জীবনে ভালোবাসা আর husband নামক ব্যক্তিটা হয় তো থাকে না। কিছু কিছু মানুষের এইসব ছাড়াই চলতে হয়।

অর্নিল- তুই বিয়ে করিস নি??🙄

আমি- বাদ দাও না আমার কথা। সেদিন যখন ভাবনি,,,, আজ কেন ভাবছ???

আমার কথায় অর্নিল কিছুটা অপ্রস্তুত হলো।

আমি সেটা কাটিয়ে দিয়ে বলে উঠলাম,,,
তোমার বউ কেমন আছে??
সে চিশ্চয় দেখতে খুব cute?? varsity crush এর বউ বলে কথা,,,,,, cute,,, attractive তো হতেই হবে।

অর্নিল- আমার জীবন থেকে cute,,,,attractive বলতে যা ছিল,,,,, তা তো varsity তেই হারিয়ে গেছে। তারপর আর attractive কারোর ছোয়া পাইনি আমি। শত কাজের চাপে এখনো বিয়েটাই করা হয়নি।

আমি বলতে চেয়েছিলাম,,,, যে কিভাবে হারিয়ে গেলো তোমার সেই ভালোবাসা??
কিন্তু বললাম না। কারন তার উত্তর অর্নিলের কাছে নেই,,,,
আর যেহেতু আমি উত্তর টা জানিই তাই বলার আর কোনো প্রয়োজন হয় না।

“”””””In varsity life””””””

অনেক বার বলার try করেও নিজের মুখে অর্নিল কে যখন বলতেই পারিনি আমি তাকে ভালোবাসি,,,, তখন পারিবারিক ভাবে ঠিক করা বিয়ে টা করা ছাড়া আমার কাছে আর উপায় ছিল না। কিন্তু আমি 2nd রাস্তা তৈরী করে নিয়েছিলাম।
পালিয়ে গিয়েছি বাসা থেকে। কেও জানতো না আমি কোথায় আছি?? আর্নিল ও হয় তো অনেক খুজেছে। কিন্তু পায়নি আমাকে। আমি london এ চলে যাই। আমার এই ছোট্ট জীবনে আমি অর্নিল কে এতো টাই ভালোবেসে ছিলাম যে আমার জীবনে ওকে ছাড়া আর কাওকে আমি কল্পনাই করতে পারি না। ভালোবাসলেই যে সব ভালোবাসা পরিণতি পাবে এমন টাও না। তাছাড়া আমি যখন ওকে বলতেই পারিনি আমি ওকে ভালোবাসি তখন ওর সামনে থেকে কষ্ট পাওয়াটা ছিল নেহাত বোকামি। তাই কাওকে কিচ্ছু না জানিয়ে হারিয়ে যাই আমি। সবার চোখের আড়ালে। সবার থেকে অনেক দূরে। এই কয় বছরে অনেক বার চেয়েছিলাম অর্নিলের সাথে কথা বলতে,,,, কিন্তু পরক্ষনেই মত পাল্টে ফেলি। কিই বা হবে দেখা করে। এইভাবে নানা দোটানায় থেকে তিন বছর পর দেশে ফিরি নিজের বাবা মার কাছে। তার কিছু দিন পর আবার লন্ডন এ ফিরে যাই। ৫ বছরে দুইবার দেশে এসেছি।) কখনও অর্নিলের সামনে গিয়ে দাড়াতে পারিনি। ওর সামনে গেলে যে আমার সব উল্টো পাল্টা হয়ে যায়। হারিয়ে যায় সব কথা।)

অর্নিল- নিরু,,,,,একটা কথা বলব??

আমি- হুম,,,বলো।

অর্নিল- আমি কি,,,,
বলেই থমকে গেলো।

আমি- কি হলো বলো। (মনে অনেক টা আশা নিয়ে…… ভাবলাম হয় তো এইবার ও বলবে। শেষ হবে আমার অপেক্ষার প্রহর।)

অর্নিল- নাহ,,,কিছু না।

মুহুর্তেই আশার প্রদীপ নিভে গেলো।

আমি- আমি আসছি,,,,, আমার ফ্লাইটের সময় চলে এসেছে।
বলে আর এক মুহুর্তও আমি ওর সামনে দাড়াইনি। কি করেই বা দাড়াতাম,,,,,ভালোবাসি যে,,,,বড্ড ভালোবাসি। নিজেকে control করতে পারতাম না আমি। হারিয়ে যেতাম ওর মাঝে।
আমাদের ভালোবাসা টা না হয় না বলাতেই রয়ে যাক।রয়েই যাক না কিছু অনুভূতি অদৃশ্যতার আড়ালে,,,,অপূর্ণতায় ঘেরা বেড়াজালে।
খুব করে আকাশ কালো হয়ে ঝুম বৃষ্টি নামলে হয়তো বা কোনো দিন মনের বেড়াজালের প্রাচীর ডিঙিয়ে কোথাও “আমি” নামক ব্যক্তিটি উকি দিব!
পরিশ্রান্তি মুখর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতেই হয়তো বা কখনো চোখের সামনে ভেসে উঠবো!
এটুকুই বা কয়জন পায়?
আমাদের ভালোবাসার পরিপূর্ণতা টা না হয় এভাবেই রয়ে যাক নিশীথের আবডালে,মনের অন্তরালে!

#Short_story
#The_untold_love_story
#Writer_Rownak_jahan_Ripti

রওনক জাহান রিপ্তী

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *