#খুব দেখতে ইচ্ছে করে
তোদের মনে পড়ে?
চৈতে রোদে যখন স্বপন মালির বাগানে ডাঙ্গুলী খেলতাম,,
ওর বউয়ের কুদৃষ্টি পড়তো আমাদের সুখসঙ্গে।
মালি বুড়ো লাঠি নিয়ে আমাদের তাড়িয়ে
বউয়ের হুকুম তামিল করত।
আর আমরা এক ছুটে ওর রজনীগন্ধার বাগানে লুকিয়ে
চোর পুলিশ খেলতাম।
সারাদিন গাদন খেলে ওদের ঐ ডোবা খানাটায়
নাইতে না গেলে আমাদের শান্তিই হতো না!
ঝগড়াটে বুড়িটার গলা চিরে আমরা দেখতে চাইতাম
এতো ঝাঁঝ সে কই পায়!
ধনুকের মতো বাঁকা বুড়ো লাঠি নিয়ে তেড়ে আসতো মারতে,
তাতে কী–
নানা অজুহাতে ওদের দুপুরের ঘুম আমরা হারাম করবোই,
ডোবা পুকুরটার মধ্যেই যেন ওদের প্রাণ পাখি বান্দা ছিল!
শুনতাম টাকার মাইঠে ঘুরতো পুকুরে!
লতাপাতা,আবর্জনা পচা ডোবায় কোথা দিয়ে যে আসতো এত্তো মাছ!
মধু দাদু রসিকতা করে বলত, বুঝলি রে ছোরা,
এই ডোবা পুকুর চৌকি দিতে দিতে সন্তান নিতে
ভুলে গেছে শালার বুড়িবুড়া….!
দুধ-কলা-চিনি,ডাব,চালের গুঁড়া, আর ধূপ ধূনোর গন্ধে তখন ওদের কাঁচা বাড়িতে বসতো সত্যপীরের বাসর।
ছিন্নি খাবার লোভে কি যে কাড়াকাড়ি
বেলজিয়াম গ্লাসে ভরে!
পাশেই কলকিবাজরা ডুবে থাকতো কল্কি বাবার টানে,
ওতে কী স্বাদ ছিল হয়তো ব্যোম ব্যোম ভোলানাথ জানে!
আজ অনেক বছর পরে,,
তোরা সব কী দেখতে এলি মালির বাগানে?
পুরনো সেই ডোবা পুকুর ভরাট হয়ে গেছে বালির চাতালে,
‘নিশ্চুপ প্রোপার্টিজ’ ঢুকে গেছে বুড়োবুড়ির হাড়হাড্ডির সারে।
দাম নেই মালি বিহীন ফুলের বাগানের,
কে আর ডোবে গন্ধেভরা ডোবা পুকুরের জলে!
শালুক খোঁজে শাপলা ফুলে, কাবাব রোস্টটি ফেলে!
মধু দাদুও ফুরিয়ে গেছে রসের হাঁড়ি ভেঙে
ইট পাথরের বাগান হয়েছে ‘স্বপ্ন টাওয়ার’ এর ছাদে,
ভর দুপুরে কান পেতে শোন মরা বুড়োবুড়ি কাঁদে,
ওদের কতো কষ্ট লুকিয়ে আছে আবাসনের ফাঁদে!!