Dhrubajyoti Ghosh

একটি মেঘভাঙা বৃষ্টি, ২০২২

এবং…

বহু চড়াই ভেঙে

কেউ বুকপকেটে

কেউ সাবধানী আঁচলের খুঁটে

কেউ বা গেরুয়া বসনের কষিতে

শুকনো ফুলের মত বিশ্বাসকে গুঁজে শতাব্দীর পর শতাব্দী হেঁটে

দাঁড়াল অবশেষে

সেই পরমারাধ্য পার্বত্য দেবতার মন্দিরের দ্বারপ্রান্তে।

তখন প্রশান্তি পরিবৃত সিংহাসনে

মহাজাগতিক খিদেপেটে

দেবতা করছিলেন পরমান্ন গ্রহণ

মানবজাতির ওপর পরম করুণায়;

হাজারো দর্শনলিপ্সা মাথা কোটে

সবার অগোচরে

নিরুপায় বন্ধ দরজার গায়ে।

হঠাৎ দু-ভাগে চিরে যায় সুনীল আকাশ

খেলাচ্ছলে কে দিল উপুড় করে

এক সমুদ্র জল

পবিত্র মন্দিরের মাথায়:

উৎফুল্ল জলের দল

পাহাড়ের কোল থেকে নামে লাফিয়ে লাফিয়ে

প্রবল উচ্ছ্বাসে

ট্রাপিজ খেলোয়াড়ের দক্ষতায়।

খেলার বলের মত দুদ্দাড়

গড়িয়ে আসে নিরেট পাথরের বিরাট চাঁই:

ভক্তদের পায়ের তলায় জাগতিক অবলম্বন

নিমেষে খুঁজে নেয় শূন্যতাই।

জলমগ্ন পিঁপড়ের মত ভেসে যায় অসহায়

ভি আই পি,অর্ডিনারী, স্তোত্রসম্বল তাঁবুমোড়া সহস্র আশ্বাস;

অনায়াসে গিলে নেয় সর্বভুক মহাকাল

শত শত বছরের দুধ-কলা-বাতাসা লালিত

অফুরন্ত শ্রদ্ধা-ভক্তির চন্দনচর্চিত

সরল বিশ্বাস।

সব খেলাই এক সময় শেষ হয়

আবার যথারীতি আকাশ আগের মত জুড়ে যায়;

শিশুর মত নির্বিকার হাসে অবোধ নীল;

সেখানে পাক খায় কিছু পেশাগ্রস্ত সাংবাদিক চিল।

শ্মশানের শান্তি আদিগন্ত বিরাজমান :

নিখোঁজ কত পুণ্যসন্ধানী প্রাণ,

প্লাবনভূমিতে আততায়ী জলস্রোত

গায় অমোঘ ধ্বংসের গান।

তবুও ডিঙিয়ে সহযাত্রীদের নিথর দেহ

সন্তর্পণে উঠে আসে স্বর্গছোঁয়ার সিঁড়িতে

পিছিয়ে পড়া যূথবদ্ধ বিশ্বাস,

যাদের সঞ্চয়ে তখনও রয়ে গেছে

আরো কিছু বিশ্বস্ত নিঃশ্বাস।

তারা দেখেও দেখে না

মন্দিরের চৌকাঠের জিভটা টাটকা লাল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *