মানুষ গুনছে পাঁজর – দেবদাস কুণ্ডু

এক

আমি একটা মানুষ খুঁজছি 

যে মাঝে মাঝে যেত অরন্যে

কথা বলতো পাখিদের সংগে

গায়ে থাকতো একটা সবুজ জামা।

আমি একটা মানুষ খুঁজছি 

যে নদীকে ভালোবেসে তার

বুকে করেছিল সংসার

চেয়ে ছিল নদীর বিস্তার। 

আমি একটা মানুষ খুঁজছি 

যে গিয়ে ছিল পাহাড়ে

তারপর কোনদিন করেনি আপোষ। 

আমি একটা মানুষ খুঁজছি 

যে সকালে উঠে হাতে নিতো

একতাল নরম মাটি

মাখতো সারা অঙ্গে 

বলতো, একদিন

জন্ম নেবে নতুন ভুবন। 

                  দুই

যে দিন প্রথম তুমি হয়ে উঠলে নারী

স্বপ্নেরা ভিড় করলো চোখে, রুপকথার বাড়ি ।

প্রতিটি মেয়ে রক্তের ইতিহাসে হয়ে ওঠে নারী

তখন খুব ইচ্ছে হয় মাথায় পড়ুক বৃষ্টি বারি। 

বুকটা ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে মালভূমি

পুরুষের চোখে অপরুপা তুমি নারী।

তোমাকে নিয়ে যাবো, বলেছিল সুদিন

লুমবিনী নগরে জেগে উঠবে বুদ্ধ যেদিন।

তোমার চোখ থেকে ঝরে পড়ে নক্ষত্র তারা

বলেছিলে সুদিন, অপেক্ষা করো, আসছে যারা।

ভালোবেসে ঘুরবে শহরে, মনে রাখবে তুমি নারী

প্রকাশ্য রাজপথে, অন্ধ গলিতে, ধানখেতে

এখনও কাঁদে অজস্র নগ্ন বালিকা, উলঙ্গ নারী

বিলুপ্ত ট্রামের মতো তোমার অশ্রু কঠিন

সন্ধ্যায় ঝুল বারান্দায়   অপেক্ষা করো

কবে আসবে তোমার প্রিয় সেই সুদিন। 

                  তিন

গুহার ভিতর মেলতে পারে পাখি ডানা

উড়তে পারে না প্রজাপতি 

একদিন তারা সমবেত ভাবে বেরিয়ে এলো

তারপর উড়তে উড়তে চলে গেল সীমান্ত পার

মানুষ কিন্তু গুহার অন্ধকারে 

গুনে চলেছে বুকের অসংখ্য পাঁজর।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *