কলমে- মোঃ রায়হান কাজী
খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার সাপমারা গ্রামে অপূর্ব সুন্দর রিসাং ঝর্ণার অবস্থান। স্থানীয়দের কাছে রিসাং ঝর্ণা (Risang Jorna) ‘সাপ মারা রিসাং ঝর্ণা’ নামে পরিচিত। মারমা শব্দ রিছাং-এর অর্থ কোন উঁচু স্থান হতে জলরাশি গড়িয়ে পড়া। রিছাং ঝর্ণার অপর নাম তেরাং তৈকালাই। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র হতে যাত্রা শুরু করি ঝর্ণার অভিমুখে বাসে করে।সেখান থেকে ঝর্ণার দূরত্ব ছিলো মাত্র ৩ কিলোমিটার। আর খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়ক ধরে এগিয়ে গেলে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে রিসাং ঝর্ণার অবস্থান।
প্রথমে রিসাং ঝর্ণার যাওয়ার জন্য টিকেট কাটি। তারপর প্রধান পথক ধরে ইট বিছানো আঁকাবাঁকা উঁচুনিচু সড়ক দিয়ে হাঁটা শুরু করি ঝর্ণার দিকে।উদ্দেশ্য ছিলো সেখানে গিয়ে গোসল করবো।সে অনুযায়ী কিছুক্ষণ হাঁটার পর ঝর্নার কলধ্বনি শুনতে পেলাম।খুশিতে আমার মন আত্মহারা। প্রায় ১কিলোমিটার যাওয়ার পর দেখলাম পর্যটকদের সুবিধার জন্য একটি ঝর্ণায় যাওয়ার জন্য পাকা সিঁড়ি দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। সেখান দিয়ে নেমে আসার সময় আমাকে একজন বললো ঝর্ণার কাছে না যাওয়া জন্য। কারণ হিসেবে শুনতে পেলাম ঝর্ণার কাছের পাথরগুলো পিচ্ছিল। যার ফলে আজকে নাকি দুইজন ওখান থেকে থেকে পড়ে ১০০ মিটার দূরে পানির সাথে নিচে চলে যায়। পড়ে কিছু লোকজন একসাথে তাদেরকে ধরে উপরে নিয়ে আসে। সেসময় আমার মধ্যে খানিকটা রিক্ততা জমে চোখের কোণে।তারপর গেলাম ঝর্ণার সৌন্দর্য উপভোগ করলাম অল্প দূরে থেকে। তবে পানিতে গোসল করার বাসনা আর পূর্ণ হলোনা। তাই আক্ষেপটা জমা রয়ে গেল।এই ঝর্ণা থেকে আর ২০০ মিটার দূরে আরেকটি ঝর্ণা অবস্থিত।যা কিনা রিছাং ঝর্ণা দুই বা ‘অপু ঝর্ণা’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে।তবে সেখানে যাওয়ার জন্য কিছু লোকজনকে জিজ্ঞেস করলাম। তারা বললো রাস্তা ভালো না।তাই তেমন একটা কেউ যায় না।
তাছাড়া আমরা রিসাং ঝর্ণায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমার প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিলো। তবে ইচ্ছা করলে ঝর্ণার পানিগুলো যেখান দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল। সেখান গোসল করা যেত। সন্ধ্যাবেলা চারদিকে অন্ধকার নেমে এসেছিলো।আলো ছিলো বলতে মোবাইলের ফ্লাট আর পূর্ণিমা চাঁদের আলো। তারপর আমাদের গাইড ফিরার জন্য তড়িঘড়ি শুরু করলো। যার কারণে কিছু ছবি তুলতে চাইছিলাম। তবে ছবিগুলো তেমন ভালো আসেনি।
তবে পরিশেষে এতটুকুই বলবো ঝর্ণা ভ্রমনটা সত্যিই মনোমুগ্ধকর ছিলো।তাছাড়া আমি ঝর্ণা অনেক পছন্দ করি।