তুমি নারী, তুমি আগুন – দেবদাস কুণ্ডু

এক

সমুদ্র চলে গেছে কোন দূর দেশে

গাছের পাতারা উড়তে উড়তে চলে

গেছে সীমান্ত পারাপার

সূর্য এখন আদিম গুহায়  নিচ্ছে বিশ্রাম

যত ফুল দিতো সুগন্ধ, তারা এখন লকডাউনে

করোনা ভূমিতে বিপন্ন অসহায় অজুর্ন তুমি ।

                     দুই 

কতো স্বপ্ন ঝড়ে পড়েছে

তোমার প্রিয় বারান্দায় 

কতো না বলা কথা উড়িয়ে নিয়ে গেছে মেঘ

যতো শব্দ ছবি এঁকেছিলাম গুহার

দেওয়ালে, সান্ধ্য ভাষায়

মুগ্ধ চোখে দেখেছে বিদ্যাপতি চন্ডিদাস।

                    তিন

আজ তোমাকে দেবো দুস্প্রাপ্য কিছু 

চে গুয়েভারার ডায়েরি

আরব গেরিলাদের যুদ্ধের ইতিহাস 

কালো মানুষদের মুক্তির লড়াই

বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনর আলেখ্য

আর নিজের যতো বিষ

উগরে দিয়ে, দেব তোমায় অমৃত।

                    চার

তুমি যতো দূরে যাবে

থাকবে হৃদয়ের কাছে

যত কাছে থাকবে তুমি

নিভে যাবে নিলয়ের জোনাকি।

                পাঁচ

মানুষ যখন ছোঁয় হৃদয়

তখন সে এক পর্বত 

যখন ছোঁয় বুকের পাঁজর

সব খেয়ে নেয় মহাকাশের নক্ষত্ররা।

                ছয়

কখনো দিও না কাউকে দু:খ

দু:খেরা পাখি হয়ে উড়ে যায় দূরে

নীল আকাশের, নীল সাগরের পারে

তুমি তখন রৌদ্রের নীচে নির্বান্ধব একক জীবন।

                    সাত

কিছু মানুষ ছোটে স্বপ্নের পিছনে

কিছু মানুষ স্বপ্ন দেখে রাতের অন্ধকারে

কিছু মানুষ বোঝে না, স্বপ্ন কি?

তারা শুধু দুবেলা খেতে চায়

হাতের কাছে যখন যা পায়। 

                   আট

ভাঙন শুরু হয়েছে নদীতটে

তোমার শরীরে, শুকনো রক্ত মাংসে

ঝড়া বিবর্ন পাতা, আমি অচল পুরানো মুদ্রা

আমাদের যাত্রা, এবার হবো ফসিল।

                  নয় 

কাউকে যদি ভালোবাসো 

আগলে রেখো প্রিয় খেলনার মতো

নদী ভাঙন মুছে দেয় জনবসতির চিহ্ন 

কাউকে যদি ভালোবাসো 

শিকড় এর মতো আঁকড়ে ধরো

ঝড় কিন্তু উড়িয়ে নেয় বনভূমি

কাউকে যদি ভালোবাসো 

জাপটে ধরো জীবন। 

               দশ

তুমি নারী, তুমি আগুনের কারবারী

যেভাবে পুড়েছে আমার পূর্ব পুরুষ 

এখন যেভাবে পুড়ছি আমি

পুড়বে আমার উওর পুরুষ 

তুমি নারী, তুমি আগুনের কারবারী ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *