ফর্মূলা – অভিষেক সাহা

অফিসে যাওয়ার জন্য বাসস্টপে এসে দাঁড়াতেই জিতুর দেখা হয়ে গেল নিতাই দার সঙ্গে। 

” নিতাই দা একটা কথা  বলবে ,এই তিপ্পান্ন বছর বয়সে তুমি এত স্লিম কী করে! দেখোনা আমার সবে একত্রিশ ,এখনই কেমন মোটা হয়ে গেছি!” বেশ আক্ষেপ করে বলল জিতু ।

বাস আসার দিকে নজর রেখেই নিতাই দা বলল ” প্রতিদিন তোকে কম করে দু’শো ক্যালোরি বার্ন করতে হবে বুঝলি  , তবে গিয়ে আমার মত চেহারা পাবি।” নিতাই দা-র শরীর দিয়ে গর্ব চুঁইয়ে নামতে থাকল।

” তা কী করলে দু’শো ক্যালোরি বার্ন হবে ?” অবাক হয়ে জানতে চাইল জিতু।

” সে অনেক খাটনি , তুই পারবি না ।” নিতাই দা জিতুর উপর ভরসা না রেখে বলল।

” বলেই দেখ না পারি কী না।” দৃঢ় গলায় বলল জিতু।

“উফ্ তবে শোন, পঁয়তাল্লিশ মিনিট নাগাড়ে  হাঁটতে হবে বা আঠারো মিনিট টানা  ছুটতে হবে কিংবা একত্রিশ মিনিট যোগা করতে হবে ।” জিতুর চাপাচাপিতে নিতাই দা বলল ।

” বাবা ,এ তো বেশ কঠিন, আমি মনে হয় পারব না। তা নিতাই দি তুমি কোন ফর্মূলাটা ইউজ  কর?” জিতু অবাক হয়ে জানতে চাইল।

” আমি এসবের কিছুই করি না। যা করার তোর বৌদি করে ।” নিতাই দা বলল ।

” কী করে গো বৌদি !” নিষিদ্ধ বিষয়ের গন্ধ নাকে এসে লাগল  জিতুর ।

বাসস্টপের আশপাশটা ভালো করে দেখে নিল নিতাই দা, পরিচিত কেউ আছে কিনা , তারপর বলল ” বিয়ের পর থেকে আজ পর্যন্ত এই বিশ বছরে  রোজ তোর বৌদি  আমার সঙ্গে কারণে- অকারণে কম করে পাঁচ মিনিট ঝগড়া করবেই।ব্যস্ , তাতেই  আমার শরীরে এমন আগুন লাগে যে  সব ক্যালোরি জ্বলে পুড়ে ছাই  হয়ে যায়!”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *