ব্লক অফিসে মাঝে মাঝেই
এক বুড়িমা আসেন ।
কারুর সঙ্গে দেখা হলেই ,
ঝরঝর করে কাদেঁন ।
বলে চলেন তাঁর দুঃখের কথা ,
কেউ নেই তার থাকেন একা ।
সে যে অনেক করুন গাথা ,
বলে তিনি হন একটু হালকা ।
ছোটবেলায় কোন দুঃখ ছিল না ,
অভাব কি তা জানতেন না ।
আদর সোহাগের ঘাটতি ছিল না ,
কোন সাধ অপূর্ণ ছিল না ।
তেরো বছর বয়সে হয়েছিল বিয়ে ,
বছর ঘুরতেই বিধবা হল ।
তিনি আর করেননি বিয়ে ,
বাড়ীর সবাই বলেছিল ।
সেই থেকেই বাপের বাড়ীতে থাকেন ,
বাবা , মা , ভাইদের সাথে ।
কিছুদিন পর বাবা মারা গেলেন ,
থেকে গেলেন মায়ের সাথে ।
ভাইদের যেই না বিয়ে হল ,
তারা সবাই আলাদা হল ।
মা , মেয়ের দুঃখের জীবন শুরু হল ,
নিদারুন কষ্টে দিন কাটল ।
এখন বয়স বেড়ে গেছে বেশ ,
কাজ কিছু তো করতে পারেন না ।
ব্লকে আসতেও কষ্ট হয় বেশ ,
না এসেও থাকতে পারেন না ।
এমন অনেকে পায় বার্ধক্য ভাতা ,
তাঁদের না হলেও চলে যায় ।
আমাদের হয় না বার্ধক্য ভাতা ,
আমার সংসার চলাই দায় ।
মাসে একবার আসি অফিসে ,
যদি কোন উপায় হয় ।
সহানুভূতি পাই অফিসে ,
কিন্তু বার্ধক্য ভাতা নাহি হয় ।
থাকলে পান একশ কুড়ি টাকা ,
না থাকলে কিছুই নাই ।
মাসে একবারই মিলে টাকা ,
দুবার এলে মিলবে নাই ।
এমন হাজার হাজার বুড়িমা আছেন ,
গ্রাম শহরের আনাচে কানাচে থাকেন ।
তাঁরা উপযুক্ত হয়েও কোন ভাতা না পান ,
খুবই অসহায় তাঁরা এভাবেই দিন কাটান ।
নিজেদের খুব অসহায় লাগে ,
এমন আইন কানুন আছে ।
ইচ্ছে থাকলেও নেই কোন উপায় ,
পদে পদে বাধা আছে ।
এমন মানুষের পাশে থাকাটা ,
ভীষণ রকম দরকারি ।
আসুন সবার থাক চেষ্টাটা ,
যেন তাদের পাশে থাকতে পারি ।