
ব্যারিকেড
হামিদুল ইসলাম।
রাত আসে ফিরে
ফিরে আসে রাতকথা
যমুনার পাড়ে তখনো সন্ধ্যা নামে
ফেলে আসি স্মৃতির স্বপন ।।
ইচ্ছেগুলো ভাসে
অথৈ জল
তখনো জলছবি আঁকি
ক্লান্ত সমুদ্র মাখে রাত ।।
ফিরে আসি শাণ বাঁধানো বিকেল
চড়াই উৎরাই পথ
ক্যাকটাসে মিশে থাকে মায়া
আমাদের প্রাচীন শৈশব ।।
পায়ে পায়ে রোদ্দূর
বেলা পড়ে আসে
পায়ে পায়ে পথের নিশানা
ফিসফিস যাপনের উৎসব ।।
সন্ত্রস্ত বুক
সুখ খোঁজে
ভালোবাসা খোঁজে
খোঁজে চঞ্চল হরিণী মন ।।
পাড়ার আড্ডা এখন জমজমাট
মাঝে মাঝে উঁকি দেয়
চেনা মুখ সোমা
পাগল করে আমাকে
ওকে কাছে পেতে চাই ।।
ওকে কাছে পাই একদিন
বলি, আমি তোমাকে ভাশোবাসি ‘
হাসে ও
বুঝে নিই ওর মন ।।
আমি রাজেন্দর সিং
পঞ্চাশ বছরের পুরোনো বন্দুক নিয়ে
পাঞ্জাব ব্যাঙ্ক পাহারা দিই
লুটেরা উধাও ।।
আমার দাদী নব্বই
এখনো চোখে দেখে পৃথিবী
দাদীর হাতের মালপো
এখনো হাজার সুস্বাদু ।।
দাদী আর মায়ে এখনো রান্না হয় ইলিশ
ঝোলে ম ম সুবাস
পেটে ভাত যায় কাঁড়ি কাঁড়ি
খুশির হাওয়া ছুঁয়ে যায় সারা ব্যালকনি ।।
হঠাৎ ব্যাঙ্কে আমার চাকরি তাই
বাড়ি ছাড়লাম
মায়া ছাড়লাম
ছাড়লাম সাধের ইলিশ ।।
মনটা আনচান করে সোমার জন্যে
ক’দিন বাদে ও পালিয়ে আসলো
আমার কাছে
মা কালির সামনে ওর কপালে
আমি সিঁদুর পরিয়ে দিলাম ।।
কতো ফষ্টিনষ্টি হতো রাতের বিছানায়
একদিন পুলিশ এ্যারেস্ট করলো আমাদের
মাইনর এজ
জেল হলো আমার
চাকরি গেলো ।।
সোমা চলে গেলো বাপের বাড়ি
দশ বছর পর আমার ছুটি
ফিরে আসলাম বাড়ি
ফাঁকা পৃথিবী ।।
দাদী নেই
বাবা নেই। মা নেই
ইতোমধ্যে সোমার বিয়ে হয়েছে
কক্সবাজার ।।
কাজ নেই আমার
পুরোনো বন্দুক নিয়ে পাখি তাড়াই
কাক তাড়াই
লোকে আমাকে বলে স্কেয়ারক্রো ।।
এখন আমি গান বাঁধি
গান গাই
সোমার স্মৃতি আঁকি গানের কথায়
সোমা নেই
খাঁ খাঁ করে মন ।।
একদিন বাসে সোমার সাথে দেখা
জিগ্যেস করি, কি রে একা যে !
হাঁ। একা।
তোর স্বামী ?
গাড়ি এ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে ।
ছেলেপিলে।
নেই ।
এখন কোথায় যাবি ?
বাড়ি ।।
মনটা আমার তিরতিরিয়ে উঠছে বারবার
ভেঙে ফেলছে সমস্ত বাধা
সমস্ত ব্যারিকেড ।।
গ্রাঃ+পোঃ=কুমারগঞ্জ। জেঃ =দক্ষিণ দিনাজপুর। মোঃ+হোঃ=8637316460।