Hamidul Islam

 হামিদুল ইসলাম

হেরে যাচ্ছি
হামিদুল ইসলাম।

ওরা বলেছিলো, কাল থেকে আর আসবেন না
যাই নি
কিন্তু মন মানে না
খাঁ খাঁ লাগছে ঘর বাড়ি
তাবৎ পৃথিবী ।।

মনে পড়ছে রীনাদের কথা
আমরা তখন গ্রাজুয়েট
একটা অরগেনাইজড স্কুল টিচার
আমরা যেনো মা বাপ হারা
অনাথ ।।

আজ আছি
কাল নেই
কাফন উড়ছে
পুলিশের জিপে লালবাতি ।।

মাঝেমধ‍্যে আনাজপাতির সংসার
নুন আনতে পান্তা ফুরোয়
চিচিং ফাঁক
আবদুল‍্যা অন্ধকারে আজও অর্থ হাতড়ায় ।।

ধারপাশে ফিসফাস
গুজুর গুজুর
সারা আকাশ পাক খায় কথা
কথাঘরে আগলে রাখি ওর স্মৃতি
একদিন
দুদিন
তিনদিন
হামেশা হামেহাল ।।

ইনিয়ে বিনিয়ে আসে আরো কবিতা
কথার মিছিল
শুনে যাই
হঠাৎ সে কথার মানে হয়ে ওঠে অন‍্য রকম ।।

মাথাটা ঝাকি দেয় বারবার
কী বলি
না, বলবো না কথা
আমি সাইলেন্ট
জীবনের টিফিন শেষ ।।

গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে
হাত তুলি
গাড়িতে উঠি
সে কি ! তুমি ?
হ‍্যাঁ
কোথায় যাচ্ছো ?
পালিয়ে
মানে ?
খুব সোজা
সোজা বলছো কেনো ?
কেনো বলবো না ?
সবাই জীবন থেকে পালায়
আমিও ।।

শূন‍্যে কান পাতি
মরু সভ‍্যতা
আগুন
পুড়ে যাচ্ছে রাত
ঘর বাড়ি
সহস্র শতাব্দী ।।

একা লাগছে
হাতড়াচ্ছি, তুমি নেই ।।

তোমাকে দেয়া সমস্ত চিঠি
আত্মহত‍্যা করছে
চাপ চাপ রক্ত
ফুলে পাতায়
নির্জন কাগজনগর
পৃথিবী একা
একেলা ।।

আমি চিৎকার করছি, সোমা সোমা
শুকনো হাওয়ার শনশন
বিষম রোদ
গিলে খাচ্ছে আনন্দকুসুম
অফিস বাড়ি
শিফন বাড়ি
যাদবপুর ইউনিভারসিটি ।।

আমি রাস্তায়
অগণিত লোক
অগণিত মুখ
তর্ক বিতর্ক
গণ সম্মেলন
প্রতিনিধি আমিও
তোমার পেছনে জীবন থেকে পালাচ্ছি ।।

ওরা জবরদস্তি করছে
চিৎকার করে বলছে, কাল থেকে আপনি
আর আসবেন না ।।

যাকে নিয়ে আজও স্বপ্ন দেখছি
ভেঙে গেলো সব
শুষ্ক বকুল
মালা গাঁথতে পারছি না
হেরে যাচ্ছি প্রতিদিন
হেরে যাচ্ছে জীবন ।।

শেষমেশ বিয়েটা হলো আমাদের
রেজিষ্ট্রি করে
সমাজকে ছুড়ে ফেলে দিলাম ডাস্টবিনে
তুমি নির্বিকার
অনন্ত স্ফটিক
দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাচ্ছে আমার ।।

চাকরি নেই
টিউশন সম্বল
গ্রামের গার্জেনরা টাকা দেয় না
সংকট
অনটনে সংসার ।।

তোমার শ্বাস ভারি হয়ে আসছে
ঋতু বন্ধ
তোমার গর্ভকোষে ঘুমোচ্ছে ভ্রূণ
সোমা, তুমি বড্ডো বেহিসেবী হয়ে যাচ্ছো ।।


গ্রাঃ+পোঃ=কুমারগঞ্জ। জেঃ=দক্ষিণ দিনাজপুর। মোঃ+হোঃ=8637316460।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *