
নিজেই আলো
সৌদামিনী শম্পা
প্রতিটা মনের ভেতরেই একটা চোরকুঠুরি থাকে। যাতে শুধুই অন্ধকার। কারো কুঠুরিটা বড়, কারো ছোটো, কারো খুব আঁধার, কারো বা আলো আঁধারির খেলা। কিন্তু কিছুটা অন্ধকার সবারই আছে। তাই তো আনন্দেও হঠাৎ হঠাৎ মন খারাপ হয়ে যায়! কোনো এক সকালে ঘুম ভেঙে নিজেকে বড্ড একা মনে হয়। কেউ খারাপ ব্যবহার করলে কষ্ট পাই , কেউ ছেড়ে গেলে ভেঙে পড়ি। কেউ একবার “ভালোবাসি” বললে মনে হয়, তার সব ভালোবাসার ইজারা সেই মুহূর্ত থেকেই আমার একার। সংসারের পরিবর্তনশীলতার বাস্তবতাটা ভুলে যাই। বোকার মত ভাবতে থাকি, যা কিছু ভালো সব আমার পাওয়ার, আমার সঙ্গে সব সময় ভালো হবে, কেউ একবার ভালোবাসি বলেছে মানে তার ভালোবাসা আমার কেনা?! কাউকে চাইলে, সেও আমাকে চাইতে বাধ্য! আমি যা বলছি সব ঠিক। আমার বিরুদ্ধ পক্ষ হলেই সে ভুল!
এই সবই মনের ওই অন্ধকার কুঠুরিটার খেলা। যেদিন ওখানে আলো পৌঁছবে, সেদিন এই দ্বিধা দ্বন্দ, মন খারাপ, মন্দলাগা সব নিমেষে উধাও। মনের ভেতর আলোটা একবার জ্বললে,সেটাকে শুধু জ্বালিয়ে রাখতে হবে। ব্যস্। আর কিছু না!
তখন সব ভালো লাগবে। সব সুন্দর! নিজের পাকা চুল ভালো, চোখের নিচের কালি ভালো, মুখে গলায় রিংকল ভালো, কেউ হাজার পরকীয়া করলে ভালো, কেউ আমাকে হাজার কথা বললে তা ওই কানের পর্দা পর্যন্তই থাকবে, অডিটরি স্নায়ু থেকে মাথায় গেঁথে যাবে না। তখন প্রতিটা সকাল সুন্দর, প্রতিটা মানুষ সুন্দর, প্রতিটা মুহূর্ত সুন্দর। তখন আপনি সচ্চিদানন্দ! অর্থাৎ ঈশ্বর। ঈশ্বর তো সেই, যার মধ্যে শুধুই আলো, শুধুই আনন্দ, শুধুই ভালো। যেদিন মনের অন্ধকার কুঠুরিতে আলোটা জ্বালিয়ে ফেলবেন, সেদিন আপনিও ঈশ্বর! নিজেই আলোর উৎস! জানি কাজটা সহজ নয়, কিন্তু চেষ্টা করতে দোষ কি?