উড়ো খই
——————–
অমিতাভ মুখোপাধ্যায়
বাদল হাওয়ায় উড়ে যায় উড়ো খই
যেমন শব বাহী গাড়ীর পেছনে ছোটে
এক জীবনের অস্তিত্ব
প্রীতির বাদামী অহংকার
সময়কে জিজ্ঞাসা করে দেখো তো
সত্যিই কী তোমার বলতে কিছু ছিল?
সে বলবে, না –
‘তুমি তো এসেছিলে উলঙ্গ হয়ে
আর
যাবে তো শুধু তিন হাত কাপড় নিয়ে’
তাহলে আর কেন এতো বৃথা দ্বন্দ্ব
মানুষে মানুষে হানাহানি –
রক্ত নদীতে ভেসে যাওয়া
তোমার আমার গল্প?
সুখ তো দুদিনের
পড়ে থাকে তো সেই দীর্ঘ বিচ্ছেদ
আর এক রাশ ঘৃণা
নয়তো
এক কায়া হীনের কাহিনী l
কবিতা -২
মা
—————-
অমিতাভ মুখোপাধ্যায়
জীবনে প্রথম আলো দেখায় মা
হাসি কান্নার চির সাথী সেই মা
পিতা তো বটবৃক্ষ
এক নিশ্চিন্ত আশ্রয়
জীবন যখন পল্লবিত হয়
শাখা প্রশাখায় দোলা লাগে
বা পথ চলতে চলতে
একদিন হঠাৎ সেই বটবৃক্ষটা
যখন ভেঙে যায়
বা কোন দুঃস্বপ্ন তাড়া করে ফেরে
কিংবা জীবনকে যখন
ভাঙা চাঁদের মতো দেখায়
মনে হয় সবটাই নোনাজল
তখন সেই অভাগী মা -ই
মাথার কাছে এসে দাঁড়ায়
করুণ সুরে বলে
তোর কী হয়েছে খোকা?
খোকা বলে –
আমার সেই সাজানো স্বপ্নটা
চুরি হয়ে গেছে মা
আমি এখন এক অবাক পৃথিবীর
সবাক ফেরিওয়ালা
এক বরফ গলা জলে
ডুবে গেছে আমার সঞ্চিত সম্পদ
সাদা কাগজের নৌকাখানি
আহত মা বলে –
সব ঠিক হয়ে যাবে খোকা
নতুন দিনের আলো এসে
আশার জানালায় আবার উঁকি দেবে
চেতনার তুলসী তলায় জ্বেলে দেবে
আশ্চর্য্য প্রদীপ
যা গেছে তা যাক
যেটুকু আছে তা দিয়েই
আবার পথ চলা শুরু কর
কেউ না থাকুক –
আমিই থাকবো তোর ছায়া সঙ্গী হয়ে
যেমন দশ মাস দশ দিন ছিলাম l