Satyen Mondal

নিবন্ধ : ফেসবুক সাহিত্য
সত্যেন মণ্ডল
📌📌
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখছি, ইদানিং ফেসবুকে বিভিন্ন সাহিত্যের গ্রুপে যেখানে কবিতা, গল্প এবং আরও অন্যান্য রচনা যা দু চারটে পড়ি বা চোখে পড়ে তার মধ্যে বেশ কিছু লেখা মৌলিক নয়। কোন বড় বা নামজাদা কবি বা সাহিত্যিকের কোন লেখা হয়তো পূর্বে পড়া ছিল তাকে অনুকরণ করে অন্য একটি লেখা সৃষ্টি করা হচ্ছে, সাহিত্যের জগতে এরকম ট্রেন্ড মনে হচ্ছে প্রগতির পথ রুদ্ধ করছে।
একজন কবি বা সাহিত্যিকের লেখা চুরি করে নিজের নামে পত্রিকায় বা অন্যগ্রুপে চালিয়ে দেওয়ার প্রবণতাও নিন্দার্হ, যদিও এটা খুব পুরানো পদ্ধতি । তবে নতুন যারা কবি বা লেখক হবার স্বপ্ন দেখেন তাদের এরকম চিন্তা থেকে শত হাত দুরে থাকা উচিত।
একজন লেখক কবি নিজের পরিশ্রম স্বপ্ন তিল তিল করে দিয়ে একটা লেখা লিখেছেন তিনি যাতে তার উপযুক্ত সম্মান মর্যাদা পান সেদিকটা অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত। মনে রাখতে হবে তিনি নাম যশের কাঙাল, তাকে অপমান বা ছোট করার প্রবণতা ঠিক না।
ফেসবুক সাহিত্যকেও সাহিত্য বলে ভাবার যুগ এসে গেছে, বিজ্ঞান প্রযুক্তির এই যুগ নতুন কবি লেখকদের আশীর্বাদ স্বরূপ, কে বলতে পারে অদূর ভবিষ্যতে এর গুরুত্ব বাড়বে না।
যারা এখন ফেসবুকের বিভিন্ন সাহিত্য বা সঙ্গীতের গ্রুপ পরিচালনা করে চলেছেন তাদের এই পর্দার অন্তরালে থেকে নিরলস পরিশ্রম আর নিঃস্বার্থ ত্যাগ সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে লেখা পছন্দ অপছন্দের ব্যাপারে তারা অনেক সময়ই নিজস্ব রুচি পছন্দকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন যা সঠিক পদক্ষেপ নয়। কবিতার ক্ষেত্রে দেখছি ছন্দ মিলিয়ে কবিতা লেখার প্রবণতা থেকে এরা অনেকেই বের হতে পারেনি, আধুনিক ভাবধর্মী কবিতা এদের কাছে উপেক্ষিত হয়,এদের পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সর্বদা এরা পুরানো পন্থি, পুরানো থাক নতুনও আসুক, এটা মানতে হবে, প্রগতি বিরুদ্ধ মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে এবং উদার হতে হবে।
পরিশেষে, যারা সাহিত্য সঙ্গীত আবৃত্তির সাধনা করে, বিশেষত, যারা নবিশ তাদের কাছে ফেসবুক বন্ধ দরজা খুলে দিয়েছে, অনুশীলন বা চর্চা করার এমন মঞ্চ বিজ্ঞান প্রযুক্তির সত্যিই আশীর্বাদ,যা আগে ছিলনা । একসঙ্গে চর্চা ,আর প্রতিযোগিতার মধ্যে নিজের ক্ষমতার পরীক্ষা এখন সম্ভব হচ্ছে।
এক সময়ে বিভিন্ন ছাপানো পত্র পত্রিকার সঙ্গে এদের প্রতিযোগিতা শুরু হবে না কে বলতে পারে ? জনপ্রিয় বিভিন্ন পত্র পত্রিকার লেখকরা এবং পরিচালকরা অবশ্য কখনও ফেসবুকের সাহিত্য গুরুত্ব দেবেনা, ওগুলো আবার সাহিত্য বলে উপহাস করবে। গুরুত্ব আজ সবাই না দিলেও একদিন দিতে বাধ্য হবে। সময় সেদিকেই এগিয়ে চলেছে।

6.png

সত্যেন মণ্ডল

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *