দূর হতে ভেবেছিনু তুমি সাধু, অতি মহাজন,
মনেতে তোমার নাই কো লোভ, তুমি আকিঞ্চন।
তোমার গুণের বাহার অতি মনোহরা,লোকদেখানো
কে জানত সত্য মানতে ভীত তুমি? ওহে মনভোলানো!
.
তোমার সাথে ছিলাম মোরা মানব সেবার তরে,
আর্তের সেবায় ব্রতী হলাম সবাই মানবতার জোরে,
সেই তোমাকে চিনতে মোদের হয়েছিল মহাভুল,
কোথায় সাধু, মহাজন তুমি? তুমি তো ভন্ড বিলকুল!
.
দূর হতে তোমারে দেখায় ভাল, সুন্দর, মনমাতানো
কাছে এসে জানলাম সে তুমি কেবল পর্দাসাঁটানো,
সামনে থেকে যায় না চেনা, এত সুন্দর ছদ্মবেশী,
আসলে তো তুমি সুযোগসন্ধানী, কেবল স্বার্থান্বেষী।
.
মানব সেবার নামে তোমার এ তো ব্যবসা অতি বড়,
উদারতার মুখোশ পরা তোমার, স্বার্থ কোথায় ছাড়ো?
মনলোভানো কথা বলে মানুষকে ব্যবহার তুমি করো,
সময় হলেই তাড়াতে তাদের নিজের স্বরুপ ধরো।
.
স্বার্থ নিয়ে কর মানব সেবা, সে যে মহৎ পাপ!
তোমার পাপে পাপী তুমি, পরে করবে মনস্তাপ।
মিথ্যা বলে যাদের তুমি আনলে মানবসেবার কাজে,
সত্য রূপটি জেনে তোমার, তারা মুখটি লুকায় লাজে।
.
ভয় পাওনা ভন্ড তুমি! ভাবছ মোরা সরল, নিষ্পাপ!
তোমার কথায় উঠি বসি, ভাবি এ কাজেতে তুমিই মোদের বাপ!
সত্য যদি আগল খোলে, দোষ কি মোদের দেবে?
তোমার চুরি পরলে ধরা, কি যায়-আসে মোদের তবে?
.
মনে রেখ, তোমার মুখোশ পরবে যেদিন খসে,
সাধু ভেবে আজকে যারা আছে তোমার পাশে,
মিথ্যা দিয়ে সেদিন পারবে না আর রাখতে তাদের ধরে,
থাকবে না পাশে কেউই, যাবে সবাই সেদিন সরে।
.
রত্নাকরও দস্যু ছিল, লুঠত পথিক, পরিবারের তরে,
পাপের ভাগ তাঁর নেয়নি কেহ, দিয়েছিল ঠেলে দূরে,
বলেছিল সবাই, তোমার পাপ রাখ তোমার কাছে,
তোমার হবে সেই পরিনাম, খুললে মুখোশ পাছে।
.
সেদিন বুঝি খুব দুরে নয়, তোমার পাপের কলস হবে যেদিন ভরা,
একদিন তা উপছে যাবে, পরবে ঝরে, আসছে সেদিন ত্বরা।
তোমার মিথ্যা-মোহ দিয়ে বশ করতে পারবে না লোকজন,
আমার মত বুঝবে সবাই, তুমি নও যে সাধু, মহাজন।