Koyel Talukdar

কোয়েল তালুকদার

অনুগল্প — কমলদীঘি
কলমে — কোয়েল তালুকদার

একদিন এক অস্তগামী সূর্যের বিকালে স্নান করিবে ভাবিয়া রমণী বসিয়াছিল কমলদীঘির শান বাঁধানো ঘাটের সোপানে। বিনম্র কুচভারে সে জলের দিকে তাকিয়া ভাবিতেছিল, ‘তোমাকে আমি প্রাণ দেবো তবুও আমার প্রেম থাকিবে আমার অন্তরে।’

দক্ষিণের দিকে হইতে ঝিরিঝিরি বাতাস বহিতেছিল। মাথার কালো কেশ এলমেল উড়িতেছিল। কী কথা ভাবিয়া সে নিচের সোপানে পা রাখিল। তারপর জলে নামিয়া কমল ছিড়িল। সে নিজেই মৃণাল পরিধান করিল খোঁপায়। বিমুগ্ধ ছিল রমণী। জলের পরিধি কত, সে বুঝিতে পারিল না।

সে ছিল কমলিনী। রাজ্যের সব মানুষ তাহাকে কমল বলিয়া ডাকিত। তাহাকে কেউ খুঁজিয়া পায় নাই। কিন্তু সে যে অজস্র কমলের মাঝে কালকালান্তর ধরিয়া ফুটিয়া আছে। সে যে ভাসিয়া বেড়ায় দীঘিতে। তাহার ভেজা পাপড়িতে অশ্রু-সম জল লাগিয়া থাকে। রোদ্রে তাহা শুকিয়া যায়। সবাই ঐ দীঘিকে কমলদীঘি বলিয়া ডাকে।

আজও কোনো উন্মূল প্রেমিক ঐ দীঘির পাড়ে বসিয়া ভাবে — ‘তার রূপ-রত্নাকরে ;
মগ্ন হয়ে, তারে আমি সঁপিলাম মন!’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *