মা শব্দটার সঙ্গে আমি খুব একটা পরিচিত নই। কারণ ছোট থেকেই দেখেছি আমাকে স্নান করান, খাওয়ান, চুল বেঁধে দেওয়া সব কিছুই করেছেন একজন পুরুষ। তাকে আর যাই হোক মা বলা যায় না। তিনি আমার বাবা। জন্মের তিন মাস পর ই শুনেছি আমার মা মারা যান কলেরায়। তার স্মৃতি বলতে একটা সাদা কালো, ফ্রেমে বাঁধানো ছবি। যাতে রোজ নিয়ম করে এই সতেরো বছর পর ও সন্ধ্যেবেলা মালা পরান হয়। আমার পেটব্যথার দিন গুলোতেও যিনি গরম জল করে সেঁক দেবার হট্ ব্যাগ টা এগিয়ে দেন, তিনি আর কেউ নন্ আমার বাবা।
যখন স্কুলে সবাই তাদের মা নিয়ে কত গল্প করত, তখন বাড়ি ফিরে ঈশ্বরের কাছে নালিশ করতাম, কেন আমি কাউকে মা বলতে পারলাম না। কিন্তু জান গত তিন দিন জ্বরে যে হাত দুটো টানা আমায় রাত জেগে জলপট্টি দিয়েছে, সময় করে ওষুধ খাইয়েছে,সযত্নে পথ্য রেঁধে দিয়েছে, অফিস থেকে ছুটি নিয়ে, রাতজাগা ক্লান্ত চোখ দুটোয় হাসি ফুটিয়ে বলেছে, ভাবিস না মা, “ভাল হয়ে যাবি, আমি আছি তো। সব ঠিক হয়ে যাবে”, তিনি আমার বাবা।
সেদিন আমি মা বলে ডেকে ছিলাম, প্রাণ ভরে মা বলে ডেকে ছিলাম। কিন্তু কোন নারী কে নয়। একজন পুরুষ কে। সব মাতৃ দিবসেই আমার কাছে বাবা মা সমার্থক। হ্যাপি মাদার্স ডে বাপী। কারণ আমার কাছে দুজন তো আসলে একজন ই।