সূর্য ঢলে পড়েছে। সন্ধ্যা হয় হয়। চারিদিকে এক অদ্ভুত মায়াবী আলো। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে প্রেমিকার মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে কত কী ভাবছেন প্রেমিক। বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার এর চেয়ে ভাল সময় আর কী হতে পারে!
তাই তিনি বলেও ফেললেন তাঁর মনের কথা। প্রেমিকের প্রস্তাবে প্রেমিকা এতটাই আত্মহারা হয়ে গেলেন যে, সাড়া দেওয়ার আগেই ঘটে গেল এক মারাত্মক দুর্ঘটনা। অসতর্ক মুহূর্তে ওপর থেকে নীচে পড়ে গেলেন তিনি।
চোখের সামনে প্রেমিকাকে ও ভাবে পড়ে যেতে দেখে প্রেমিকও লাফ দিলেন সঙ্গে সঙ্গে।
৫০ মিটার হাওয়ায় ভাসার পরে প্রেমিককে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলতে দেখা যায় ফালকার্ট পর্বতের কিনার ঘেঁষা এক পাথরের খাঁজে।
ঝুলন্ত অবস্থায় ২৭ বছরের সেই প্রেমিককে উদ্ধার করার জন্য সেখানে হাজির হয় একটি হেলিকপ্টার। হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাঁর শিরদাঁড়ায় হালকা চির ধরেছে বটে। তবে তা খুব একটা গুরুতর চোট নয়।
কিন্তু যাঁর জন্য তিনি উপর থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন, অস্ট্রিয়ার ৩২ বছরের সেই প্রেমিকা পড় তো পড় ধপাস করে গিয়ে পড়েছেন একদম ২০০ মিটার নীচে।
শেষ পর্যন্ত ওই তরুণীকে উদ্ধার করেন এক যাত্রী। বরফের মধ্যে তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। তাড়াতাড়ি অ্যালার্ম বাজিয়ে তিনি পুলিশকে ডাকেন। তাতে সাড়া দিয়ে এক পুলিশ অফিসার এসে তাঁকে বরফের ভিতর থেকে উদ্ধার করেন।
কিন্তু যেখানে তিনি পড়েছিলেন, সেখানে যেহেতু বরফের পুরু আস্তরণ ছিল তাই তাঁর কোনও আঘাতই লাগেনি।
উদ্ধারকারী পুলিশ অফিসার হাঁ হয়ে গিয়েছেন দু’জনের এমন আশ্চর্য পরিত্রাণ দেখে। তাঁর কথায়, দু’জনের কপালই খুব ভাল। একটু এদিক ওদিক হলেই কিন্তু একেবারে কেলেঙ্কারী কাণ্ড ঘটে যেত।
তবে শেষ ভাল যার, সব ভাল তার। এমন বিপত্তি থেকে উদ্ধার পেয়ে নতুন জীবন শুরু করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন ওই প্রেমিক-প্রেমিকা। সেই সঙ্গে তাঁদের উপরি পাওনা হয়েছে— ছেলেমেয়ে কিংবা নাতি-নাতনিদের বলার মতো এক রোমাঞ্চকর গল্প।