maitrayee sinharay

আপনজন
মৈত্রেয়ী সিংহরায়
01.11.2021

মোবাইলটা বেজে যাচ্ছে। সুচেতনার ধরার
সময় নেই। নটার বাসটা ধরতেই হবে।
সময়ে স্কুলে পৌঁছতে না পারলে সকলের
বাঁকা দৃষ্টিতে বড্ড অস্বস্তি হয়। বেশ কয়েকদিন কান ঘেঁষে লেটমার্ক বাঁচিয়েছে। ছেলেটার সারাদিনের খাবার তৈরি করে রাখতে রাখতে ভাবে এই সময় আবার কে ফোন করল? রান্নাঘর থেকে কাজের মেয়েটিকে চেঁচিয়ে বলে— ” টুম্পা ফোনটা ধরত?”
টুম্পা ফোন ধরে বলে— “বৌদি তোমার
শাশুড়ির ফোন গো।” সুচেতনা মনে মনে বলে —“এই সময়ে মায়ের ফোন! মা তো জানে এই সময় আমি খুব ব‍্যস্ত থাকি। কী জানি কিছু হল না তো? কতদিন বলেছি আমাদের কাছে চলে আসুন সবাই মিলে
একসঙ্গে থাকব। আমার ছেলের জন‍্যও
আমার চিন্তা থাকবে না। ঠাকুমা দাদুর
আদরে বড় হতে পারত। কিন্তু কিছুতেই
আসবেন না। নিজে হাতে বাড়ি করেছেন।
বাড়ির মায়া বড় মায়া…..”। বলে —“একটু
রান্নাঘরে নিয়ে আয় তো। ফোনটা আমার
কানে ধর”।
—–“-হ‍্যালো! হ‍্যালো মা। কিছু হয়েছে।”
ফোনের ওপারে কান্নাভেজা স্বর —“সুচেতনা
আজ সকালে আমার গলা দিয়ে দু’বার তাজা রক্ত বেরিয়েছে। ভয়ে আর থুতু ফেলতে পারছি না”।
সুচেতনা তাড়াতাড়ি হাত ধুয়ে ফোন ধরে।
বলে—-“সে কি! বাবাকে বলেছেন?”
—–“কাকে বলব? তোমার বাবার গায়ে জ্বর।
ভীষণ কাশছে।” বলেই কান্না শুরু করে দেন। সুচেতনা বলে— “ঠিক আছে। আমি দেখছি। কিছু খেয়েছেন?”
——“না ভয়ে খেতে পারছি না। ”
সুচেতনা বলে —-“কিছু হবে না। একটু গরম
দুধ খান। আমি যাচ্ছি।”

যাব বললেই তো যাওয়া হয় না। বর্ধমান থেকে বোলপুরের দূরত্ব অনেকটাই। নিজস্ব
গাড়ি নেই। তাড়াতাড়ি একটা ভাড়া গাড়ির
ব‍্যবস্থা করে সে। ছেলেটার মাত্র তিন বছর
বয়স। তাকে নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। টুম্পাকে সব কিছু বুঝিয়ে বেরিয়ে পড়ে। স্কুলে জানিয়ে দেয় আজ সে যেতে পারবে না।
গাড়ির কাচটা নামিয়ে দেয় সুচেতনা। নভেম্বরে শীতের ছোঁয়া বেশ টের পাওয়া যায়। কিন্তু ভিতরে একটা চাপা টেনশনে
একটু গরমই করছিল। স্বামী অনিন্দ‍্য অফিসের কাজে মুম্বাই গেছে। তাকে আর কিছু জানায় না সুচেতনা। শুধু শুধু চিন্তা
বাড়বে।
যখন পৌঁছল সূর্য পশ্চিম দিকে হেলতে
শুরু করেছে। সুচেতনার জন‍্য পথের দিকে
তাকিয়ে বসে ছিলেন শাশুড়ি মা রমাদেবী। বাবার গায়ে বেশ জ্বর। সুচেতনা বলে —-“আর রক্ত বেরিয়েছিল মা?” শাশুড়ি মা বলেন—-” না আর বেরোয় নি। কিন্তু খুব ভয় করছিল। তাই তাড়াতাড়ি তোমাকে জানালাম।”
সুচেতনা বলে —-“না ঠিক আছে। ঠিকই
তো করেছেন। দিদিভাইদের খবর দিয়েছেন
নাকি?”
——-“হ‍্যাঁ দিয়েছিলাম। রঞ্জনা বলেছে চিন্তা করতে না, ঠিক হয়ে যাবে।ঠাকুরের
নাম করতে বলেছে কিন্তু তুমিই বলো ঠাকুরের নাম করে কি থাকা যায়! আর কঙ্কনা বলেছে ওর মেয়ের স্কুল আছে। এখন আসতে পারবে না।তোমার বাবা বললেন সুচেতনাকে খবর দাও।”

এই রোগাটে গড়ন, কোমলতা জড়ানো
সপ্রতিভ মেয়েটিকে শ্বশুরমশাই বেশ পছন্দ
করেন। শাশুড়িমা কেন যে এই মা-মরা মেয়েটিকে নিজের মেয়ে মনে করতে পারলেন না কে জানে! কথায় কথায় নিজের মেয়েদের সঙ্গে তুলনা। সুচেতনা কিছু বলে না। তাড়াতাড়ি সব গুছিয়ে নেয়।
শ্বশুরমশাই এর গায়ে হাত দিয়ে দেখে বেশ
জ্বর। বলে….” বাবা উঠুন। আমি গাড়ি এনেছি। আপনাদের নিয়ে চলে যাই। ওখানে
ভালো ডাক্তার আছে। যাওয়ার পথে দেখিয়ে
নিয়ে চলে যাব। আপনার নাতিও খুব খুশী
হবে।”
রিটায়ার্ড অধ‍্যাপক অনিমেষবাবু কোনো
আপত্তি করেন না। বোঝেন এই মেয়েটি
ছাড়া তাদের দেখার কেউ নেই। সস্নেহে
সুচেতনার মাথায় হাত রাখেন।
আগে থেকেই ফোনে সুচেতনা মেডিসিনের ডাক্তারের কাছে নাম লিখিয়ে
রেখেছিল। খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখানো
হয়ে গেল।
মায়ের তেমন কিছু হয়নি। হয়তো কোনো কারণে ঠান্ডা লেগে বা গলা চিরে রক্ত বেরিয়েছে । কিন্তু বাবার নিউমোনিয়া। অনেক ওষুধ ইনজেকশন নিয়ে সুচেতনা
বাড়ি আসে। একটু নিশ্চিন্ত হওয়া গেল।
শাশুড়ি মা বেশ হাসি খুশি। মেয়েদের সঙ্গে নানা গল্প, কি করতে হবে বাবাকে কিভাবে যত্ন করতে হবে নানা উপদেশ আসতে লাগল। সুচেতনা সমস্ত রান্নাবান্না করে বাবার ওষুধ কখন কি খাবে সব ঠিকঠাক করে দিয়ে স্কুলে যায়। যাবার সময়
কানে আসে বাবা মাকে বলছেন— ” বেশি
মেয়েদের কথা শুনে উতলা হয়ো না। সুচেতনা বুদ্ধিমতী ও দরদী। ওকে ওর মতো
করতে দাও। অনিন্দ‍্য ফোনে আমাকে বলেছে সুচেতনা ভীষণ যত্নশীলা। আমরা
নিশ্চিন্ত হয়ে থাকতে পারি।”
সুচেতনা হাসতে হাসতে বেরিয়ে যায়।
বাড়ি ফিরে দেখে ছেলে দারুণ খুশি। ঠাকুমা দাদুকে কাছে পেয়েছে। কিন্তু সারদিন ভালো
করে খায়নি। টুম্পার কোনো কথাই শোনেনি। সুচেতনা তাড়াতাড়ি ওয়াশ রুমে
যায়। ছেলেটাকে খাইয়ে চায়ের কাপটা যেই
মুখে তুলেছে পাশের ঘর থেকে মায়ের চিৎকার— “সুচেতনা তাড়াতাড়ি এসো তোমার বাবা কেমন করছেন।” সুচেতনা গিয়ে দেখে বাবা সারা ঘরময় পটি করে ফেলেছেন। শরীর ঠান্ডা বরফ। মনে মনে ভাবে স্ট্রোক হয়ে যায়নি তো! তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যাবার ব‍্যবস্থা করে। হসপিটালে ডাক্তারবাবু বলেন স্ট্রোক হয়নি। নিউমোনিয়া। তবে ভর্তি করতে হবে।স‍্যলাইন ইনজেকশন চালু করেন। আজ রাতে রুগীর কাছে পুরুষ কাউকে থাকতে হবে কারণ এটা মেল ওয়ার্ড। কিন্তু পুরুষ
এখন কোথায় পাবে? ডাক্তারের অনুমতি নিয়ে সুচেতনা সারা রাত বাবার পাশে বসে থাকে। সকালের দিকে একটু ভালো। কথা
বলছেন। সুচেতনা একটু নিশ্চিন্ত বোধ করে। বাবা বলেন—–“তোমার মাকে একটু দেখতে ইচ্ছে করছে। একবার নিয়ে আসবে?” সুচেতনা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে বাবা ভালো আছেন। ইনহেলার দিয়ে অক্সিজেন খুলে দেন। সুচেতনা বাড়ি এসে শাশুড়িমাকে নিয়ে
যায়। মা বসে থাকেন বাবার কাছে। সে ওষুধ ইনজেকশন কিনতে যায়। মিনিট কুড়ি পর ফিরে মাকে বাড়ি দিয়ে আসে।
ফিরে এসে দেখে বাবা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছেন। বুকটা যেন একটু বেশীই ওঠানামা করছে। বাবার মাথায় হাত দিয়ে বলে —“কেমন আছেন বাবা?” অনিমেষ বলেন —-“ভালো আছি মা। তুমি একটু চা বিস্কুট খাও।” সুচেতনা বলে—-“আপনি চা খাবেন বাবা?” অনিমেষ বলেন —” না মা। একটু জল দেবে?” সুচেতনা বাবাকে জল দেয়। জল খেয়ে বাবার যেন সব তেষ্টা মিটে যায়। ঘাড়টা একদিকে হেলে পড়ে। সুচেতনা “বাবা” “বাবা” বলে ডাকে। কোনো সাড়া না পেয়ে ছুটে যায় ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার আসেন। বুকটা খুব জোরে জোরে বেশ কয়েকবার পাম্প করেন…. মুখে একটা অস্ফুট শব্দ—” He is no more”।
কান্নায় ভেঙে পড়ে সুচেতনা,বলে—” আমার
তো মনে হয়েছিল গতকাল আমার বাবার
স্ট্রোক হয়েছে। আপনি একটু বুঝতে পারলেন না! ভুল চিকিৎসা করলেন! আমি
এখন কি করে মায়ের সামনে দাঁড়াব
ডাক্তারবাবু। আপনি বলুন।” —বয়স্ক ডাক্তার সুচেতনার মাথায় হাত রাখলেন। বললেন –“আপনার বাবা?” সুচেতনা বলে—- “শ্বশুরমশাই তো বাবাই হন ডাক্তারবাবু?”ডাক্তারবাবু সুচেতনার মাথায় আরও একবার হাত রেখে চলে গেলেন।
অনিন্দ‍্য ট্রেনে চেপেছিল। আজ সন্ধ‍্যায় নামবে। সুচেতনা বাড়ি এসে কান্নায়
ভেঙে পড়ে। টুম্পা খবর পেয়ে মাকে আগেই
খবরটা দিয়েছিল। মা খাটের এককোণায়
বসে কাঁদছেন। সুচেতনা পাশে গিয়ে বসে।
আশেপাশের বাড়ির লোকজন, আত্মীয়স্বজন সকলেই যাতায়াত করছে।
ননদরাও সব চলে আসেন বিকেলের মধ‍্যে।
সন্ধে নাগাদ অনিন্দ‍্য এলে মা ছেলের কাছে
কান্নায় ভেঙে পড়েন। আর বারবার বলেন
—-” আমি কি করে থাকব?” অনিন্দ‍্য মায়ের
মুখটা বুকের কাছে চেপে ধরে। তারপর সুচেতনার হাতদুটো ধরে বলে —-“আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ সুচেতনা।”
ইতিমধ‍্যেই বলাবলি শুরু হয়ে গেছে
ভালো করে চিকিৎসা করা হয়নি। কলকাতায় নিয়ে গেলে ভালো হয়ে যেত, অনিন্দ‍্য থাকলে হয়তো মরতো না ইত‍্যাদি ইত‍্যাদি। সুচেতনা কোনো কথা বলে না।
সবকাজ ভালোভাবে মিটে যায়।
বাড়িতে তখনও ননদ নন্দাই সকলেই
আছেন। সুচেতনা মায়ের পছন্দমতো মাছ
রান্না করে সেদিন। ননদরা বারবার জিজ্ঞাসা
করে –“আচ্ছা মায়ের জন‍্য সব নিরামিষ রান্না আলাদা করে সরিয়ে রেখেছ তো সুচেতনা?”
সুচেতনা অবাক হয়ে যায় মেয়েদের
কথায়। বলে —-“না তো। মায়ের পছন্দমতো
মাছ রেঁধেছি। মা ঠিক খাবেন। আর দেখো
মা যদি প্রথমদিন না খান তাহলে আর কোনোদিন খেতে পারবেন না। আর মেয়েদের বয়স হলে একটু মাছ দুধটা প্রয়োজন। প্রোটিনের ঘাটতি হয়ে যাবে। আর মা তো দুধের জিনিস খেতে পারেন না।
মাছ না খেলে চলবে?”
মা সব কথা শুনতে পান। মনে মনে ভাবেন সুচেতনা তো ঠিক কথাই বলছে। কিন্তু লজ্জায় একটা কথাও বলতে পারেন
না। শুধু বলেন- “আমি নিরামিষ খাব সুচেতনা।” সুচেতনা যখন জোর করে বলতে
যায় অনিন্দ‍্যও বলে —–” মায়ের যখন ইচ্ছে
নেই জোর কোরো না। খাওয়াটা একান্তই
নিজস্ব ব‍্যাপার।” সুচেতনা একটা কথাও বলে না আর। শুধু ভাবে এরা মায়ের নিজের ছেলেমেয়ে। উনি কত্তো ভালোবাসেন ওদের অথচ ওরা কেউ আপনার মনের কথা বুঝতে পারল না মা।
সকলে বেশ আনন্দ হইহই করে চেটেপুটে খেল। সুচেতনার রান্নার প্রশংসাও করল।
শাশুড়িমা রমা দেবী লক্ষ‍্য করলেন সুচেতনা
নিরামিষ খেয়ে উঠে পড়ল। কেউই হয়তো
গল্প করতে করতে ব‍্যাপারটা খেয়াল করেনি। দুপুরের আড্ডায় মেয়েরা হিসেব করতে বসল মায়ের কবে একাদশী। আলোচনায় সকলেই অংশগ্রহণ করল। বড় ননদ রঞ্জনা সুচেতনাকে বলল —-” সুচেতনা মায়ের প্রথম একাদশীর দিন তুমি বরং স্কুলে যেও না। প্রথম দিন তো। একটু ময়দার জিনিস করে দিও। তানাহলে মা আমার সঙ্গে চলুক। এখন একটু স্থান পরিবর্তনও
ভালো। মা যাবে নাকি?”
মা রমা দেবী বলেন না যাওয়ার কিছু
নেই। তবে ভেবে দেখি। সঙ্গে সঙ্গে নাতি হাত
পা ছড়িয়ে কান্না শুরু করে দেয় —“না আমার ঠাম্মি কোথাও যাবে না।” ঠাম্মির কাছ ঘেঁষে দাঁড়ায় নাতি।
সুচেতনা কিছু বলে না। কাল বাড়ি
ফাঁকা হয়ে যাবে। তাকেও স্কুলে যেতে হবে।
ছেলেমেয়েরাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুক।
রাতে শুয়ে রমাদেবীর কিছুতেই ঘুম
আসছে না। মৃত‍্যুর আগের মুহুর্তে স্বামী
অনিমেষের কথাগুলোই শুধু কানে ভাসছে—–” রমা আমি জানি না আর বাড়ি
ফিরতে পারব কিনা। কিন্তু শরীরটা মোটেই
ভালো নেই। আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে
বুঝেছি এই মা-মরা মেয়েটির সঙ্গে আমাদের
রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও ওই আমাদের
আসল আপনজন। তোমার মেয়েরা, জামাইরা সকলেই জানে আমাদের অবস্থা,
কেউ একজনও ছুটে আসেনি। সুচেতনার কাছে আমি সত‍্যিই কৃতজ্ঞ। এর বেশি “ও” আর কিই-বা করতে পারত! যা করেছে সেটাই তো আমাদের কাছে বড় পাওনা।
একবার ভেবে দেখো আমরা বেঁচে থাকতেও আমাদের একমাত্র নাতি কাজের
লোকের কাছে বড় হচ্ছে। তুমি শুধু তোমার
মেয়েদের কথা শুনেছ। কোনোদিন আসতে
চাওনি। সে কথা “ও” একবারও মনে রাখেনি। সুচেতনার কাছেই তুমি সব থেকে
ভালো থাকবে। বড় স্নেহময়ী মেয়েটি। শুধু
এই কথাকটি বলব বলেই তোমায় দেখতে
চেয়েছিলাম।”—বলেই হাঁপাতে শুরু করেছিলেন অনিমেষবাবু। সুচেতনা চলে আসায় আর কথা হয়নি।
রমাদেবী বাইরে উঠে এসে দেখেন
সুচেতনা তখনও ডাইনিং রুমে বসে আছে।
খবরের কাগজের পাতা ওল্টাচ্ছে। রমাদেবীকে দেখেই জিজ্ঞাসা করে —–“কি
হল মা ঘুম আসছে না? ঘুমের ওষুধ দেবো?”
রমাদেবী বলেন —“না, তুমি এখনো ঘুমোও
নি কেন?” সুচেতনা বলে —-“ওই আর কি—
ভাবছিলাম…..”
সুচেতনার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে রমা দেবী বলেন—-“আমি ভাবছিলাম সুচেতনা,
জীবনের শেষদিন কটা দাদুভাইকে নিয়ে
তোমাদের সঙ্গে থাকব। তোমার আপত্তি নেই
তো?” সুচেতনা উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। বলে—
“সে কি মা। আপনি আমাদের সঙ্গে থাকলে
আপনার থেকেও আমার সুবিধা বেশী। আর জীবন তো একটাই সবাই মিলে হেসেখেলে
কাটিয়ে দেবো।”
রমাদেবী বলেন —“রঞ্জনা যখন আমাকে যেতে বলবে, তুমি শুধু বলবে
মা পরে যাবে। এখন আমাদের ফেলে যাওয়া চলবে না।”—- এটাই তো আমার মনের কথা মা। কিন্তু আপনার যদি ইচ্ছে হয় আমি তো আর না করতে পারি না। ”
মাস ছয়েকপর….ওরা সবাই মিলে
তখন বকখালিতে…সন্ধেবেলা সমুদ্রের
সামনে চেয়ার পেতে সবাই বসে। সুচেতনা
বলে —-“মা আর এক রাউন্ড হয়ে যাক। বলো ফিশফ্রাইগুলো ভালো খেতে না?
আমি আর একপ্লেট খাব। মা তোমার জন‍্যও
আর এক প্লেট আনছি। অনিন্দ‍্য তোমার জন‍্য?” ছেলে বলে ” মাম্মাম আমার জন‍্যও
এক প্লেট”….. সবাই একসঙ্গে হেসে ওঠে।
তারপর শুধু সেলফি আর সেলফি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *