
হঠাৎ দেখা
বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল
অনেক দিন একা একা পড়ে থাকতে আর ভালো লাগছিল না। বয়স তো আর কম হোল না চল্লিশের কোঠা ছুঁই ছুঁই। মেস বাড়ির এই কোণের ঘরটা দেখতে দেখতে মনে ঘৃণা ধর গিয়েছিল। সত্যি বলতে কি একই গতে বাঁধা জীবন আর ভালো লাগছিল না। আমার বলতে তো আর কেউ নেই। নিজের আপনজন বলতে ছিল শুধু ” টু ব্যান্ডের ” ফিলিপ্স কোম্পানির বাহাদুর রেডিও টা। সেও ও যেদিন আমাকে ছেড়ে বিকল হয়ে চলে গেল আর কেই বা থাকতে পারে। কলজে জীবনের পর এভাবেই চলছে। আমাকে দেখেও কেউ যেন দেখে না। বুড়ো ভাম আর কি?
গ্রীষ্মের ছুটিতে পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে একটা মঠের সামনে জাগরণ অনুষ্ঠানের জন্য সারা রাত্রি উপভোগ করছি। খোলা প্রান্তরে নক্ষত্র খচিত মনোমহিনী আকাশ দেখছিলাম। পাহাড়ের ঢালে বয়ে আসা হালকা হিমেল বাতাসে মন চাঙ্গা হয়ে উঠছিল। ঝোপঝাড়ের আড়ালে ঝিঁ ঝিঁর পোকার ডাক আর জোনাকির খেলা অপরূপ চিত্র আঁকছিল। হঠাৎ কোথা থেকে মেঘ এসে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল । মঠের চাতালে বসে বসে মাটির সোঁদা গন্ধ ভেসে ভেসে আসছে তার ঘ্রাণ উপভোগ করলাম । বেরিয়ে দেখি ভোরের দিকে হালাকা আভায় হঠাৎ করে অনেক দিনের পর তোমাকে আবিষ্কার করলাম। ধীরে ধীরে পুব আকাশে সূর্যোদয়ের লাল আলো ফুটল। ঐ মন্দ পবন তোমার গায়ের পারফিউমের বাসি গন্ধ ছড়িয়ে দিলে। ধীর পদক্ষেপে তোমার পিছনে এসে দাঁড়িয়েছি ,আলতো হাত তোমাকে জড়িয়ে ধরলাম। তুমি হঠাৎ চিৎকার করে উঠলে কে কে ? তাকিয়ে দেখলে, লজ্জাবনত মুখে মুচকি হাসলে যে।
আমি এক নবীন কবি সাহিত্যিক। স্বল্প মানের কলমকে সাহিত্য ব্লগে সম্মানের সহিত প্রকাশিত করে চলেছেন। এটা আমার পরম প্রাপ্তি। ব্লগের প্রতি আমি চিরকৃতঞ্জ। সকলকে জানাই শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা ।