মেঘের রাজ্যে একদিন সাজেক ভ্যালি

সৌন্দর্য্যে যে কতটা ভয়ংকর হতে পারে, তা হয়তো কখনো সাজেকে না গেলে বুঝতে পারতাম না?

খাগড়াছড়ি সদর থেকে চান্দের গাড়িতে করে যতটা পথ অগ্রসর হয়েছি। ঠিক ততটাই রোমাঞ্চকর অনুভূতির জন্ম দিয়েছে আমার মনে।আর চান্দের গাড়ি’র ছাদে করে যাওয়া আঁকাবাঁকা পথ আর উঁচু নিচু সর্পিল পথরেখার তালময় ছন্দ সাজেক পৌঁছানোর তৃষ্ণা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এভাবে নতুন এক অনুভূতি নিয়ে দেখতে দেখতে উঠে পড়লাম সতেরো`শ ফিট উঁচু রুইলুই পাড়াতে।

চিরসবুজ পাহাড়ের সাথে যেখানে মেঘেদের রাশি বিস্তৃত আকাশ জুড়ে। সেখান মনে হয়েছে মেঘকে আমি ছুঁতে যায়নি। মেঘগুলো যেন প্রতিমুহূর্তে আমাকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। মনের মধ্যে কোনো এক অজানা সুখ খেলা করে।হ্যালিপ্যাডে বিকেল গড়াতেই নেমে আসে সন্ধ্যা। একদিকে সূর্য অস্ত আর অন্য দিকে পূর্ণিমার চাঁদের আগমন। রক্তাক্ত লাল সূর্য ডুবে গেল আর অপূর্ব সন্ধ্যা নামে সাজেকে কোল ঘিরে। অপরূপ পূর্ণিমার চাঁদের আলোতে বিমোহিত করে আমাকে।

হ্যালিপ্যাড থেকে একটু দূরে কংলাক পাহাড়।কিছুটা পথ অতিক্রম করেই পৌঁছে গেলাম বহুল কাক্ষিত সেই পাহাড়ে কাছে।সেখানে ওঠার জন্য ছোট ছোট বাঁশের কঞ্চি পাওয়া যায়। সেটি দিয়ে সামান্য খাঁড়া পাহাড় উঠতে হয়েছে। এভাবে আমি ওঠে পরলাম একদম কংলাকের চুড়ায়। প্রায় ৩৬০০ ফুট উঁচুতে।তখন নিজেকে একজন সাহসী মানুষ বলেই মনে হচ্ছিল।

সকালের সূর্য উদয়ন চারদিকে শো শো বাতাসের শব্দ। আর তুলোর মতো মেঘেদের উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য। এত সৌন্দর্য সত্যিই দেখা ছাড়া বলে প্রকাশ করা মতো না।তার জন্য অবশ্যই আপনাকে সাজেকে যেতে হবে। উপভোগ করতে হবে নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের মেলবন্ধন।

সূর্য ওঠার পর কর্টেজে ফিরে আসতে হয়েছে। সেখানে সকালের নাস্তা শেষ করি। ব্যাগ গুছিয়ে সাড়ে ১০ টার মধ্যে বেড়িয়ে পড়ি খাগড়াছড়ির অভিমুখে। আসার সময় সাজেকে কাটানো দুর্দান্ত সময়গুলো খুব করে মনে পড়ছিলো।আক্ষেপ ছিলো মনের কোণে আর কিছুটা সময় কাটানোর।তাই খানিকটা সময়ের জন্য হলেও মনের মাঝে বিষন্নতার আঁচ কেটেছে হৃদয়ে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *