সমর সুর এর কবিতা

ভাষাতাঁতি -এক / সমর সুর

তোমার কালো শাড়িতে জড়ানো পৃথিবী 

এখন অনেক রাত্রি,অন্ধকার নেই।

হ্যারিকেনেও  ক্রমশ জমে আসে মেঘ

এদৃশ্যে সাধকগাছও হেসে ওঠে আর 

বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়া জোছনায় ভাষাতাঁতি গান গায় নিচুস্বরে।

রূপকথার বাইরে বেরিয়ে দেখি আমার পৃথিবীও

ভরে গ্যাছে সাদা বিজ্ঞাপনে 

রাত্রি অনেক হল,আকাশ পরিষ্কার ।

ভাষাতাঁতি – দুই / সমর সুর

অন্ধকার আমার পাশে ঘুমিয়ে পড়লে

শালবন ছেড়ে উড়ে যায় বরফপাখি।

সর্পদণ্ডে ভর দিয়ে কবরখানায় ঘুরে বেড়ালেও

আমি জানি রোজ রাতে বুড়োতাঁতি কোলে নিয়ে 

বসে থাকে মৃত সন্তান 

এদৃশ্যে বৃষ্টিপাত সহ স্বদেশপ্রেম ও শবযাত্রার গানে আবেগ থাকে না।

একা, ভীষণ একা, বৃষ্টির ভিতর  বরফপাখি।

রাস্তা  / সমর সুর

বিকাল হলেই বেরিয়ে পড়ি রাস্তায়

পার হই সরকারি ইউক্যালিপটাস্, কদম

বাবলার সারি আর

কিছু পরিচয়হীন গাছ,ধানের খেত,ফাঁকা মাঠ

অনন্তকাল ধরে হাঁটতে চাই এই রাস্তায়।

সূর্যাস্ত নামে ক্রমশ ঝাপসা হয় দৃশ্যগুলো 

একদিন সূর্যাস্ত পেরিয়ে বেরিয়ে পড়ব রাস্তায়।

কাগজের নৌকা  / সমর সুর

প্রবল বর্ষণে কত দূর যাবে আর 

কাগজের নৌকা।

সেই শৈশব ফেলে এসেছি কবেই,মনে হয় আজ রেনি ডে।

স্কুল ছুটি হল

মায়ের সাবধানি হাত ধরে রাস্তা পার হয় শিশু

গাছের আড়ালে দেখি ভিজছে যুগল মূর্তি।

ওদের কি ডেকে নেব ঘরে !

কবে যে পড়েছিলাম মনে নেই আলেকজান্ডার 

পেটের রোগের কারণেই নাকি ফিরে গিয়েছিলেন 

ম্যাসিডোনিয়ায়।

কতকিছুরই তো কোন মানে হয় না

যেমন দীর্ঘকাল বেঁচে থাকা।

এখনও ভিজতে ভালই লাগে, হালকা হাওয়ায় 

পাতা থেকে ঝরে পড়ে জল ক্লান্ত শরীরে।

ফিরে আসি ঘরে

ভেজা টয়লেট,বিছানার চাদর উল্টো পাতা

আজ আর জানালা খুলব না

ভালবাসার গন্ধে ম ম করছে সমস্ত ঘর।

শ্যামা প্রসাদ পল্লী

পো ঃ রাণাঘাট 

জেলা ঃ নদীয়া

পিনঃ 741201.

চলভাষ ঃ 7407032271.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *