শেষের চিঠিটা
ধ্রুবজ্যোতি ঘোষ
শেষ কবে চিঠি লিখেছিলাম
স্মৃতির সরণীতে কোন ছায়া নেই তার ;
লাল নীল কালো অক্ষরেরা
বন্দী হয়ে আছে কতদিন কোন্ কারাগারে
জানা নেই আমার।
সেই সব অক্ষরের চাপা কান্না
হঠাৎ যেন শুনি গভীর নিশীথে
বৃষ্টি এসে বোবা করে দেয় আচম্বিতে।
মনে হয় কত যুগ গেছে কেটে…
এক জন্মের মধ্যে হলো কত জন্ম।
ঝর্ণার সূচীমুখে জলচূর্ণ হয়ে যে স্রোতে ভাসত অক্ষরেরা
তাদের জন্য এখনও কেন
বয়ে যায় চোখের প্রচ্ছায়ায় বেদনার ফল্গুধারা!
চিঠির মধ্যে বয়ে আনতো শব্দেরা
তোমার গোপন সুবাস
তোমার নিজস্ব অক্ষরসাজ
তোমার সুরভিত নিঃশ্বাস…
সে সব কি ছিল প্রলাপ?
সে সব কি ছিল চন্দ্রাহতের সংলাপ?
আমি এখনও স্বপ্নে দেখি
সাদা মেঘের মতো রাশি রাশি
সাদা কাগজে লেখা চিঠি
আকাশের নীল খামে ভরে
কে যেন পাঠায়
আমার ঘরবন্দী ঠিকানায়…
আমি থাকি চাতকপ্রতীক্ষায়।
সেদিন সত্যি তোমার চিঠি পেলাম ঝরাপাতার হলুদ ডাকে;
তাকে আমি এখন রাখি যে কোথায়:
বটের চারা মুঠোয় ধরা নির্জন চিলেকোঠায়
না হৃদয়ের দেরাজে?
আমাকে স্বপ্নের সেই ভাবনা
এক বিস্মৃত সুগন্ধির মত নাছোড় ঘিরে থাকে,
নেপথ্যে কোথাও
কি এক অচেনা সুর বেজে যায় অকারণ
এক আশ্চর্য এস্রাজে।