Dr. Taimur Khan

এই কবিতাজীবন (ধারাবাহিক)

🐦

পর্ব-৭

কী যে গোলমাল হয়ে গেল

🍁

যে বিল্ডিং নির্মাণের কাজে আমি যুক্ত ছিলাম তার কন্ট্রাক্টরকে সবাই ‘খান সাহেব’ নামেই চিনত। তিনি ওই এলাকার একজন এম এল এ। মাঝে মাঝে এসে আমাদের কাজ দেখে যেতেন আর চা এর অর্ডার দিতেন তাঁর এক দেখভাল করার কর্মচারী শর্মাজীকে। বড় কেটলিতে চা এনে আমাদেরও দেওয়া হত। মুম্বাইয়ের চা ভারি সুন্দর। যেমন সুঘ্রাণ তেমনি স্বাদও। চা খেয়েই বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠতাম। একদিন খান সাহেব এসে শর্মাজীকে মিঠাই আনতে বললেন। কী কারণে মিঠাই খাওয়াচ্ছেন তা বুঝতে পারলাম না। পরে শুনেছিলাম ইলেকশনে তিনি নমিনেশন ফাইল করেছেন। পুনর্বার এম এল এ হবেন। তারই খুশিতে মিঠাই খাওয়াচ্ছেন। শর্মাজী ঢাউস দু-প্যাকেট বড় বড় লাড্ডু এনে আমাদের বিলি করে দিলেন। ছানার লাড্ডু তখনও খাওয়া হয়নি। তার স্বাদ আজও অনুভব করতে পারি। এত বড় দিলখোলা মানুষ হওয়া সত্ত্বেও শুনেছি খান সাহেবের মনে তেমন শান্তি ছিল না।তিন-তিনটে বিয়ে করেও কোনো বউই তাঁর সঙ্গে ছিল না। বিভিন্ন সময়ে তারা অন্য পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। তাই মাঝে মাঝেই খান সাহেব কথায় কথায় বলতেন: “মুম্বাইমে বারিসকা কো ভি ভরসা নেহি, আওরাতকা কো ভি ভরসা নেহি। দোনোহি আতি হ্যায় আওর যাতি হ্যায়!” একথা যে অনেকটাই সত্যি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ঝোপড়া থেকে যত বড় উঁচু বিল্ডিংয়েই তারা বসবাস করুক না কেন, কিংবা যত সুখেই তারা থাকুক না কেন, প্রায়ই শুনতাম বেশিরভাগ মানুষই পরকীয়ায় আসক্ত। ঘর-সংসার, স্বামী-সন্তান ফেলে তারা পরপুরুষের হাত ধরে পালিয়েছে। এমনকী এমনও ঘটনা ঘটেছে, গ্রাম থেকে পরপুরুষের সঙ্গে পালিয়ে এসে মুম্বাইয়ে আবার অন্য আর এক পুরুষের সঙ্গে ঘর ছেড়েছে। ‘ওটা’তে একদিন এই কথাই শুনেছিলাম। দুজন নারীর সংলাপ হুবহু তুলে দিলাম।

“তুই নাকি আবার লতুন ভাতার ধরছিস শুনলাম!

তা তো ধরতেই হবে ভাবি, কুনু ভাতারেই সুখ দিতে পারল না, এখন এইটো দেখি!

এইটো শুনলাম নাকি মারাঠি! সত্যিই বুলছিস?

হ্যাঁ ঠিকই শুনছ, ছ্যালেটোর বয়স কম, মা-বাপ কেহু নাই। তাই মুনে মুনে ঠিক করে ফেলেছি।

মনসুরা বিবি তো এক বুড়াকে ধরলে, এই বয়সে কী সুখ পাবে!

উ কি আর সুখ দেখে কর‌্যাছে? টাকা দেখে কর‌্যাছে!

তা ঠিকই বুলেছ। থুবড়ি মহরুমা ছুড়ি-ই-বা কী করল দ্যাখো! তিন মাসও হল না, দু-দুবার পালিয়ে পালিয়ে গেল। আবার শুনছি ঘুরেও আলছে।

দিলরুবা তো শেঠের সঙ্গেই আছে। সাজগোজ দেখে বুঝতি পার না?

আমিও তাই ভাবছি একটো ধরব, শেষ বয়সে কে দেখবে?

ঠিক করবা, নিকা-শাদি করা আল্লাহর হুকুম আছে।”

দরকার হলে যে কেউ যেকোনো বয়সের সঙ্গী নির্বাচন করতে পারে শুধু ইশারা করলেই হবে। টাকা ওড়ালেই হবে। ভারতের বহু অঙ্গরাজ্য থেকেই বহু লোকের সমাগম এই মুম্বাই শহরে। বিভিন্ন কাজের সঙ্গে তারা যুক্ত। জাতপাত ধর্ম-বর্ণের কোনো ভেদ নেই, শুধু নারী-পুরুষ হলেই হল। যতদিন যৌবন ততদিনই তার মূল্য। যৌবন চলে গেলে কে কোথায় হারিয়ে যায়। সম্পর্কের আর মানবিক মূল্যবোধও খুঁজে পাওয়া যায় না। এ এক ভোগের সাম্রাজ্য। শুধু ভোগ করো, যত পারো ভোগ করো। যত ভোগের কেন্দ্রবিন্দু ওই একটি ইন্দ্রিয়েই গিয়ে কেন্দ্রীভূত। ওটাতে থাকতে থাকতেই একদিন আলমাতিস এসে বলল, চলো আমাদের ওখানে, একদিন ছুটি করে এসো। তোমাদের এলাকার অনেক মানুষ একসঙ্গে কাজ করে।

শুনে আশ্বস্ত হলাম। আলমাতিসকে চিনতাম। আমাদের গাঁয়ের দূর সম্পর্কের এক দাদার শ্যালক। দীর্ঘদিন মুম্বাইয়ে আছে। বিয়ে করে বউকে গ্রামে রেখে এখানে সে অন্য একজনের বউকে নিয়ে সংসার করে। আর মাঝে মাঝে ওটাতে আসে সবার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে। একদিন কাজ বন্ধ করেই চলে গেলাম সকলের সঙ্গে দেখা করতে। নিজের দেশের লোক তাই অদৃশ্য একটি টান অনুভব করলাম। চোরগলি পেরিয়েই হাজি মহল্লায় গাফ্ফার শেঠের বাড়িতে তাদের আস্তানা। খুঁজতে খুঁজতে ঠিক পেয়েও গেলাম। সেখানে অনেকেই আছে আর তাদের সকলকেই আমি চিনি। বিশেষ করে আমার পিসতুতো দাদা ফরান, বাদল, খাজা এবং গ্রামতুতো চাচা হাসমতও সেখানে কাজ করে। সবাইকে পেয়ে ভারি আনন্দ হল। সকাল বেলার নাস্তা তাদের সঙ্গেই সেরে ফেললাম। সবাই বলতে লাগল, তুই মুম্বাই আসবি আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। এসেই যখন পড়েছিস, আমাদের কাছে আরও দু-একদিন থেকে যা! আগে এলে তো ভালোই হত, আমাদের এখানেই কাজে ভরে নিতাম!

আমি বললাম, আমিও অতটা মনে করতে পারিনি, তোমরা এত কাছাকাছি থাকো জানলে তো অবশ্যই আসতাম!

সেদিন খাওয়া-দাওয়া করে ওরা একে একে সবাই কাজে চলে গেলে আমি বাইরের দরজার কাছে একটি পাতা বেঞ্চে গিয়ে বসলাম। এত ঘিঞ্জি এলাকায় ব্যস্ত লোক চলাচলের দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখার সুযোগ কোনোদিন পাইনি। অদূরে একটি চায়ের দোকানে কত লোক এসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছে। তার কিছুটা দূরেই কসাইখানা। একটা মোটাসোটা লোক বড় বড় খাসিকে ধরে একাই জবাই করছে। মোড়ের কাছে ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করছে। তবুও ভিড় লেগে যাচ্ছে। হঠাৎ একটি সুন্দরী মহিলা গাড়ি থেকে নেমে আমার বসে থাকা দরজার গেট দিয়েই সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে যাচ্ছিল। মেয়েটি এতই সুন্দরী ছিল যে মনে হচ্ছিল, এরকম সুন্দরী মেয়ে আমি কখনো দেখিনি। পৃথিবীতে এত সুন্দরী মেয়ে থাকে? আমার বিশ্বাসই হচ্ছিল না। তাই উদাসীন হয়ে তার দিকেই নিষ্পলক চেয়েছিলাম। মেয়েটি কাছাকাছি এসেই সপাৎ করে প্রচণ্ড শব্দে আমার গালে এক চড় বসিয়ে দেয় আর মুখে বলে: “ক্যা দেখতা তু! লড়কি কভি নেহি দেখা?”

আমি অবাক হয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তার দিকেই চেয়ে আছি। কিছুই জবাব দিতে পারছি না। আর এক চড় দেবার জন্য সে হাত তুলেছে আর অমনি পেছনদিক থেকে খাজা ভাই ছুটে এসে তাকে বাধা দেয় আর বলে,”উ ন্যায়া আদমি হ্যায়, গাঁও সে অভি আয়া! মত্ মারো।হমারা ভাই লগে। হাম সমঝা দেঙ্গে।”

তার কথা শুনে মেয়েটি চলে যায়, যাবার আগে বলে যায়, “হিঁয়া মত্ বেঠিয়ে।”

সে যাত্রায় এক চড় খেয়েই পাঁচ আঙুলের দাগ গালে নিয়ে আমি খাজা ভাইদের থাকার জায়গায় সটান শুয়ে পড়ে ভাবতে থাকি, তার কথা। যার মুখের দিকে তাকিয়ে শুধু সৌন্দর্যেই মোহিত হয়ে তাকে দেখেছিলাম। আমার অন্যকোনো উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু মেয়েটি আমার সরলতা, গ্রাম্যতা একেবারেই বুঝতে পারল না! শহরের মানুষ অনেকটাই কৃত্রিম এবং মেকি আভিজাত্য নিয়ে গর্বিত হয় তা সেদিনই বুঝেছিলাম। তবে একথা সত্য, মুম্বাই শহরের আবহাওয়া এমনই নাতিশীতোষ্ণ যে, সব মানুষই তাদের চেহারার মধ্যে এক ধরনের লাবণ্য ফিরে পায়। কেউ কেউ বলেছিল আমার চেহারার মধ্যেও সেই লাবণ্য ফিরে এসেছে। তবে এত জোর চড় খেয়েও আমার বরং আনন্দই হয়েছিল। অন্তত এইটুকু সান্ত্বনা যে এক সুন্দরী মেয়ের হাতের ছোঁয়া অনুভব করেছিলাম।

ফিরে এসে আবার পূর্বের মতোই কাজ শুরু করেছিলাম। আমার মাসও ফুরিয়ে আসছিল। এই মাসের ‘পগার'(মজুরি) তুলেই খান সাহেবকে দেখা করে বাড়ি ফিরে আসব সেরকমই হিসাব। খালেক এবং সিদ্দিক ভাই দুজনেই বাড়ি ফিরে গেছে। আমি কার সঙ্গে ফিরব এরকমই একজন সঙ্গী খুঁজছিলাম। হঠাৎ খবর পেলাম গ্রামেরই ‘হারু মামু’ বাড়ি যাবে পাঁচ তারিখ। দু-তারিখ পগার তুলে হাতে দু’দিন সময় পাব। তাকে দেখা করে একসঙ্গে টিকিট কেটেই তবে ট্রেনে উঠব। ওটাতে এসে রুবেদ নামে এক দিদি সম্পর্কের মহিলাকে বলে পাঠালাম হারু মামুকে আমার কাছে আসার জন্য। ‘হারু’ নাম হলেও আমরা ছোট থেকেই তাকে ‘হারু মামু’ বলে ডাকতাম। একই গ্রামের মানুষ। বয়সেও খুব একটা তফাত হবে না। কিন্তু দীর্ঘদিন মুম্বাই শহরে আছে তাই সহজেই সবকিছু চেনে। মাসের এক তারিখেই হারু মামু এসে হাজির। এসে বলল, আজ আর কাজে যেতে হবে না, চলো তোমাকে ঘুরিয়ে আনি জুহু ও চোপাটি থেকে। জুহুতে সব সিনেমার নায়ক-নায়িকারা থাকে। চমৎকার জায়গা। আর চৌপাটিতেও থাকে কত যুবক-যুবতী দেখলে অবাক হয়ে যাবে!

সেদিন আর কাজে যেতে পারিনি, ছেলেমানুষি বয়সের একটা কৌতূহল জেগেছিল সমবয়সী একজনকে সঙ্গী পেয়ে। মুম্বাইয়ে তখন ইলেকশনেরও তোড়জোড় চলছে। চারিদিকে পতাকা ও ফেস্টুন। সেসব ভেদ করেই আমরা টিকিট কেটে ট্রেনে উঠলাম, গন্তব্য জুহু। প্রায় ঘন্টাখানেক লাগল। স্টেশনে নেমেই দেখলাম চারিদিক ফাঁকা। একটা শুরু পথ দিয়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে নেমে একটা চওড়া রাস্তায় উঠলাম। রাস্তা দুই পাশে যেন সাজানো বাগান। এক জায়গায় গাছের তলায় বসে একটা লোক নারকেল বিক্রি করছে। একটা নারকেলের দাম এক টাকা। এত সস্তা নারকেল? এক টাকা দিয়ে হারু মামা একটি নারকেল কিনে দিলে পাথরে ঠুকে ঠুকে সেটি ভেঙে দাঁত দিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে প্রায় সবটাই খেয়ে ফেললাম। তারপর হারু মামুকে বললাম, এবার চলো।

জুহুর রাস্তায়-রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে বাগানের সন্নিকটে হেঁটে বেড়াতে দেখলাম, বিশাল বপুর অধিকারী আমজাদ খানকে। খালি গায়ে তিনি হেলেদুলে হেঁটে বেড়াচ্ছেন। গায়ে রোদ পড়ে চিকচিক করছে। দেখে মনে হচ্ছে কোনো অন্যগ্রহের মানুষ তিনি। তখনও তাঁর ‘শোলে’র গব্বর সিং এর অভিনয় দেখার সুযোগ হয়নি। শুধু নাম শুনেছিলাম। হারু মামু দূর থেকে তাঁকে দেখিয়ে দিলেন। কাছে গিয়ে আলাপ করার সাহস আমাদের হল না। বরং ভয় পেলাম। সেখান থেকে ফিরে গিয়ে একটা মোড়ের মুখে ঘুরতেই এক জনসমাগমের মিছিল দেখতে পেলাম যদিও সেখানে খুব বেশি লোক ছিল না। তাদের সামনে দিয়ে যেতেই রাস্তার একধারে দাঁড়িয়ে গেলাম। কিন্তু মিছিল থেকে বেরিয়ে এসে একজন সুন্দর লম্বা ফর্সা স্লিম ফিগারের অভিনেতা আমাদের সঙ্গে হাত মেলালেন। তখনও পর্যন্ত তাঁর নাম জানতাম না। শুধু একটা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘রাজেশ খান্নাকে ভোট দিন’। হারু মামু বললেন, এই হচ্ছে রাজেশ খান্না। কতগুলো লোক এসে ঘিরে তাকে বলল, অভিনীত কোনো সিনেমার একটি গান গাইতে। রাজেশ খান্না সেদিন সকলের সামনে এগিয়ে এসে উদাত্ত কন্ঠে শোনালেন:

