
চাঁদের দ্বিধা
ধ্রুবজ্যোতি ঘোষ
কোজাগরী চাঁদ এসেছিল
তার পূর্ণিমার প্রসাধন সেরে
আমারই জন্য
হেমন্তের সান্ধ্য বারন্দায়।
তার রূপের বিপুল আয়োজনে
নক্ষত্রেরা ম্লানমুখে চলে গেল
যে যার নিজস্ব ছায়াপথে।
নভোমন্ডল আজ বিরহীর ভূমিকায়।
কোথা থেকে এলো
কিছু দুর্দান্ত মেঘ
নিমেষে ঘিরে নিলো তাকে,
পূর্ণিমার চাঁদ উঠলো পঞ্জিকাতে…
সন্ধ্যা পাঁচটা বিশ গতে।
তোমাকে নিয়ে ওরা পড়বে পাঁচালী।
পুরুষের তৈরী নিয়মকানুনে
ঢেকে যাবে সিঁদুর চন্দনে
তোমার রুপোলি
নান্দনিকতা
আর অসামান্য লাবণ্য।
মাটির প্রতিমার ওপর চাপানো রূপের সঙ্গে
ময়লা হাতে বিকিয়ে যাবে
তোমার সবটুকু জ্যোৎস্না,
চরাচরের সবটুকু রূপতৃষ্ণা,
আমার সবটুকু ভালোলাগা,
তোমার সবটুকু রাতজাগা
মাত্র কয়েকশো মুদ্রার বিনিময়ে।
আমি অসহায় দর্শক!
অপবিত্রতা জড়িয়ে ধরছে আমাকে সাপের মতো,
আমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছি পাপের মতো,
শুধু তোমাকে ভালোবেসে।
অথচ তুমি তো আমার কেউ নও
তুমি আজ দেবীপ্রতিম,
তোমাকে ছুঁয়ে দিই যদি
নাকি প্রলয় হয়ে যাবে।
তোমার খোঁপায় যদি
গুঁজে দিই একটি রক্তগোলাপ,
থমকে যাবে পৃথিবীর সৌরপ্রদক্ষিণ চিরদিন।
ওরা তোমাকে আমার থেকে অনেক দূরে নিয়ে গেছে ,বহুদূরে…
ঠাকুরঘরে,
সেখানে হৃদয় খুলে ঢুকতে হয়।
একবার বলো কোজাগরী চাঁদ,
তুমি কার,
আমার না পবিত্র পঞ্জিকার?
ভালো আছি
ধ্রুবজ্যোতি ঘোষ
আমি তো বলতে চাই
আমি খুব ভালো আছি
বাতাসে কিশোরীর লজ্জার মতো হিমেল ছোঁয়া
উৎসবের লগ্ন এখনও
পার হয়নি পঞ্জিকার চৌকাঠ।
প্রাণপণে ভালো থাকার চেষ্টায়
নিঃশ্বাসকে বন্দী করে রেখেছি
মুখোশের কারাগারে
এখন অচেনা মুখকে চেনা মনে হয়
চেনা মুখগুলো অচেনা।
প্রাণপণে ভালো থাকার চেষ্টা করি
আর শোকক্রীড়ার ধারা বিবরণী
শুনতে শুনতে বধির হয়ে যাই।
মাটির মূর্তির বিসর্জনের শোভাযাত্রা রাস্তা থামায়
নিস্পৃহ মূর্তি তাকিয়ে দেখে
একটা আ্যাম্বুল্যান্স্ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো।
দেখলো একলক্ষ মানুষ হাঁটছে
সবার জিভ কাটা
একর একর গোলাপ বাগান
একটারও গন্ধ নেই
র্্যাম্পে হাঁটছে নারীদেহ
দর্শকের আসনে আরশোলা।
অসম্ভব রকমের কসরৎ করে
ভালো থাকার চেষ্টা চালাই
কেননা গত পরশু
উর্দিপরা একজন এসে
বলে গিয়েছিল
উৎসব যেন বন্ধ না হয়
আর আপনার কবিতা থেকে মড়াপোড়া গন্ধ বেরোয়
আপনার পড়শিদের অভিযোগ।
আর যেন না পাই
তাহলে স্টেপ নিতে বাধ্য হবো।
আমাকে কিছু মন ভালো করার ভিডিও পাঠাবেন প্লীজ….