# অণুগল্প — শব্দেরা
# গল্পকার — অভিষেক সাহা
” তুই এখনও সেই কলেজ জীবনের মত কবিতা লিখিস ?” রক্তিমকে জিজ্ঞেস করল নিবেদিতা।
” না রে এখন আর কবিতা লেখা হয় না। তবে লিখি অফিসের হিসাবের খাতা ।” বলেই হো হো করে হেসে উঠলো উঠল রক্তিম।
প্রায় দশ বছর পর রক্তিম আর নিবেদিতার দেখা হল ।
গোলপার্কে পুরোনো বইয়ের দোকানে এসেছিল রক্তিম, কিছু বই কিনতে। সেখান থেকে বেরিয়ে বাস স্টপেজের দিকে আসার পথেই দেখা হয়ে গেল নিবেদিতার সঙ্গে। শেষ দশ বছরে শহরটা অনেক বদলে গেছে। রাস্তাঘাট, বাড়ি থেকে শুরু করে অনেক কিছু। বদলে গেছে ওরাও। নিবেদিতার শরীরে মেদ জমেছে। একটু ভারী হয়েছে। দেখতেও সুন্দর হয়েছে। পড়ন্ত বিকেলের আলোয় নিবেদিতার রূপ যেন অন্য মাত্রা পেয়েছে। বদলে গেছে রক্তিমও। কলেজে থাকতে ওর শরীরে হাড়ের উপর মাংস লাগা ছিল। এখন সুঠাম। সামনের একটা কফি শপে বসল ওরা।
” তার মানে আমাকে দেওয়া শেষ কথাটাও তুই রাখলি না।” অভিযোগের সুরে বলল নিবেদিতা।
” কী কথা!” অবাক হয়ে প্রশ্ন করল রক্তিম।
” তুই আমাকে কথা দিয়েছিলি জীবনে যাই হয়ে যাক কবিতা লেখা ছাড়বি না।” নিবেদিতা মনে করাল।
” হ্যাঁ, ঠিকই বলেছিস। তোকে দেওয়া কথা রাখতে পারলাম না। কিন্তু সত্যিটা কী বলত, ওরা না এখন আর আমার কাছে আসে না !” শ্বাস ফেলে বলল রক্তিম।
” ওরা কারা ?” জানতে চাইল নিবেদিতা।
কফি শপের কাঁচের দরজা দিয়ে বাইরের ছুটে চলা শহরের দিকে তাকিয়ে রক্তিম বলল ” শব্দেরা। যেদিন থেকে তুই আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেলি, শব্দেরাও আমার কাছে আসা বন্ধ করে দিল!”
অভিষেক সাহা