Rstan Basak

বর্ষা মানুষ ও প্রকৃতির জন্য এক নতুন আশা বয়ে আনে । ”

কলমে – রতন বসাক

প্রচন্ড গ্রীষ্মের দাবদাহে মানুষের দেহ ও মন যখন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে আর একটু বৃষ্টির কামনা করে তখন শুরু হয় বর্ষাকাল । কখনো কম কখনো বেশি কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত চলতে থাকে আর রাস্তা ঘাট সব কাদায় ও জলে ভরে যায় । এই বৃষ্টির জন্য ছোটদের স্কুলে যেতে, অফিস যাত্রীদের অফিস যেতে কিংবা ব্যবসায়ীদের ব্যবসার কাজ অনেক ব্যাহত হয় । তবে চাষি ভাইদের কৃষি কার্যের জন্য এই জলের প্রয়োজন হয় অত্যাধিক ।

বর্ষা অর্থাৎ বৃষ্টি চাষি ভাইদের মনে অানে আনন্দ । নতুন উৎসাহে তারা জমিতে ফসল ফলাতে উদ্যোগ নেয় । আমার মনে হয় এই পৃথিবীর মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাতেই ছ’টা ঋতুই ভালো ভাবে অনুভব করা যায় । প্রত্যেকটা ঋতুর আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে । শরীর ও মনকে ভালো রাখার জন্য এই ঋতুর পরিবর্তন প্রয়োজন । ঋতু গুলোর মধ্যে বর্ষা ঋতু একটা বিশেষ স্থান করে নেয় মানুষের মনে ও জীবনে । আমাদের এই পৃথিবীকে সুস্থ রাখতেও বর্ষার প্রয়োজন আছে ।

বৃষ্টিপাত পরিমাণ মতো হলে খুব ভালো কিন্তু কখনো কখনো অত্যধিক হওয়ার ফলে বন্যার রূপ ধারণ করে কোথাও কোথাও । প্রচন্ড গরম থেকে স্বস্তি ও শান্তি পেতে মানুষ বর্ষাকে সু-স্বাগতম জানায় । বর্ষার জলে পৃথিবীর শুষ্ক ও রুক্ষ মাটিও অনেকটাই স্বস্তি অনুভব করে । আর এই বৃষ্টির জল আমাদের চাষ আবাদের জন্য ভীষণ উপযোগী । জল পেয়েই কৃষিকার্যে তৎপরতা বেড়ে যায় । চাষী ভায়েরা নতুন উৎসাহে তাদের কৃষিকার্যে মন লাগায় । বৃষ্টির জল ছাড়া কৃত্রিম উপায়ে জল দিয়ে ফসল খুব একটা ভালো ও বেশি হয় না ।

বিশ্ব উষ্ণায়ন ও পরিবেশ দূষণের জন্য আজকাল বর্ষা সময় মতো আসে না । আবার এও দেখা যায় কোন কোন সময় অত্যাধিক বৃষ্টিপাত হতে থাকে এই বর্ষাকালে । যার ফলে নদী, নালা, পুকুর, খাল, বিল সব জল ভরে উঁপচে পড়ে । এবং অনেক জায়গায় বর্ষার বৃষ্টির জলের জন্য মানুষের জীবনযাত্রাও ব্যাহত হয় । মানুষের দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা করতে খুবই অসুবিধা হয় বেশি বৃষ্টিপাত হলে । তবে এই বর্ষাকালটা লেখকদের জন্য খুবই ভালো কেননা তারা ভাবুক হয়ে ওঠে ওই সময় । বৃষ্টিপাতের ঝম্ ঝম্ শব্দে নিরালা ঘরে একা বসে নতুন কিছু লেখার প্রেরণা পায় ।

বর্ষা অর্থাৎ বৃষ্টি কম হোক কিংবা বেশি সেটা সবই প্রকৃতির ইচ্ছায় হয় । তবুও আমরা আমাদের জীবনে বর্ষার জলকে আহ্বান জানাই । কেননা আমরা সবাই জানি যে জলের অপর নাম জীবন । জল ছাড়া আমাদের জীবন এক মুহূর্তও চলে না । দূর দূরান্তের গ্রামে যেখানে কৃত্রিম জলের ব্যবস্থা নেই । সেখানে এই বর্ষার জলই পুকুরে জমা হয, সেই জল তারা ব্যবহার করেন তাদের দৈনিন্দন ঘরোয়া কাজে । আর সেই জল প্রকৃতি বর্ষাকালে আমাদের সব জায়গায় ঢেলে দেয় সবার জন্য ।

*********

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *