শব্দের প্রবাহ তখন অস্তমিত

shrutisahitya.com

তুমি আজ স্মৃতি // সীমা চক্রবর্তী 

তুমি আপনার তরে হেলায় মোরে

 দিয়াছো ফিরায়ে

তাই তব নাম আমি দিয়েছি মুছায়

রুধির অশ্রু ঝরায়ে।

ফিরায়ে দিয়ে মোরে ভালোই করেছো

হে মোর সখা

বহু কাল মোর হয় নাই প্রভাতে

উদিত সূর্য দেখা।

প্রতিক্ষণ আমি তোমারে ভাবিয়া

ভুলেছিনু নিত্য সংসার

তোমার লাগি কল্যাণ চাহি

ফিরেছিনু দেউল দুয়ার।

দেখি নাই চাহিয়া মোর লেখনীর

চক্ষে করুণ রক্তধারা

নাহি জানি কতটা অবহেলা সহিছে

মোর পরাণ প্রিয় লেখা।

দিবা-নিশি মোর কাটিয়া যেতো

তোমা সাথে সুখে – দুখে

অকারণে যতো দোষ দিতে মোরে

মানিতাম হাসি মুখে।

গেলে যবে চলি ভুলিয়া মোরে

চাও নাই ফিরে পিছু

দিয়া ছিলে যাহা দু’হাত ভরিয়া

নিয়া গেলে সবকিছু।

বেদনা ভুলিয়া অশ্রু মুছিয়া

লভিনু মুক্তি অনুভব

এই হলো ভালো পেলাম ফিরিয়া

যাহা ছিলো মোর সব।

বহুদিন পর উঠিলো জ্বলিয়া

মোর হৃদয় জ্যোতি

কবিতার সাথে সখ্য করিয়া

কাটিবে দিবস রাতি।

লেখনীও মোর লিখিবে না আর

তোমা তরে প্রেমগীতি

অধুনা রব আমি

তুমি রবে মোর বিস্মৃত এক স্মৃতি।

.

.               

ফিরে দেখা জীবন //  শ্যামল কুমার রায়

     জীবন মানে জল ছবি

       প্রেম প্রেম খেলা ।

প্রেয়সীর মুখ দেখে কাটে সারা বেলা ।

মুখোমুখি পাশাপাশি কত কথা হয়

সব কথার মানে বোঝার এ বয়স নয়।

উঠতি বয়সের প্রেমে আবেগের কারকতা

যৌবনের প্রেম খোঁজে উদ্দাম যৌনতা।

       মাতৃত্বে নারীত্ব পায় পূর্ণতা ,

পিতৃত্ব জাগিয়ে তোলে দায়বদ্ধতা ।

বয়সের সাথে সাথে বোঝাপড়া বাড়ে ,

 ভালোবাসা একঘেয়ে অভ্যাস গড়ে ।

    শব্দের প্রবাহ তখন অস্তমিত

     নিরবতা কিন্তু বেশ মুখরিত ।

রাগ, রোষ, অভিমান বেশ বোঝা যায় ।

আলতো ছোঁয়া আজও সব মুছে দেয়।

.

.

অণু কবিতা, রণেশ রায়

ভুলায়ও না

ভোলা মোর ওরে

ভুলায়ও না মোরে।

ভাবায় কিন্তু

ছোট্ট কথা কয়েক

ভাবায় কিন্তু অনেক।

.

কবিতা তোমায়  বিদায়  //  রণেশ রায়,গোধূলি

সেদিন সন্ধ্যায়

বার্তা ফাগুনের বাতাসে,

সে জানিয়েছে

অচিরেই আসছে,

আমি অপেক্ষায় তার।

উবে যায় সব ভাবনা

পন্ড বুঝি যত  বাসনা,

ঝোরো হাওয়া বয়

কবি আর কত সয়!

কবিজায়া হাজির সেখানে

মাথায় তুফান বয়ে আনে,

কবি হেসে বলে,

রাতের  বাহন হয়ে

এখানে এমন অসময়ে

এতো  সন্ধ্যে সবে

রাতেতো আমায় যেতে হবে ।

বোধহয় জানতে পারে

খবর পাঠায়

আসতে পারবে না আজ

তরী বয়ে যায় উজানে,

কবিতা ওড়ে ওই বিমানে।

প্রেয়সী পাশে এসে বসে

সুরালো কন্ঠে বলে,

এভাবে কতদিন চলে

দেখনা চাল নেই ঘরে!

ক্ষিধেয় খোকা মরে।

কবির সহাস্য দর্শন

কাব্যের অভিমান,

না লিখলে ভরে না যে মন

খাওয়া ঘুমে স্থূল এ জীবন।

বাইরে ঝর ঝর বৃষ্টি

শিশু সন্তান পায়না পুষ্টি

অভাব হয়না জলের

প্লাবন দেখ ব্রহ্মপুত্রের।

কবি জায়া কেঁদে কয়,

তোমার কি নেই হৃদয়

দেখনা তান্ডব ঘরে।

কবির কাব্য ঝরে পড়ে,

কবিবর চলেছে সাগরে

সখী তুমিও চল সাথে

দেখ চোখ  বুজে

চলি কেমন ঢেউয়ে ঢেউয়ে।

কবি জায়ার চোখে জল

নিয়ে যায় দুকূল ভাসিয়ে

সে রেগে ঘর ছাড়ে।

যাচ্ছ কোথায় আরে !

সখী যেও না মোরে ছেড়ে

পাগল আমি তুমি গেলে,

যেও না আমায় ফেলে

আজ তোমার জন্মদিনে

দু:খ দিও না মনে,

আমার এই ছোট্ট উপহার

কম নয় দাম তার,

জেন এই রসনায়

তুমি আছ কামনায়।

কবি কবিতার মজলিসে

সমুদ্র মন্থন করে আনে,

তার কাব্যে মুক্ত ঝরে

জঙ্গলের শিক কেটে ঢোকে

অরণ্য সুন্দরীর ছবি আঁকে

সে হয়ে ওঠে উবর্শী

পূর্ণিমার চাঁদ সুন্দরী প্রেয়সী।

কবিতা সন্ন্যাস নেয়

পাহাড়ের চূড়ায়।

ক্লান্ত শ্রান্ত কবি ফেরে

চমক ভাঙ্গে ঘরে এসে,

কি হল কোথায়!

স্ত্রীর অশ্রু ঘর ভেজায়

সমুদ্রের গর্জন

অরণ্যের ক্রন্দন

সূর্য অস্ত যায়,

চাঁদ আজ ফেরার,

কবির  প্রেয়সী

আকাশের শশী

শ্মশানে  চিতা।

অপুষ্ট সন্তান বিদায় বেলায়

পূর্ণিমায় আকাশ অন্ধকার

কবির চোখে জল বয়ে যায়,

মুছতে থাকে চোখ দুটি

কবিতা তোমায় ছুটি।

.

.

ভাল মানুষ  //  মিজানুর রহমান মিজান

ভাইবোন বন্ধুরা তোমাদেরকে বলি

ভাল মানুষ হবে সন্তান দেখো চোখ খুলি।।

আদর সোহাগ যত্ন নিবেন সচেতনতায়

ফাঁকি দিলে বুঝান তারে নির্জন নিরালায়।।

রোজ সকালে উঠার অভ্যাস দেন শিখিয়ে

মিথ্যা বলা মহাপাপ বলুন বুঝিয়ে ।।

নজর রাখুন ভাল বন্ধুর হয় যেন সহচর

দুষ্টুদের কাছ থেকে ফিরান তারে অতি সত্তর।।

অহংকার লোভ পতনের মুল এ কথাটি সত্য

হিংসা নিন্দা পরিহারে থাকে যেন সর্বদা মত্ত।

অলসতায় দারিদ্রতা পরিশ্রমে ধন

সঙ্গ ভাল নির্বাচনে যদি হয় সুজন।।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *