
ফেল করা লোকটা
ধ্রুবজ্যোতি ঘোষ
লোকটাকে কেউ পছন্দ করে না
সবাই বলে একটু সরুন
সে কেন্নোর মত গুটিয়ে যায়
সরতে থাকে, সরতে থাকে
যতক্ষণ না বন্ধু দেয়াল তার কাঁধে রাখে হাত
দেয়ালের ঘুপচিটা
তেলচিটে মশারীটা
কানাভাঙা থালাটা
ফুটো মগটা
আজন্ম বন্ধু তার
প্রতিভার সমঝদার
পৃথিবীর ক্লাসরুমে সারি সারি বেঞ্চি পাতা
সরতে সরতে
পেছনের দিকে এগোতে এগোতে
সেখানে বরাদ্দ
শেষ বেঞ্চিরও অসহনশীলতা
বাসে সে শুনতে থাকে একটু চাপুন
চাপতে চাপতে সীট হড়কায়
এবার দাঁড়াও
প্রতীক্ষায় অবশ্য অব্যর্থ কনুই
ফুটপাতও তাকে ছাড়ে না ইঞ্চিৎ জায়গা
খাবলাখানিক কাড়ে হকার
ছেড়ে রাখা চিলতেখানিক
দখলে যায় হিংস্র ক্রেতার
সে লেপ্টে যায় আরো বাঁয়ে
তার পায়ের তলার জমি খসে যায়
বিনাযুদ্ধেই লুট হয়ে যায় তার সূচ্যগ্র মেদিনী
দিনগত পাপক্ষয়ের পরীক্ষায় রোজই হাজিরা দেয়
যদিও তার প্রশ্নপত্র জানা
তবুও সে অবধারিত ফেল করে যায়
কৃষ্ণচূড়া হেসেই খুন
বলে তুমি ফেল
মেনিবেড়ালটাও মিহি গলায় বলে ফেল
ধোপানীর উদলা ছেলেটা
একলা ফোকলা
সেও বলে ফেল ফেল ফেল…
তখন সে নিজেকে ভেঙেচুরে
দলামলা করে
ফেলে দেয় লন্ড্রিব্যাগে
কে যেন তাকে আছাড় মেরে
কেচে দেয় শুকোতে
ছাদের দড়িতে…
একরাশ বিতৃষ্ণা মুখে
একটা কাক এসে ঠোকরায় তাকে
বিরক্ত হয়ে বলে
কি বিশ্রী ফেলটু বাস ভাসে নাকে
এই ধূ ধূ ছাদে কোন চওড়া দেয়াল নেই
যে তার কুঁকড়ে যাওয়া পিঠে রাখবে বলিষ্ঠ হাত।