“আনে সে উসকে আয়ে বাহার

যানে সে উসকে যায়ে বাহার

বড়ি মস্তানি হ্যায় মেরি মেহেবুবা”

রাজেশ খান্নার সঙ্গে সেদিন কয়েকজন নায়িকাও ছিলেন। গানের তালে তালে দারুণ রোমান্টিক দেখাচ্ছিল সেই দৃশ্যটি। ঘুরতে ঘুরতে বেশ বেলা হয়ে গিয়েছিল আমাদের। সাজানো-গোছানো একটা এলাকা জুহু। ঝা চকচকে রাস্তাঘাট। চারিদিকে গাছ আর গাছ। উজ্জ্বল বাড়িগুলি নির্জন কোনো স্বর্গীয় দেবতাদের বসবাসের জন্য এরকমই মনে হল। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই এমন একটা সমস্যা দেখা দিল যার কোনো সমাধান আমরা খুঁজে পেলাম না। সস্তায় নারকেল কিনে খাওয়ার পর বদহজমের কারণে দারুণ পেট ব্যথা শুরু হল। এক্ষুনি পায়খানায় যেতে হবে আর সহ্য করতে পারছি না এরকমই অবস্থা। কিন্তু যাব কোথায়? কোথাও পাবলিক ল্যাট্রিন নেই। কোনো আড়ালও নেই। হারু মামু, কী করা যায়? এক হাতে চেপে ধরে আর অগ্রসর হতে পারছি না। উপায়ান্তর না দেখে এদিক-ওদিক চেয়ে আছি। সামনেই দেখি একটা বড় গেটওয়ালা দরজা দিয়ে একটি লরি মাল বোঝাই করে বেরিয়ে আসছে। লরির ওপরে কতগুলো কুলি। লরিটি চলে গেলে চুপি চুপি সেখানে গিয়ে দেখি এটি একটি সিমেন্টের গুদাম। লোকজন তখন নেই বললেই চলে। সেই সিমেন্টের গুদামেই প্যান্ট খুলে বসে গেলাম। গড় গড় শব্দে যা বেরিয়ে এল তা সদ্য খাওয়া নারকেল ছাড়া কিছুই নয়। কোনোরকম সামাল দেওয়া গেল। হারু মামু বাইরে অপেক্ষা করছে। একহাতে খোলা প্যান্ট ধরে বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছি লজ্জায়। জল কোথায় পাই?

অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর পাশের একটা কোনো নায়ক বা নায়িকার বাড়িতে কাপড় কাচার শব্দ পেলাম। দরজার পাশে কান লাগিয়ে শুনলাম সেই শব্দ। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর দেখলাম শব্দ বন্ধ হয়ে গেছে। তখন দরজার ফাঁক দিয়ে দেখলাম গামলায় নীলগোলা জল। বাড়ির ঝি কাপড় কেচে নীল জলে ডুবিয়ে উপরে মেলে দিতে গেছে। এই সুযোগে ঘরে ঢুকে গামলার জলেই কোমর পর্যন্ত ডুবিয়ে শৌচকর্ম সেরে ফেললাম। জল নাড়ার খপাৎ খপাৎ শব্দে উপর থেকেই রেলিংয়ের ফাঁক দিয়ে কে যেন চেঁচিয়ে বলছে: কোন্ হ্যায়? কোন্ হ্যায়? কোন্ অন্দার ঘুষ্ গিয়া? জলদি দেখো!

শুনতে শুনতেই থতমত খেয়ে প্রায় অর্ধেকটা প্যান্ট ভিজিয়েই ফেললাম। তারপর ছুটে বাড়ির বাইরে এসে দু’জনে মিলে লাগালাম দৌড়। এক ছুটে স্টেশনে এসে তবে শ্বাস নিলাম। এমন অভিজ্ঞতা আর জীবনেও হয়নি।

চলবে….

FA.png

Dr. Taimur Khan

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *