Hajrat ali

“ইসলামে লেখালেখির গুরুত্ব ”

লেখালেখি একটি আর্ট। একটি নান্দনিক শিল্প। কুরআন ও হাদিসের দৃষ্টিতে লেখালেখির গুরুত্ব অপরিসীম। লেখতে হয় “কলম” দিয়ে। “কলম” নামে আল্লাহ রব্বুল আলামিন কুরআনুল কারিমে একটি সূরা নাযিল করেছেন। আল্লাহ তায়ালা এই স্বতন্ত্র সূরাটি নাযিল করে লেখনীর প্রতি উৎসাহিত করেছেন।বিশ্বনবী (স.)প্রতি বিশ্ব প্রতিপালকের প্রথম নাযিল করা বাণীগুলো ছিল তিন অক্ষরের ছোট শব্দ কলমের গুনগান।বলা হয়ে থাকে, যদি লেখা না থাকত তাহলে দ্বীন ও দুনিয়ার শৃঙ্খলা ঠিক থাকত না।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়,লেখার প্রথা অতি প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে। স্বয়ং আল্লাহ রব্বুল আলামিন সর্বপ্রথম লেখার প্রথা প্রবর্তন করেন।তিনি এই পার্থিব জগৎকে সৃষ্টি করার ৫০হাজার বছর পূর্বে সমগ্র সৃষ্টি জীবের ভাগ্য লিখেছেন। আল্লাহ তায়ালা এ কলমকে জ্ঞান -বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রচার-প্রসার এবং বংশানুক্রমে জ্ঞানের উত্তরাধিকার সৃষ্টি এবং বিকাশ সাধন ও সংরক্ষণ মাধ্যম বানিয়েছন।তিনি যদি ইলহামি চেতনার মাধ্যমে মানুষকে কলম ব্যবহার ও লেখার কৌশল শিক্ষা না দিতেন তাহলে মানবজাতির জ্ঞান অর্জন ও প্রচার-প্রসারের যাবতীয় স্বভাবসিদ্ধ যোগ্যতা ও প্রতিভা সম্পূর্ণ নিরর্থক হয়ে যেত।
ইসলামের দৃষ্টিতে লেখালেখির গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলামের বিদ্যার্থীরা কলমের কালিকে অত্যন্ত মর্যাদার চোখে দেখে। “সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা লেখে না , ইসলাম মনে করে সে নিজের এবং অন্যের অধিকার নষ্ট করছে।”
নিজের অধিকার নষ্টের অর্থ হলো নিজেকে ফল প্রসূ হওয়া থেকে বিরত রাখা।উত্তম কাজগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা। ইসলাম সম্পর্কে মানুষকে জানতে না দেয়া। আর অন্যের অধিকার নষ্টের অর্থ হলো সাধারণ মানুষ তার সারগর্ভ দিক নির্দেশনা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ফলে পথ হারা অনেক মানুষ সত্য-সঠিক পথে পরিচালিত হতে পারেনি।
“একটি লেখা শুধু সমকালীন মানুষকেই লাভবান করে না বরং ওই লেখা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আদর্শ সমাজ গঠনে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে।”
লেখালেখির মাধ্যমে বিশ্বময় ইসলামের দাওয়াতি কাজও ছড়িয়ে দেয়া যায়। আর বর্তমান যুগে বাতিল অপশক্তিও তাদের বিষাক্ত চিন্তাধারা ছড়িয়ে দিচ্ছে কলম তথা লেখালেখির মাধ্যমে। তাই তাদের মোকাবিলা করতে হলে আমাদেরও হাতে তুলে নিতে হবে কলম। লেখতে হবে তাদের বিষাক্ত চিন্তাধারার বিরুদ্ধে।
তাই আসুন,মহান আল্লাহর দিকে মানুষকে ডাকতে এবং মানুষের মধ্যে সত্যের আলো ছড়িয়ে দিতে লেখালেখি করি, কলম ধরি। নিজেকেও সামিল করি লেখক তথা আল্লাহর পথে আহ্বানকারী ভাগ্যবান আলোকিত কাফেলায়।
লেখক :হযরত আলী(শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *