
কেউ আসুক না আসুক
কোয়েল তালুকদার
এ কেমন নিশি রাত্রি! এ কেমন থমকে যাওয়া শ্বাসের মতো নিস্তব্ধ প্রহরবাস
ঘুম নির্ঘুম ঠাহর করতে পারিনা, এ কেমন ক্ষণ পোহাতে হয়!
ভুল নর্দমায় কত আনন্দ বীর্য ভাসিয়ে দিয়েছি, কত ব্যবচ্ছেদ করেছি উল্টেপাল্টে,
কত কাঁটাছেঁড়া করেছি ত্রস্ত হরিণীর দেহ, হাড়, তার মাংস, মজ্জা — কত মাতোয়ারা হতাম উন্মুক্ত নাভিমূলে, কত কমল ভেসে গেছে রুপালী ধারায়, কত পাপড়ি হয়েছে ছিন্নভিন্ন…
তুমি কে? তুমি কী! তখন বুঝতাম না
তোমার নালন্দা কুচের ভার, আর জঙ্ঘা পাড়ের রেশম কোমল চুল থেকে ধানী গন্ধ নিতাম, নির্লিপ্ত চোখে চেয়ে দেখতাম ধবল পর্বত শৃঙ্গ, মধুবনি নদী,
জগৎ বলতে তোমাকেই জানতাম, তুমিই ছিলে যৌবনজম কক্ষপথ…
তুমি চিনতে পারতে কে তোমার নিষ্ঠুরতম পুরুষ,
কে শুধু ধ্বংস করে, সৃষ্টির আদিঅন্তে যে কোনও বীজ বপন করেনি প্রাজ্ঞ ভূমিতে, যার কোনও বংশবৃদ্ধি নেই..
তুমি দেখেছ শ্মশানে ছাই উড়ছে…
তুমি দেখতে পাওনি কবর ফুঁড়ে কোথাও কোনও ফুল ফোটেনি ।
বাইরে এখন আশ্বিনের বিগলিত ধূম জোছনার নহর বইছে – পৃথিবীর কোথাও কোনও উপত্যকায় কী থোকা থোকা গাঁদা ফুল ফুটেনি আজ?
আমার কোনও নৈঃসঙ্গতা নেই, নেই কোনও অনুশোচনাও…এই রাত্রি নিশীথে কেউ আসুক না আসুক, কেউ থাক্ বা না থাক্ —
এই রাত্রি এই জীবনকাল একসময় নিঃশেষিত হবেই।