বেকার – অভিষেক সাহা

” কী রে পিন্টু এগারোটা তো বেজে গেল কাজে যাবি না ?” চায়ের দোকানের টুলে বসে হাঁক ছেড়ে বলল সত্য দা।সত্য দার বয়স প্রায় পঞ্চাশ। অনেকেরই কাকা-জ্যেঠু হওয়ার কথা কিন্তু পাড়ার কমন দাদা হয়ে গেছে।

” সত্য দা অফিস দু’দিনের জন্য বসিয়ে দিয়েছে গো। তারপর ডাকবে বলেছে। বোঝোই তো করোনা চলছে, অফিসের অবস্থা ভালো নয়।”কাঁচুমাচু মুখ করে বলল বছর পঁচিশের পিন্টু।

” তা এই দু’দিন কী করবি!” চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিয়ে বলল সত্য দা।

” কী আর করব বেকার থাকব!” হতাশ গলায় বলল পিন্টু।

” এই হল তোদের দোষ , জীবনে কোনও অ্যাম্বিশন নেই, অ্যাগ্রেসন নেই , কেমন যেন ল্যাদ খাওয়া  ।আরে বাবা আলু বেচ, ডিম নিয়ে বস ,কিছু একটা কর। দু-দুটো দিন নষ্ট করবি। মানুষ যে কী করে কাজ ছাড়া থাকে বুঝিনা বাপু!” একরাশ হতাশা গলায় ঢেলে বলল সত্য দা ।

” সত্যি বলছি সত্য দা তোমার মত এমন করে ভাবতে পারিনা গো। আচ্ছা দাদা তুমি তো চান -খাওয়ার সময়টুকু ছাড়া সারাদিন এই চায়ের দোকানে বসে থাক, তুমি  কাজ ছাড়া সময় কাটাও কী করে ?” অবাক হয়ে জানতে চাইল পিন্টু।

পিন্টুর প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে সত্য দা বলল ” তোদের মত বাঁদরগুলো রোজ ঠিক মত কাজে যাচ্ছে, না বেকার হয়ে বাড়িতে বসে আছে সেদিকে কড়া নজর রাখি। আর শোন রে বেটা আমার বাবা তো একটা তিনতলা বাড়ি বানিয়ে দিয়ে কেটে পড়েছে ‌।আমি মেয়ে-বউ নিয়ে একটা ঘরে কষ্ট করে থেকে বাকি বাড়িতে ভাড়াটে বসিয়ে বাড়িটা রক্ষা করছি । খুবই কঠিন কাজ!”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *