সকাল ঠিক সাড়ে দশটায় গড়িয়াহাট মোড়ে ট্যাক্সি থেকে নামল নিশা। মৌ আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল। দেখা হয়ে গেল।
” এত সকালে কল করলি। আর্জেন্ট কিছু?” জানতে চাইল নিশা।
” আর্জেন্ট তো নিশ্চয়ই। একজনের বাড়িতে যাব তোকে সাথে নিয়ে ।তার বাড়িতে নাকি দারুন বনসাই কালেকশন আছে। পছন্দ হলে নেব।” মৌ জানাল।
নিশা আর মৌ কলেজ ফ্রেন্ড। পাস করার পর নিশা এখন জব করছে আর মৌ বিয়ে করে সংসারী হয়েছে।
” তোর বর জানে তুই এখানে যাচ্ছিস !” মৌ এর বিএমডব্লিউ-তে উঠে জিজ্ঞেস করল নিশা।মৌ-ই ড্রাইভ করছে।
“আমার বর খুব ভালো রে। আমাকে ফ্রিডম দিয়ে রেখেছে। ও এক্সপোর্টের বিজনেস করে । আরও কত কিছু করে আমি ঠিক জানিও না । খুব ব্যস্ত। এত ছোট বিষয়ে ওর ইন্টারেস্ট নেই।” মিউজিক সিস্টেম অন করে মৌ বলল।
“তাহলে বল, তুই এখন হ্যাপিলি ম্যারেড। তা হঠাৎ বনসাই কেনার পোকা মাথায় কী করে ঢুকল !” নিশা মজা করে বলল।
” জানিস তো নিশা আমার লাইফে না এখন সব কিছু আছে, কোন কিছুর অভাব নেই রে । আমার বর কুবেরের তুতোভাইয়ের মত ধনী। আমারও টাকার অভাব রাখেনি। মারকাটারি ফ্রিডম আমায় দিয়েছে , শুধু….” গলা ধরে এল মৌয়ের।
” কী হল বল!” বাকি কথা না শুনতে পারার অস্থিরতা নিয়ে বলল নিশা।
সঙ্গে থাকা জলের বোতল থেকে জল গলায় ঢেলে, কিছুটা সামলে নিয়ে মৌ বলল ” শুধু আমার জন্য ওর একদম সময় নেই। আমরা শুধু একই ছাদের তলায় থাকি ,ব্যস। আমার অবস্থা এখন বনসাইয়ের মত। জীবনের অনেক কামনা-বাসনাকে গলা কেটে মেরে হ্যাপি কাপলের অভিনয় করছি। তাই তো বনসাই কিনতে যাচ্ছি, ওদের সাথে গল্প করব।ওরাই, হ্যাঁ রে ওরাই আমার দুঃখ বুঝবে।”