সেই কবে ইতিহাসের
পাতায়- মলিন হয়েছে ওদের
কাহিনী, গল্প হয়ে ফেরে মুখে
মুখে। অত্যাচারী ইংরেজদের
নিপীড়ন, খাজনা না পাওয়া জমিদারের
পেয়াদার চাবুকের
কষাঘাত। ঘটি,মাটি,
বাটি বেচে, মহাজনের ঋণ শোধ
করে- দুটো ভাতের জন্য বুকফাটা
কান্না। নিলসাহেবদের
চাবুকাঘাত- ওদের পিঠে একে
দিয়েছিল, দাসত্বের ক্ষত
চিহ্ন। একদিন
অনাহারে ক্লিষ্ট, চাবুকের ঘাতে ক্লান্ত, হাতগুলো জ্বলেছিল
মুক্তির মশাল। দুমুঠো ভাত আর কাপড়ের
জন্য। হলো বিপ্লব,কত মরল,
মারলো, কতজন ফাঁসিতে
ঝুললো। তবু রচিত হলো স্বাধীনতার
বিশুদ্ধ বেদি। ধ্বনিত হলো সাম্যের
গান। ওরা আশায় বুক বাধল,ভাবলো
– সাম্যের ভিড়ে মিশে যাবে
ওরা। পড়বে না চাবুকের বাড়ি,নেবে না
কেউ ফসলের ভাগ,জ্বলবে দুবেলা
হাড়ি। এতটা পথ পাড়ি
দিয়েও- ওদের স্বপ্ন টা কিন্তু
আজ ধরা দেয় নি। এখনো ক্ষুধায় কাতরায় ওরা পেট
ধরে। জঞ্জালের স্তুপ, পচা ড্রেনে খাবার গ্রহণ
করে। এখনো জমিদারদের
বেশে, কেউ যেন ওদের খাবার চুরি
করে। এখনো বিশ টাকা হারে সুদ দেয়
ওরা। পাড়ার কোনো মোড়লের
কাছে- রেশনের পাঁচ কেজি চালের
বদলে- ফেরে পোকা খাওয়া দু কেজি চাল নিয়ে ঘরে।
নতুন ভোটার,আধার,পেন কার্ডে- বাবুদের উৎকোচ
ওদের পকেট থেকে লাগে। এখনো ভোট বেচে
ওরা- পঞ্চাশ টাকার মদের
বোতল কিংবা কিছু চালে। আজও সামান্য ঋনে ওরা ভিটে মাটি
হারায়- মহামারী ,দুর্যোগে ওদের ত্রান চুরি
হয়। রাতের অন্ধকারে তা গুদাম জাত
হয়। ইতিহাসের সেই মরচে পড়া
অক্ষরগুলো। এখনো উঁকি
মেরে- শাসক,শোষক,পোষক
সবাই রয়ে গেছে। সময়ের স্রোতে শুধু মুখোশটা
বদলেছে। কেবল ওরাই একই রয়ে
গেছে। অধিকারের খাতায়, হিসেবের
পাতায় ওদের যোগফলটা মিলিয়ে দেওয়া হয় গোজামিল
করে, আজও যে মেশা হয়নি ওদের সাম্যের ভিড়ে-