বুড়িমা : প্রশান্ত দাস

ব্লক অফিসে মাঝে মাঝেই 

এক বুড়িমা আসেন ।

কারুর সঙ্গে দেখা হলেই ,

ঝরঝর করে কাদেঁন ।

বলে চলেন তাঁর দুঃখের কথা ,

কেউ নেই তার থাকেন একা ।

সে যে অনেক করুন গাথা ,

বলে তিনি হন একটু হালকা ।

ছোটবেলায় কোন দুঃখ ছিল না ,

অভাব কি তা জানতেন না ।

আদর সোহাগের ঘাটতি ছিল না ,

কোন সাধ অপূর্ণ ছিল না ।

তেরো বছর বয়সে হয়েছিল বিয়ে ,

বছর ঘুরতেই বিধবা হল ।

তিনি আর করেননি বিয়ে ,

বাড়ীর সবাই বলেছিল ।

সেই থেকেই বাপের বাড়ীতে থাকেন ,

বাবা , মা , ভাইদের সাথে ।

কিছুদিন পর বাবা মারা গেলেন ,

থেকে গেলেন মায়ের সাথে ।

ভাইদের যেই না বিয়ে হল ,

তারা সবাই আলাদা হল ।

মা , মেয়ের দুঃখের জীবন শুরু হল ,

নিদারুন কষ্টে দিন কাটল ।

এখন বয়স বেড়ে গেছে বেশ ,

কাজ কিছু তো করতে পারেন না ।

ব্লকে আসতেও কষ্ট হয় বেশ ,

না এসেও থাকতে পারেন না ।

এমন অনেকে পায় বার্ধক্য ভাতা ,

তাঁদের না হলেও চলে যায় ।

আমাদের হয় না বার্ধক্য ভাতা ,

আমার সংসার চলাই দায় ।

মাসে একবার আসি অফিসে ,

যদি কোন উপায় হয় ।

সহানুভূতি পাই অফিসে ,

কিন্তু বার্ধক্য ভাতা নাহি হয় ।

থাকলে পান একশ কুড়ি টাকা ,

না থাকলে কিছুই নাই ।

মাসে একবারই মিলে টাকা ,

দুবার এলে মিলবে নাই ।

এমন হাজার হাজার বুড়িমা আছেন ,

গ্রাম শহরের আনাচে কানাচে থাকেন ।

তাঁরা উপযুক্ত হয়েও কোন ভাতা না পান ,

খুবই অসহায় তাঁরা এভাবেই দিন কাটান ।

নিজেদের খুব অসহায় লাগে ,

এমন আইন কানুন আছে ।

ইচ্ছে থাকলেও নেই কোন উপায় ,

পদে পদে বাধা আছে ।

এমন মানুষের পাশে থাকাটা ,

ভীষণ রকম দরকারি ।

আসুন সবার থাক চেষ্টাটা ,

যেন তাদের পাশে থাকতে পারি ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *