বিচিত্র আকাঙ্ক্ষা
শাপলা বড়ুয়া

রাস্তার মোড়ে নানান পণ্য নিয়ে বসেছে
এক মধ্যবয়সী দোকানি,
আসুন আসুন, সবই পাবেন, দাম মাত্র দশ
সদ্য তাজা ব্যাথা পাবেন, নানা রকম অবহেলা পাবেন,
লাল-নীল কষ্ট পাবেন, রংবাহারি খিদে পাবেন,
চাইলে স্বর্গীয় ভৎর্সনাও আছে, আমার কাছে
দাম কেবল দশ টাকা, দশ টাকা, দশ টাকা।
লাঠিতে ভর করে এলেন হাড়জিরজিরে এক প্রৌঢ়া
থলে বোঝাই কষ্ট আর অবহেলা নিয়ে চলে গেলেন;
কেতাদুরস্ত মধ্যবয়সী এক সাহেব নিয়ে গেলেন শুধু খিদে;
একদিন কাঠফাঁটা মধ্যদুপুরে এলেন ছন্নছাড়া এক নারী,
একে একে ভৎর্সনা সব তুলে নিলেন।
এরপর আর কেউ এলো না, পড়ে রইলো কেবল
চিরল চিক্কন কষ্টগুলো।
সযতনে কষ্টগুলো শুধু আগলে রাখলেন মধ্যবয়সী
দোকানি, কষ্টের আবাদ করবেন বলে।

মনুষ্য জীবন
দীপক বেরা

মায়ের অসুর নিধন যজ্ঞের আয়োজনে
এই ক’টা দিন খুবই ব্যস্ত ছিলাম—
চোখের জলে ভেসে ভাসিয়ে মা-কে বিদায় দিলাম।
অথচ, ক’টা অসুর নিধন হল খবর রাখি না
তা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই মোটেই।
বরং, কারণবারি পাণ করে বেশ্যার মতো
অপেশাদার ঘুমের কাছেই মাথা গুঁজে দিই
ক্ষুধাতুর স্বপ্ন দেখি, সুদৃশ্য সব রুটির স্বপ্ন
প্রত্যাশা মতো নরম তুলতুলে মোলায়েম রুটি।
শুধুই স্বপ্ন দেখি,
ঘুম আর ভাঙে না, বড়ই ক্লান্তিকর এই ঘুম
ঘুমের ম্যানুয়াল ভালো করে রপ্ত করে নিয়েছি যে
কেউ জোর করে ঘুম ভাঙাতে চাইলেও
ঘুম ভেঙে লম্বা হাই তুলে আবার ঘুমিয়ে পড়ছি।
বিজয় তোরণ ঘেঁষে দীর্ঘ পথের পথিক হয়ে
দীর্ঘ অভ্যাসের বৃত্তচাপের ‘জ্যা’ হয়ে ঝুলছি।
ওমলেট বানাতে গেলে ডিম তো ফাটাতেই হয়
কিন্তু জানেন তো, ফাটা ডিম ফাটে এক বার
আর, মৃত মানুষ মরে না দ্বিতীয় বার।
টালিগঞ্জ, কোলকাতা।
রচনাকাল : ০৬|১০|২০২২

আমরা নারী আমরাই পারি
অঙ্কিতা দে

আমরা নারী আমাদের কষ্ট হলে চোখের জল ফেলতে নেই।
আমরা নারী আমাদের কষ্ট প্রকাশ করতে নেই।
আমাদের ইচ্ছের কোনো দাম নেই কারণ আমরা নারী।
আমাদের ছেলের দাস হয়ে থাকতে হবে, কারণ আমরা নারী।
আমরা নারী আমাদের পুরুষদের দেহ্য চাহিদা মিটাতে হবে।
আমরা নারী আমাদের কোনো সুখ নেই অন্যের সেবা করি ছাড়া।
এখনো নারী রা পুরুষদের পা এর নিচে থাকে আধুনিক সমাজে এসেও।
খুব কম নারী আছে যারা এই বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।
কারণ আমরা নারী আমাদের দুর্বল ভাবা হয়।

আমাদের কোন বিজয়া দশমী নেই
মহীতোষ গায়েন

কয়েক বছর পুজোয় রঙের মুখোমুখি হইনি,
নতুন পোশাক পরিনি,খোলা আকাশের নীচে
হাজার হাজার আমি ছেঁড়া পোশাকে রঙহীন…
আমাদের কোন পুজো নেই,বিজয়া দশমী নেই।
আসলে বিজয়া দশমী বড় বেশি শারীরিক-
নেই মানসিক বোঝাপড়ার সে নন্দন ঐশ্বর্য,
ভার্চুয়াল শুভেচ্ছা বিনিময় বড্ড বেশি নকল;
তবুও মানুষ সম্পর্ক বয়ে বেড়ায় অবহেলায়।
আমারা কি রকম ভাবে বেচেঁ আছি তা কেউ
খোঁজ রাখে না,নজর রাখে সাফল্যের সলতেতে,
সেই সলতে কখন কিভাবে জ্বলছে সেটাই বড়
কথা,আসলে আমাদের কোন বিজয়া দশমী নেই।
আমাদের স্বপ্নগুলো মরে প্রতিনিয়ত,আমাদের মেঘ
আকাশে জমা হয়,বৃষ্টি হয় না,বৃষ্টি হলেও কখনো তা
মন ভেজায় না,আমাদের যন্ত্রণাগুলো মাথার মধ্যে
দাপিয়ে বেড়ায়,বিজয়া দশমী তাতে ঘৃতাহুতি দেয়।

শুধু একটি বছর পার
বারিদ বরন গুপ্ত

যেওনা মা আমাদের ছেড়ে
অতন্ত্র পাহাড়া হৃদয় জুড়ে
তবুও আছি বেঁচে
বছর বছর
শুধু একটি বছর পার!
বিষাদ নবমী কেন আসে ?
ঘুরে ফিরে অদূরে ভাসে
দিবস ঘুচিয়ে কাল রাত্রি
বয়ে যায় বেদনার ইতিহাস
শুধু একটা বছর পার!
একটি বছর!
শুধু একটি বছর !
দিন মাস বছর ঘুরে ফিরে আসে
প্রকৃতির তালে তালে আপন খেয়ালে
মহামায়ার ছত্র তলে
আসে নবমীর রাত
বয়ে বেড়ায় বেদনার ইতিহাস
শুধুই একটি বছর পর!
লেখক পরিচিতি::বারিদ বরন গুপ্ত (মন্তেশ্বর পূর্ব বর্ধমান) কবি লেখক প্রাবন্ধিক গবেষক, সমাজ সংস্কৃতি বিষয়ক লেখালেখিতে যুক্ত আছেন।

ভালোবাসা
সোমা হাজরা

ভালোবাসা মানে কি শুধু যন্ত্রণা।
ভালোবাসা ছেড়ে যাবার পর থাকে শুধু অন্য মানুষের সান্ত্বনা।
ভালোবাসা মানে কি শুধু কষ্ট আর চোখের জল?
না ভালোবাসা মানে কারোর মনের শক্তি আর বল।
ভালোবাসা মানে কি মনের মধ্যে থাকা ইমোসান?
সবাই কি পারে কেষ্ট হতে?
নিজের ভালোবাসাকে অন্যের হতে দেখতে ।
সত্যিকারের ভালোবাসা মানুষকে কষ্ট দেয়।
কষ্টের মধ্যে দিয়ে ভালোবাসা সার্থকতা পায়।

জল ছুঁয়ে দেখবো
মুহাঃ হাবিবুর রহমান।

জল ছুঁয়ে দেখবো বলে জলের অপেক্ষায় থাকি
মেঘ ভাঙা বর্ষনের ধারায় ভিজে যাক প্রকৃতি
সে ইচ্ছা অন্তরে পুষে রাখি।
বৃষ্টির ফোটায় জল খেলা করে
আকাশের কান্না নাকি, বেদনা ঝরে?
জলের মাঝে নিজের মাখামাখি জলজ আলিঙ্গনে
রুপময় সময়ের বহতায় স্নিগ্ধ আলোয় প্রাণের মিলনে
যেদিন গেছে সুদূরেই গেছে অনেক নির্জনে।
জলের ছবি অন্তরের বানী কী জানি, না জানি,
নিরুদ্দেশে থাকা বহু দিনের সুন্দর ভাবনা টানা টানি
এসবের মাঝে ক্ষুব্ধ হিয়ায় গোপন কথা হয় কানাকানি।
জলের বুকে ঢেউ, স্বপ্নিল ফেনায় বয়ে চলা ধারা অবিরাম
সব টুকু জল ছোঁব তার মতো করে যাবো দূরে
ধরার বুক চিরে সবুজ প্রান্তর ফুড়ে গ্রাম থেকে গ্রাম।
জল ছুঁয়ে দেখবো বলে মেঘের দিকে চেয়ে থাকি
ঝরা বাদলের রিমঝিম শব্দের অপেক্ষায় গানে গানে ডাকি
আামার এ জমিন ভিজাও জলধারায়, অন্তরালে তা সবে মাখি।
মুহাঃ হাবিবুর রহমান
প্রভাষক
ইসলামের ইতিহাস বিভাগ
নওয়াবেঁকী মহাবিদ্যালয়
নওয়াবেকী, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা।

নেই
সুশান্ত সেন

ভট্টাচার্য্য বাড়ির ছেলেটা বলেছিল
আমাকে সমুদ্র দেখাবে।
অনেক দিন ছিলাম অপেক্ষায়
দেখতে দেখতে আমার জামা প্যান্ট
ছোট হয়ে গেল ,
ভুঁড়ি বেড়ে এক বেখাপ্পা অবস্থা।
ছেলেটা বেরিয়েছিল সমুদ্রটাকে ধরে আনতে।
কোন দিকে যে গিয়েছিল আর মনে নেই।
ক্লান্ত হয়ে এখন সময়টা
ইজিচেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছে।
ভট্টাচার্য বাড়ির ছেলেটার আর দেখা নেই,
সমুদ্র দেখাও আর হয়ে উঠলো না।
সুশান্ত সেন
৩২বি , শরৎ বসু রোড
কলকাতা ৭০০০২০
৯৮৩০২৪২১৩৪

মায়ের কাছে
বিশ্বনাথ পাল

বিজয় মোদের লক্ষ্য যখন, হবো বিজয়ী
অনেক বাধা, বিঘ্ন আর অত্যাচার সহি
রক্ত বীজের বংশ হয়ে অসুরেরা থাকে
তাদের ভয়ে ভীত সবাই ডাকছে মাকে
বরাভয়দাত্রী মোদের মায়ের আগমনে
আনন্দের বান ডেকে যায় সকলের মনে
হিংসাদ্বেষ দূরে যাক, বাঁচুক আবার দেশ
অত্যচারীর গর্জনেতে না হোক শুভ শেষ
ছদ্মবেশে এদেশটাকে তুলছে যারা লাটে
তাদের জন্য এই জঘন্য দিনে হিয়া ফাটে
দশের ভাল করতে গিয়ে যারা ক্ষতিকরে
তাদের তুমি সুমতি দাও, যেন সুপথ ধরে
নইলে তাদের শেষ কর দিয়েকঠিনসাজা
হাতে হাতে ফল পাক খারাপ পথেমজা।

নীলছে মায়া
প্রদ্যোৎ কাঞ্জিলাল

দুঃখ-সুখের দোলায় চড়ে মন কেমনের বন্দরে,
রইলো পড়ে স্মৃতির রেখা হারিয়ে যাওয়া অন্তরে,
আশার ঝলক উঠলো
জ্বলে হৃদয়ে ব্যথা অনলে,
মনের কথা মনেই থাকে হারিয়ে যাওয়া নীড়ে।
ভাসা মেঘের আড়ালে রেখে গেলে দিশা,
নীল শাড়িতে সাজবে নিজের মতো করে আজ নিশা,
সাদার মায়ায় নীলের সখ্যতা চলবে পাশাপাশি,
ইচ্ছে হলো অনেকদিনই তোমায় ধরে রাখি।
আকাশটাতে হেলান দিয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো,
ঝড়ো হাওয়ায় বাতাসে তার চিহ্ন রেখে গেলো,
গুমোট তখন মনের কোণে উদাস বেলায় পড়ে মনে,
আগের মতো দেখছি তোমায় এখনোও মনে ধরো।
নীলছে তোমার সুরের মায়া প্রেম কবেকার জানো?
নীলেই যে প্রেমিক তুমি মনের দিশা মানো,
অপেক্ষাতে জীবন কাটে নিঃসঙ্গ নীল তুমি…
নীলছে রঙে তোমায় মানিয়েছিলো ভালো।
নীলের মায়ায় কপোল ঘেরা কুন্তলে,
দৃষ্টি আজ বৃষ্টি ঘেরা অবসন্ন সন্ধ্যা,
মনের মায়ায় অপেক্ষাতে চলছে পথ চলা,
নীলছে সন্ধ্যা আজ আমারই একা।

শিরোনামঃ তাও সবে চায়,
কলমেঃ প্রবক্তা সাধু

আলো দেয় তাপ দেয় রবি নভো থেকে
কালো মেঘ সাদা মেঘ দেয় তারে ঢেকে।
রাত নামে দিন আসে সেতো সাদাকালো
তবু মেঘ রবি শশী সব বাসি ভালো।
রবি দেয় খর তাপ সহা বড়ো দায়
প্রাণী কুল ছাড়া তারে আর সবে চায়।
চাঁদ জ্বলে রবি থেকে আলো ধার নিয়ে
ধরা মাঝে প্রিয় চাঁদ সেই আলো দিয়ে।
জল বিনা ক্ষিতি মাঝে বাঁচা খুব দায়
মেঘ ছাড়া স্বাদু জল বলো কেবা পায়।
বাঁচা মরা সব কাজে চাই যা যা আগে
জল তাপ বায়ু আলো সব কিছু লাগে।
রবি শশী আলো তাপ মেঘ দেয় জল
দেহ মাঝে প্রাণ বায়ু করে চলা-চল।
এই চার দ্বারা কতো ক্ষতি হয়ে যায়
ভয় পায় সব লোকে তাও সবে চায়।


পথ চলা
সিদ্ধেশ্বর হাটুই
জীবনটা একটি পদ্মফুলের সদৃশ নয়…….
মনটা আকাশতুল্য হলেও, দুরূহ সময় আসে।
তন্দ্রার ভাব দূরে ঠেলে উন্মীলিত করতে হবে মন,
শত পরাভবকে মেনে অগ্রসর হতে হবে -নিত্য ভেলায় ভেসে।
হাজার যন্ত্রনা নিয়ে চলার পথের রুক্ষতাকে করতে হবে মসৃণ
প্রস্তর ভাঙার অনমনীয়তায় হাতে ফোসকা তো হবেই !
বন্ধু আর কত দিন, আর কত দিন পরজীবী করে রাখা যায় প্রাণ
জীবনের পাটিগণিতের প্রতিকার অতি কৌতূহলোদ্দীপক, জট পাকবেই।
তাই বলে পথ চলা বন্ধ ? হারমানাকে সৎস্বভাব গড়ে কেন জীবন বিসর্জন ?
এগিয়ে চলো , পাশে থাকবে সমস্ত মানুষ সে আশাকে পৃথক রেখে
সুশীলদের সহিত মিত্রতায় খুঁজে নাও পরিত্রানের প্রণালী , সেটাই পথ…
রাস্তাটা হোক স্বচ্ছ, মনে থাক অকপট –অবিচল বিশ্বাস, আশার আলো দেখে।
আয়রে চলে
সিদ্ধেশ্বর হাটুই
আয় রে তোরা আয়না চলে
প্রবাসে আর থাকিস না রে…
তোরা এলেই আসবে যে শীত
শুনতে পাবো আবার সেই বাউলের গীত।
হেমন্তের মাঝে আশ্রয় নিয়ে …
করনা মনকে তৃপ্ত ,শীতল হাওয়া দিয়ে।
উষ্ণতাহীন সম্পর্ক হবে সবার
অবসান হোক দীর্ঘ একটি বছরের অপেক্ষার।
নানান রঙের শীত বস্ত্রে বেষ্টিত হবে মানুষ
চিনতে হলে দেখতে হবে-ভালো করে হুঁশ।
চড়ুইভাতি করবে সবাই বাড়ির বাইরে গিয়ে
ঘোরাঘুরি করবে সবার পরিজনদের নিয়ে।
ঘাসের উপর জমবে শিশির, যেন সোনার বিন্দু
সকাল-সাঁঝে দেখবে মাঠে ফসল ভরা সিন্ধু।
ঘুম জড়ানো সেই রাত্রি আরো দীর্ঘ হবে প্রচুর
মনের সুখে লেপের নিচে, সঙ্গীরা থাকবে অদূর।
কিন্তু অসহায় সেই মানুষ গুলো , ঐ যে দূরে…..
যাদের নেইকো কনো বাসা, তারাইতো মরে।
তাদের মনে হয় ছিলাম তো ভাই বেশ ভালো
কোথার থেকে -কেন যে আবার- শীত চলে এলো।
শীতের খাবার ,শীতের চাদর জোটেনা যাদের গায়ে,
তাদের কথা ভাবলে বন্ধু ক্রোধ জুটে যায় এই দেহে।
পারিনাতো ভাই করতে কিছু, অভাগা মূল্যহীন এই জীবনে
এদের জন্য ভাবে কারা ? ভাবে-ভাবে দানী রক্ত যাদের প্রানে।
এসো-এসো হে বন্ধু করি তাদের কোটি কোটি নমস্কার…………….
অসহায় মানুষদের যারা নিঃস্বার্থে করে মহান উপকার।
যদিও আমি কিছুই পারিনা দিতে, দেখি আর শুধু পারি ………
সকলের মনে , চোখের সামনে সেই নকশা তুলে ধরি।

চোর
প্রশান্ত গিরি

শুনেছি চোর নাকি …
দিন ফুরালে রাত্রি হলে
গা ডোবাতো সরষে তেলে
নিশিরাতে পুঁটলি হাতে
সাবড়ে দিত সুযোগ পেলে |
চোখ গুলো তার
লাল কালো আর
গা কুচ কুচে কালো
বাতি লণ্ঠন লাগতোনা তার
দৃষ্টি ভীষণ ভালো |
ছিঁচকে চোর , পেটি চোর
দামড়া চোর ঢিলে
পড়তো যদি ডাকু-চোর
চমকে যেত পিলে |
লিচু চোর , আম চোর
আচার চোরও জানি
সুযোগ পেলে করেছি চুরি
মায়ের ভাঁড় খানি |
প্রেম পিরীতে হৃদয় চুরি
মন চুরিও ঘটে
দু-চার আনা ঘটুক না ঘটুক
ষোল আনাই রটে |
চুরি বিদ্যা মহা বিদ্যা
চুরি করতে লাগে বল
লাগে ধাপ্পাবাজি প্রতারনা
বেইমানি আর ছল |
এখন …
তেলমাখা চোর হারিয়ে গেছে
না পেয়ে পানি হালে
এখন তো হয় পুকুর চুরি
‘স্ক্যাম’ না কি যেন বলে |
এখন চোর গুলো সব ভদ্রবেশী
স্যুট কোট টাই পরে
মুচকি হেসে মিষ্টি কথায়
লোকের পকেট মারে |
এখন চোরকে সবাই বাবু বলে
ফুল তুলে দেয় হাতে
তেলামাথায় তেল দিয়ে যায়
যদি জুটে যায় কিছু পাতে |
নিন্দুকেরা বড্ড বাজে
শুধু চুরির গল্প ফাঁদে
মুরোদ নেই কিচ্ছু করার
আবার মিঁউ মিঁউ করে কাঁদে |
ওর এলেম আছে করেছে চুরি
তুইও করে দেখ
ভীতুর ডিম পারেনা কিছুই
শুধু ধরে সাধুর ভেক |
কেউ করছে চুরি দিন দাহাড়ে
কেউ করছে রাতে
কেউ মারছে তেল-পানিতে
কেউ মারছে ভাতে |
চোর আমি চোর তুমি
চোরে ভুবন ভরা
ফুরফুরিয়ে চলবে জীবন
যদি না পড় ধরা |

তোমার পথে মুক্তি ঝরে পড়ুক
বরুণ মণ্ডল

আধ্যাত্মিকতার পথই মুক্তি দেয়।
বলা সহজ, সে পথের পথিক হওয়া অনেক কঠিন।
সংসারের পথ কন্টক ময়।
তবু বোকারা জান প্রাণ দিয়ে সেই পথই আঁকড়ে ধরে।
অসহযোগিতার কাদায় পিচ্ছিল সে পথ।
পথিকরা সবাই কাঁকড়া।
সদা পিছন দিকে এগোতে টান মারে!
হৃদয়ের খবরের তল পায় না কখনো।
বাহ্যিক কর্ম বিচার ক’রে ক’রে নিন্দুক হয়ে ওঠে।
তারা জ্ঞানের তালপুকুর, ঘটি ডোবে না!
গুরুর চেয়ে শিষ্য বড়!
গুরু বলেন, শিষ্য তা করে দেখায়।
তিনি বড় হন, সে বানায়।
কিন্তু গুরু-শিষ্য একে অপরের পরিপূরক।
তোমার মুক্তির পথে সফল হও।

কেউ কারো নয়
-মেহের আমজাদ

কেউ কারো নয়
আপন ভেবে যাকেই টেনেছি কাছে
মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে দূরে চলে গ্যাছে।
কেবল প্রয়োজন আর স্বার্থের টানে
মায়াবী হয়ে এসে বেঁধেছে বাসা
দখল করেছে এই হৃদয় জমিন।
তারপর লুটে পুটে চেটে খাওয়া হলে
চেনেনি আমায়
চিনেছি আমি তাদের যারা ছিলো আপন
হয়েছে তারা পর।
এখনতো আমি ফুরিয়ে গ্যাছি হয়েছি ফতুর
দেবার মত কিছুই নেই আর
তাই মায়াবী হয়ে আসেনা কেউ
নেয়না খবর বলেনা কেউ আগের মত
কেমন আছো ?
সাধ জাগেনা করোও পুলকিত হয়ে
কিংবা কোন কৌতুহলে কোন কিছুই জানবার।
সময়কালে মায়ময় গভীর স্বপ্নে বিভোর হয়ে
যাদের জড়িয়ে রেখেছিলাম বুকের ভিতর
একে একে গ্যাছে সবাই চলে
প্রয়োজন হয়নি করোও বলে যেতে
হয়ত প্রয়োজন হবে
যখন চিতায় আগুন উঠবে জ¦লে
কখনও এ হিসাব দেখেনি কষে
কেউ কারো নয় বুঝেছি আমি অবশেষে।

বর্ষাদিনের গপ্পো
রোদ্দুর অরিত্র

একটা ভরা বর্ষা দিনে
মেঘ কুড়োবো বলে ;
শুনতে পেলুম ভাঙলো আকাশ
পাশের পাড়ার কলে।
পাশের পাড়ায় যেখানেতে
ফুলপরীটার ঘর
মাস পয়লা আসবে সেথায়
টুকটুকে এক বর ।
আমি আবার বৃষ্টি হলেই
বৃষ্টি ভিজি খুব ,
এখন আমার বৃষ্টি মানেই
চোখের জলে ডুব ।
আমার লেখা শেষ কবিতা,
তার কাছে কি যত্নে আছে ?
আমার লেখা শেষ চিঠিটা
পোড়াবে সে কিসের আঁচে?
সে আছে কি পুড়বো আমি ?
পুড়বে আমার যত্ত সুখ ?
সেকি এসে বলবে আবাৱ
তুই যে আমার প্রিয় অসুখ …

তেল সমাচার
রফিকুল ইসলাম রুমি

তেলে মাথায় দেয় সবাই তেল, শুকনো মাথায় ঝান্ডু বাম।
কারনটা কি এমন কম্মের, বাড়ছে যে ভাই তেলের দাম।
শুকনো মাথায় তেল দিলে যে খরচটা যায় বেড়ে,
তাইতো সবাই কম খরচে নিচ্ছে কর্ম সেরে।
আধ মরাদের মারার জন্য চলছে নিত্য যজ্ঞ,
দাপুটেদের টিকির খবর জানতে সবাই অজ্ঞ।
আজব গুজব কান্ড দেখে ঘুরছে মাথা হরদম,
কখন যেন সব দেখে ভাই বন্ধ হবে বুকের দম।
