কবিতা এবং আমি / দীপঙ্কর বেরা
ভাবুক মনের মালা গাঁথা যদি কবিতা হয় তাহলে সাহিত্যের অন্য বিভাগ যেমন গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ রম্য কৌতুক ইত্যাদি কি ভাবুক মনের ভাবনা সমৃদ্ধ লেখা নয়?
তাহলে কবিতা পড়ার পর যদি কিছুই বুঝলাম না বলি, আর আপনি যদি বলেন কবিতা বোঝার ব্যাপার নয় অনুভব করার ব্যাপার। কবিতা বুঝতে হলে আমাকে কবিতা বিশেষজ্ঞ হতে হবে, যেমন অঙ্কের বিজ্ঞানের জটিল বিষয় বুঝতে গনিতজ্ঞ বা বিজ্ঞানী হতে হয়। সাধারণের জন্য তো কোনভাবেই নয়। অল্প শিক্ষিত কম পড়া মানুষের জন্য তো নয়ই। উচ্চ মার্গের। তাহলে একই কথা গল্প উপন্যাস রম্য ইত্যাদির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
তাহলে সাহিত্য ব্যাপারটাই শুধু অনুভবের। না ব্যাখ্যা করার, না বোঝানোর, না ভাব সম্প্রসারণের। পড়ো আর শুধু অনুভব করো। এইভাবে অনুভব করতে করতে অনুভব বিশেষজ্ঞ বা সাহিত্যজ্ঞ হয়ে যাও।
এই রকম প্রশ্ন অবশ্য কবিতা ছাড়া সাহিত্যের আর কোন শাখায় দেখা যায় না। কেন না কবিতা বুঝতে বুঝতে অনেকের কালঘাম ছুটছে। আমারও। অনেকে দারুণ, অসাধারণ, অনবদ্য, শ্লেষযুক্ত, ভালো লাগলো ইত্যাদি বলে তাদের ভাবুক অনুভব প্রকাশ করছেন।
আবার এমন অনেক অনেক কবিতা পেজে ব্লগে ইবুকে ম্যাগাজিনে প্রিন্টিং-এ সর্বত্র সবার প্রথমে প্রকাশিত। খুব কম ক্ষেত্রে রিভিউ হিসেবে যার ব্যাখ্যা আসছে, ভাবের সম্প্রসারণ আসছে। তাই বিবর্তনকে সাধুবাদ জানিয়ে অনেকে দূরে সরে গেছে। আমিও।
অনেকে আজও থমকে দাঁড়িয়ে মাইকেল রবীন্দ্রনাথ জীবনানন্দ শঙ্খ সুনীল শক্তি জয় এবং তারপরে। যেখানে সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা সবাই বুঝতে পারি, অনুভব করতে পারি এবং ব্যাখ্যাও করি। ফুলের সুবাসের মত, নিস্তব্ধ বিকেলের মত, সোনালী ডানার চিলের মত, বিদিশার নিশার মত, আমি কি ডরাই কভু ভিখারী রাঘব এর মত।