” মহারাজ মস্তিষ্ক, আমি কী কোনও দিন কাজে ফাঁকি দিয়েছি,হাফ ছুটিও চেয়েছি, বেড়াতে যাব বলেছি , তবে আমার উপর এত অত্যাচার, এত অবিচার কেনও ? আপনি এর বিচার করুন। বিচার করুন মহারাজ !” কথাগুলো বলেই মস্তিষ্ক মহারাজের সামনে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলল কান। তার দু’চোখ দিয়ে টাইগ্রিস- ইউফ্রেটিস বইতে শুরু করল।
” আহা, কী হল আবার! কান্নাকাটি আমার একদম পছন্দ নয়। কান্না থামিয়ে কী হয়েছে, কী তোমার দাবি খুলে বল। বিচার পাবে।” কানকে আশ্বস্ত করে মস্তিষ্ক বলল।
” সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত আমার উপর যে অত্যাচার হচ্ছে, আমাকে যে পরিমাণ হুমকি শুনতে হচ্ছে , মহারাজ, মানব শরীরের আর কোনও অঙ্গকে তা শুনতে হয় না । অথচ ওদের মত আমিও তো আপনার একান্ত অনুগত সৈনিক ।” কান বিনীতভাবে বলল।
” সে তো বুঝলাম। কিন্তু কী অন্যায় হয়েছে সেটা বলবে তো!” মস্তিষ্ক জানতে চাইল।
” মহারাজ, মানুষ যেদিন চশমা আবিস্কার করল, তার ডাটি জোড়া আমার উপর চাপিয়ে দিল। দুষ্টু করল চোখ, শাস্তি পেলাম আমি! এছাড়া একটা কানে চারটে দুল পড়ার কষ্ট তো বহু আগে থেকেই ছিল। নতুন যুগে ইয়ার ফোন এল, শব্দকে আমার মধ্যে গুঁতিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য।আর করোনা নিয়ে এল মাস্ক। তাছাড়া কানমলা, কান ধরে ওঠবস, কানের গোড়ায় চড় মারার হুমকি তো এখন গা-সওয়া হয়ে গেছে ! এবার বলুন মহারাজ আমার উপর এত অত্যাচার কেনও ? আমি বিচার চাই।” কান তার মন উজাড় করে বলল।
মহারাজ মস্তিষ্ক সব শুনল।কানকে কাছে ডেকে নিল। তারপর কানকে বলল ” দেখ কান তোমার দাবি ঠিক। কিন্তু মানুষ এমন এক প্রাণী যারা ফ্রি-তে পাওয়া কোনও কিছুর গুরুত্ব বোঝে না। তাই তো ওরা নির্বিচারে গাছ কাটে, অবলা পশু-পাখিদের হত্যা করে।আর কোনও কিছুর প্রতিকার পেতে হলে নিজেকে সবার আগে শক্ত হতে হয়, রুখে দাঁড়াতে হয়।”