পূঁজারীর পাঁচালী
-সৌরভ দুর্জয়
—————————–
এখন আর আসো না বুঝি নাট মন্দিরে,
পিরোজপুরের কদমতলা বাজারের পাশে;
রাস্তা ঘেসে গড়ে উঠা যে মন্দির,
যেখানে আমার যাওয়া নিষেধ থাকলেও;
তোমাকে দেখা নিষেধ ছিলো না।
আরতিতে, ভজনে,সংগীতে,নৃত্যে কোথায় ছিলে না তুমি?
হরিনী চোখে, নিষ্পাপ মুখে,মায়াবী বুকে, শুভ্র বসনে,
তুমি মন্দিরের ভক্ত ছিলে এক নিষ্ঠ।
কোনো দিন বোঝো নি তোমার এক পূঁজারী
মন্দিরের বাইরে ফুল নিয়ে করতো অপেক্ষা,
দেয়া হয় নি একটা ফুলও কোনো কালে;
দেবী তোমার গলে, নিরুপয় পূজারী ভাসায় দিতো
সেই ফুল রাতের আঁধারে বলেশ্বরের জলে।
কোনো শিবরাতে বলোনি আমার নাম, চাওনি আমায় পেতে,
তাই একদিন ব্যাঘাত ঘটলো মন্দিরে তোমায় দেখতে,
ডাক্তার বিডি হালদার চোখ মেপে চশমা দিলো এঁটে,
ডাক্তার সুনীল কৃষ্ণ বল ভিটামিন দিলো লিখে
মাসুর মা শুরু করলো কচু শাক আর মশুর ডাল রান্না,
বাজার থেকে কেনা শুরু করলাম মলা ডলা মাছ,
চোখের জ্যোতি বাড়বে বলে;তোমাকে দেখবো বলে,
তবু তোমার শুভ্র বসন এ চোখে আর দেখা হলো না,
নাকে নেয়া হলো না আরতীর ধূপের ঘ্রাণ,
কানে এলো না ভজনগীতি।
কালে ভদ্রে ওদিকে গেলে অজয় দা, নারাণ দা,কিংবা
শাহ্ আালম ভাইর কাছে জিজ্ঞাস করি তোমার কথা,
কেউ দেয় না উত্তর; ওরা রাখে না তোমার খবর;
আমার মতো,সবাই ব্যস্ত ব্যবসা নিয়ে,যে যার মতো।
হয়তো তুমিও ব্যস্ত শিব পূজায়;সংসার গোছানো নিয়ে,
সময় কোথায় পূজারীর ফুল নেয়ার,
নাট মন্দিরে আসার।
২৪/০৪/২০১৮
রাজবাড়ী।