সবার ব্যথা বুঝি আমি ,
কে বোঝে বা মোর মনের ব্যথা।
চোখের জল চোখে শুকায়ে যায়,
কেউ মুছিতে পারে না।
আমি ছাড়া তোমাদের সংসার,
অসম্পূর্ণ হতে পারো না পূর্ণ।
তবুও আমি তোমাদের কাছে,
অবহেলিত লাঞ্ছিত এক নারী।
এই নারীর নাড়ি কেটেই ,
জন্ম নেয় এক নূতন জীবন।
আগামীতে দিয়েছি বহু প্রতিভাবান ,
ভবিষ্যতে দেব গুণীজন।
মাতৃ গর্ভে জানতে পারলে নারী,
নীরবে করে দাও বিদায়।
অনাকাঙিক্ষত আমি জন্মালে,
স্থানটি যে মোর ডাস্টবিন।
উপবাস রেখে পূজার ডালি সাজায় ,
আপনজনের নামে।
সবার জন্য চাইতে গিয়ে,
নিজের জন্য চাওয়া হয় না কিছু।
মৃত কে জীবন দিয়েছে ,
এমন দৃষ্টান্ত কোথাও নেই।
বেহুলা সতীত্বের বলে স্বামী অস্থি থেকে ,
প্রান বাঁচিয়েছিল।
আমার জন্য যতখানি,
কষ্ট করেছে মোর পিতা- মাতা।
পুরুষ তোমার জন্য ততখানি,
কষ্ট করে তোমার পিতা মাতা।
তবু আমার উপর স্বনির্ভর,
হতে পারে না মোর পিতা-মাতা।
কতখানি অভাগী আমি ,
হতে পারিনা শেষ জীবনের অবলম্বন ।
পারিনা হতে আমি ,
তাদের হাতের শক্ত লাঠি ।
বধূর সাজে সজ্জিত করিতে,
নিঃস্বার্থে সর্বস্ব লুটিয়ে দেয়।
পিতৃগৃহ ত্যাগের সময়,
ময়ের আঁচলেএক মুষ্টি চাল।
এত দিনের ঋণ,
সব শোধ করিলাম।
সময়ে আমাকেই হতে হয়েছে,
সবার জন্য পরিবর্তনশীল।
কন্যা কখনো স্ত্রী আবার মা,
বদলেছি রূপ বহুবার।
বিনা পারিশ্রমিকের কর্মি ,
তাই বোধহয় মূল্যহীন।
সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম,
ক্লান্ত হই নাই।
কর্ম থেকে ফিরলে পুরুষ,
হাসি মুখে তব সেবায় রত হই।
পুরুষ তোমার কামের শিকার হলে,
আমি কেন হই লজ্জিত।
ভুলেছো দ্রৌপদী কে লজ্জিত করে,
কুরুবংশ হয়েছে ধংশ।
সমাজ হচ্ছে আগের থেকে সচেতন,
শিক্ষিতের হার বাড়ছে ।
বদলাছেনা কেনো আমাদের প্রতি ,
তোমাদের দৃষ্টি ভঙ্গি।
কেন এখনও আমাকে হতে হচ্ছে ,
লিঙ্গভেদের শিকার।
বন্দিদশা আর না খুলছে বেড়ি,
হচ্ছে বাহির বসছে উচ্চপদে।
আমার জন্য পাতা ফাঁদে ,
একদিন তুমি নিজেই হবে বন্দী।