বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

আজ মহান বিজয় দিবস। বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীতে স্বমহিমায় স্বগৌরবে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আজকের এই দিনে প্রথম বিজয় অর্জন করেছিল বাঙালি জাতি ও আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি সোনার বাংলা। বিজয়ের ৫০ পেরিয়ে ৫১তম দিবসে জাতি তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে কতটুকু এগিয়ে গেল, সচেতন নাগরিক হিসাবে প্রত্যেকের এই বিষয়গুলি ভাবা আবশ্যক। পাশাপাশি দেশ ও জাতির সামগ্রিক উন্নয়নের পথে বাধাসমূহ চিহ্নিত করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারলে বাঙালি জাতি তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে এক ধাপ এগিয়ে যাবে।

বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাক-সরকার ক্ষমতা হস্তান্তরে তালবাহানা শুরু করলে বাঙালি জাতি বীরদর্পে স্বাধীনতার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। ১৯০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে ১৯৪৭ সালে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ভারতবর্ষ বিভক্ত হলেও দুইটি আলাদা প্রদেশ নিয়ে পাকিস্তান গঠন করা যৌক্তিক ছিল না। যার ফলশ্রুতিতেই পাকিস্তান সরকারের অধীনে দীর্ঘ ২৪ বছর শাসন আর শোষণের দুর্দশার মধ্যে কেটেছে বাঙালি জাতির।

অবশেষে জাতিকে মুক্ত করতে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। বাঙালির মুক্তির সনদ খ্যাত এই ভাষণের পরই বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাক হানাদার বাহিনীর গণহত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। সেই থেকে ২৬৬ দিনের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বীর বাঙালির ঐক্য আর সাহসিকতায় ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন সার্বভৌম এই পুন্যভূমির সূচনা হয়।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে আজ দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উন্নীত। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশনেত্রী শেখ হাসিনার দুর্বার নের্তৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নশীল থেকে উন্নতির সোপানে ধাবিত হচ্ছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ২০২১ সালে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে, ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়নের দেশে আর ১৯৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ অকল্পনীয় অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। ইতোমধ্যে নিজস্ব বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন হল, দৃশ্যমান হল পদ্মা সেতুর মত দীর্ঘ সেতু, উদ্বোধন হল স্বপ্নের মেট্টোরেল, নির্মাণ কার্য চলছে কর্ণফুলি টানেল, রূপপুর পারমাবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অসংখ্য উল্লেখযোগ্য স্থাপনার।

এতদসত্বেও জাতি কি পেরেছে তার সেই প্রত্যাশিত লক্ষ্যে আরোহণ করতে? আমরা যদি তার উত্তর খুজি, তাহলে উত্তর আসবে – ‘না। উদাহরণস্বরূপঃ আমরা মালেশিয়াকে মডেল ধরতে পারি। সর্বক্ষেত্রে উন্নতি করে কিভাবে এগিয়ে গেছে মালেশিয়া, তা সবার জন্য অনুপ্রেরণা। আমরাও উন্নত হয়েছি, তবে আমাদের অগণিত উন্নতির পাশাপাশি অজস্র সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে বেকারত্ব, বেড়েছে মুদ্রা স্ফীতি, বেড়েছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। শিক্ষার হার পাশের হারের ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেলেও গুণগত মানের চরম অবণতি ঘটেছে।

তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে সর্বক্ষেত্রেই আমূল পরিবর্তন এসেছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা-সংস্কৃতি, চিকিৎসা, খেলাধুলায় উন্নতির ছোঁয়া লক্ষ্যণীয়। স্বাধীনতা পরবর্তী মাথাপিছু আয় ১১০ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি আজ তা প্রায় ২৪০০ মার্কিন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। জাতি হিসেবে আমরা অনেক পথ অতিক্রম করেছি। তবে অশনি সংকেতও রয়েছে এসবের অন্তরালে। অর্থ পাচার, কালোবাজারি বেড়েছে বহুগুণে। মাথাপিছু বৈদেশিক লোনের বোঝাও বেড়েছে। এটা প্রশমিত পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায়, জাতি সূর্য হারাতে পারে আপন গন্তব্যের।

আজ উচ্চশিক্ষার দ্বার খুলেছে ব্যাপকভাবে, মাত্র ছয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বর্তমানে প্রায় অর্ধশত বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে শিক্ষার মান দিন দিন নিচে নেমেই যাছে। মানসম্মত শিক্ষা এবং শিক্ষার পরিবেশ কোথাও নেই। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অধীনে প্রতিটি উপজেলায় অনার্স চালু করা মোটেই সমীচিন হয়নি। জেলায় জেলায় বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা না করে প্রতিষ্ঠিত বিশ^বিদ্যালয়গুলোর মান বাড়াতে থ্রিডি মানসম্মত কার্যক্রম হাতে নেওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজন রাজনীতিমুক্ত ও গবেষণা নির্ভর ক্যাম্পাস। যেখানে গবেষণায় মনোনিবেশ করবে অধ্যাপকগণ, তাতে সহযোগী হবে প্রতিটি শিক্ষার্থী। উচ্চতর ডিগ্রিধারী প্রার্থী কিংবা নিজস্ব বিষয় সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের অধিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাসম্পন্ন প্রার্থীকে সরাসরি ন্যূনতম সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রদান এবং বিশেষ বেতন-ভাতার আওতায় এনে গবেষণামুখী শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। ছাত্র সংসদের মাধ্যমে ছাত্র নেতৃত্ব গড়ে তুলে ভবিষ্যতের জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হওয়ার পথ সুগম করতে হবে।

স্বাধীনতার পর স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে গড়ে তিনটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি কলেজ ও একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকারিকরণ করা হয়েছে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে সরকারি মাধ্যমিক দ্যিালয় এবং এক বা একাধিক সরকারি কলেজ রয়েছে। তবে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করার প্রয়োজন ছিল। প্রয়োজন ছিল ন্যূনতম বিশ শতাংশ স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা সরকারিকরণ রাখা। যেখানে সারাদেশে মাত্র তিনটি সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা রয়েছে। এটা মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো সকল প্রতিষ্ঠান একত্রে জাতীয়করণ করা যাবে না। প্রতিবছর বাছাই করে একটি নির্দিষ্ট শতাংশ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ করা প্রয়োজন ছিল। প্রতিষ্ঠাকাল, শিক্ষার্থী সংখ্যা, ভৌগলিক অবস্থান ও ফলাফলের অতীত ইতিহাস বিবেচনা করে সুবর্ণ জয়ন্তীতে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয়করণ করলে বিজয়ের সাফল্য আরও বেশি সার্থক হতো। সার্থক হতো শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোয় নিয়ে মেধাবীদেরকে শিক্ষকতায় অনুপ্রাণিত করার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারলে।

আমাদের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশই তরুণ, যাদের মধ্যে বেকারত্ব বৃদ্ধি আর কারিগরি প্রশিক্ষণের অভাবে হতাশা বেড়েছে সীমাহীন। সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি দেশকে করে দিয়েছে সর্বশান্ত। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষাক্ষেত্র, চিকিৎসাক্ষেত্র, কৃষিক্ষেত্রে দুর্নীতি আজ চরমে। গণতন্ত্র দিয়ে প্রতিষ্ঠিত দেশে আজ গণতন্ত্র ভূলুন্ঠিত, নাই মত প্রকাশের স্বাধীনতা, এমনকি গণতন্ত্র চর্চার মুক্ত পরিবেশ। সর্বত্র চলছে অপশাসন আর স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারিতা। এসব অনাসৃষ্টিকে রুখে দিতে হবে। অন্যথায় জাতির অগ্রগতি মুখ থুবড়ে পড়বে।

প্রতিদিনই কোন না কোন ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। চুরি, ডাকাতি কমলেও বেড়েছে ছিনতাই, রাহাজানি, চাঁদাবাজি, গুম, খুন, ধর্ষণের মত এহেন কোন কর্ম নাই যা প্রতিনিয়ত ঘটছে না। বেড়েছে নেশা, মদ, জুয়া, ইয়াবা সেবন ও ব্যবসার মত রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকান্ড। যার উদাহরণ সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ক্যাসিনো ব্যবসা, মাদক ব্যবসা। করোকালের অতি সাম্প্রতিক জাল রিপোর্ট প্রদান, দলীয় সন্ত্রাসের অধীনে ত্রাণলুট, স্বেচ্ছাচারিতা, গণধর্ষনের মতো ঘৃণ্য কর্মকান্ড। যদিও সরকার এসবের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে এবং নির্মূলে পদক্ষেপ নিচ্ছে। সরকাররে পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয়-আন্তর্জাতিক সংস্থা সজাগ দৃষ্টির ভূমিকায় অবতীর্ণ।

শিক্ষাক্ষেত্রে তরুণ তরুণীদের মধ্যে সঠিক জ্ঞানচর্চার পরিবর্তে নেশাগ্রস্থতা আর অনৈতিকতা বেশি লক্ষ্যণীয়। তাছাড়া শিক্ষাক্ষেত্রে চরম দুর্নীতির মূলে রয়েছে শিক্ষায় দলীয়করণ বা ঘুষের মাধ্যমে যোগ্যদের পরিবর্তে অযোগ্যদের অনুপ্রবেশ ঘটানো। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, এমনকি উচ্চতর পাবলিক পরীক্ষায় দুর্নীতি ও নকল করার প্রবণতা চরম। অন্যদিকে প্রাইভেট ভাবে গড়ে ওঠা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে নামসর্বস্ব শিক্ষায় ডিগ্রি ও সার্টিফিকেট বিক্রি করে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যবসাক্ষেত্র বানিয়ে ফেলা হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি নিজেও চরম অসন্তোষ প্রকাশ করছেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষ সেদিকে এখনো কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে একদিকে অযাচিত টেস্ট আর মেডিসিন দিয়ে মানুষকে সর্বশান্ত করা হচ্ছে, অন্যদিকে হাসপাতাল নির্মাণ আর যন্ত্রপাতি ক্রয় এ চরম দুর্নীতি লক্ষ্যণীয়। ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রেরই চিকিৎসা আশু প্রয়োজন। সম্প্রতি করোনাকালে স্বাস্থ্যখাতের ভংগুর দশা, অব্যবস্থাপনা এবং অনিয়ন্ত্রিত দুর্নীতির হালচাল এজাতি অবলোকন করেছে। স্বাস্থ্যখাত ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অব্যবস্থাপনা আমলে নিয়ে নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্য়কর পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে মানুষ ও প্রাণিসম্পদকে সুরক্ষা দিতে হবে।

তথ্য প্রযুক্তিতে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক, তবে উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা এক্ষেত্রে অনেক পিছে। দেশে ইতোমধ্যে ৫জি নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে। তবে দেশজুড়ে ৩জি নেটওয়ার্ক এখনো পূর্ণতা পায়নি। সরকারি টেলিযোগাযোগ মাধ্যম এখনো দুর্বল অবকাঠামোয় অবরুদ্ধ রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে আইসিটি নৈতিকতা মানা হয় না, আর তরুণ-তরুণীরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যহারের চাইতে অপব্যবহারই বেশী করছে। ফলে যুব সম্প্রদায় ধ্বংসের মুখে নিপতিত হতে চলেছে দিন দিন। সরকারের উচিত হবে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে সঠিক আইন বাস্তবায়ন আর বিপুল এই জনগোষ্ঠীকে কারিগরি ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের সঠিক প্রশিক্ষণের সুব্যবস্থা করে জনসম্পদে রূপান্তর করা।

আজ আমরা বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীতে পৌঁছেছি। আমরাই পারব আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে। তবে আমাদেরকে মানবিক হতে হবে, উদার ও মহৎ জাতির পরিচয় দিত হবে। দুর্নীতির করালগ্রাস থেকে জাতিকে বাঁচাতে হবে। প্রতিটি সেক্টরে যোগ্য ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আনতে হবে, তাঁদেরকে সম্মানের আসনে আসীন করে যথাযথ মর্যাদা দিতে হরে। রাজনৈতিক অঙ্গনকে পরিশীলিত করতে হবে বহুগুণে। বাঙালির রাজনীতির প্রাণ-পুরুষ শেরে-বাংলা এ.কে ফজলুল হক থেকে শুরু করে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে লালন করতে হবে হৃদয়ে, কথা ও কর্মে। তবেই পাবে উন্নত শিক্ষা, চিকিৎসা আর বাসস্থানের পরিবেশ। দেশ হবে স্বনির্ভর আর শান্তির পূন্যভূমি স্বপ্নের সোনার বাংলা।

লেখকঃ তরিকুল ইসলাম মাসুম
শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যিলয়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *