তুঁষ তুঁষলীর ব্রত , পাটাই ষষ্ঠির ব্রতও ইতু // সুদীপ ঘোষাল

পৌষ মাসে যে মহিলারা এই ব্রত পালন করেন, কথিত আছে, তাঁর পিতৃকুল ও শ্বশুরকুলের কল্যাণ সাধিত হয়।
নতুন ধানের তুঁষ আর গোবর দিয়ে অগ্রহায়ণ মাসের সংক্রান্তিতে বড় বড় চারটে নাড়ু পাকানো হয়। সর্ষে ফুল আর নাড়ু ধরে পুজো করা হয়।
১লা পৌষ থেকে প্রতিদিন ছোটো নাড়ু চারটে করে সংক্রান্তির আগের দিন অবধি পূজা করা হয়।
মকর সংক্রান্তির দিন ছ’ কুড়ি ছ’গন্ডা অর্থাৎ ১৪৪টি ক্ষীরের নাড়ু আর পরমান্ন তৈরি করে খেতে হয়। খাবার সময় সেঁজুতির দূর্বা ও তুঁষ তুঁষলীর নাড়ুগুলি একটি মালসা বা হাঁড়ির ভিতর রেখে তাতে আগুন দিতে হয়। পিছন দিকে রেখে খাওয়া শেষ হলে ভাসান মন্ত্র পড়ে জলে ভাসিয়ে দিয়ে আঁচিয়ে ঘরে ঢুকতে হয়।
এইভাবে চার বছর পালন করার পর ব্রত উদ্ যাপন করা হয়। সরষে ফুল ওমূলা ফুল দিয়ে মন্ত্র বলা হয়
তুঁষ তুঁষুলী কাঁধে ছাতি
বাপ মার ধন যাচাযাচি
স্বামীর ধন নিজ পতি
পুত্রের ধনে বাঁধা হাতি
ঘর কোরবো নগরে
মরবো গিয়ে সাগরে
জন্মাব উত্তম কুলীন
বামুনের ঘরে।
পৌষ মাসভর পূজা করতে হয়। সংক্রান্তির দিন যে চারটি নাড়ু বেশি থাকবে তা নিয়ে ফুল দূর্বাসহ পুজো করে লক্ষীর হাঁড়িতে তুলে রাখা হয়।
ক্ষীরের নাড়ু খেতে খেতে মন্ত্র পড়া হয়
তুঁষ তুঁষুল সুখে ভাসালি আখা জ্বলন্তি পাখা চলন্তি
চন্দন কাঠে রন্ধন করে খাবার আগে তুঁষ পোড়ে
খরকের আগে ভোজন করে
প্রাণ সুখেতে নতুন বসতে
কাল কাটাব আমি জন্ম এয়োতে।
চার বছর পর ব্রত উদ্ যাপন করতে হয়।
পৌষমাসের শুক্লাপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে এই ব্রত পালন করা হয়। এর ফলে পুত্র কন্যার অকাল মৃত্যু রোধ হয় বলে বিশ্বাস নারীমহলে।
গল্পকথা নিম্নরূপ।
নন্দীগ্রামে এক নারীর বৌমা ও ছেলে ছিলো। তার নাতিপুতি ছিলো না।
বৌমা খুব পেটুক। সে ঠাকুরের নৈবেদ্যের থালা থেকে কলাটা,সন্দেশটা নিয়ে খেয়ে নিত।
ফলে    তার কোনো ছেলেপিলে হতো না।
মহিলা এক সাধুর পরামর্শে পাটাই ষষ্ঠীর ব্রত পালন করতে লাগলেন।
বাড়ির উঠোনে পুকুর কেটে বেণা ডালের পাটাই পুঁতে নৈবেদ্যের রেকাবি সাজিয়ে পুরুতকে দিয়ে পুজো করালেন।
বউএর নৈবেদ্য দেখে জিভে জল   এলো।মহিলার শঙ্খধ্বনিতে তার চেতনা ফিরলো।
মহিলা বৌমাকে বললেন, পাটাই দেবীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বর প্রার্থনা করো।
বৌমা তাই করলেন। এক বছর পরে তিনি গর্ভবতী হলেন। সংসারে ঘর আলো করে নাতনি এলো। মহিলা সুখে সংসার করতে লাগলেন।
চলিত আছে যে এই ব্রত করলে মৃতবৎসা প্রসূতির সন্তান হয় ও জীবিত থাকে।
কুমারী, সধবা,পুত্রবতী ও বিধবা সকলেই এই ব্রত পালন করতে পারেন।অষ্টচাল,অষ্টদূর্বা কলসপাত্রে ধুয়ে, শোন  সবে ইতুর কথা ভক্তিযুক্ত হয়ে।
এই ব্রত কার্তিক মাসের সংক্রান্তিতে আরম্ভ করতে হয় এবং অগ্রহায়ণ মাসের সংক্রান্তির দিন পুজো শেষ করে সেইদিন ইতুরসাধ দিয়ে সকলে প্রসাদ পায়।সন্দে, মন্ডা,মিঠাই ও সাধ্যমত ফলমূল দিয়ে নৈবেদ্যের রেকাবি সাজাতে হয়। পুজো হওয়ার পরে সকলে প্রসাদ পায়।
মা গোঠষষ্ঠী ব্রত ও অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীতে করতে হয়। ঘটে বটের ডাল,দধি,তৈল,হলুদবাটা, ফল,ফুল সবই দিতে হয়।পিঠুলির গোঠ গঠন করে দিয়ে বাঁশের পাতায় বারো মাসে তেরো  ষাট দিতে হয়। রালদুর্গা ব্রত যে নারী করেন তার সকল দুঃখের শেষ হয়ে সুখের উদয় হয়।
কুলুই মঙ্গলবার ব্রত এই মাসে পালন করতে হয়। কুলের ডাল পুঁতে ঘটস্থাপন করতে হয়। একটি বড় কুলোতে পিঁটুলির আলপনায় ১৭টি ডিঙি অঙ্কিত করে ১৭টি কুল, ১৭টি কুলপাতা,  জোড়া মূলা,জোড়া কড়াইশুঁটি , ১৭ভাগ নতুন চিঁড়ে,নতুন খইয়ের মুড়কি দিয়ে কুলোয় সাজাতে হয়। আতপ চালের নৈবেদ্য সাজাতে হয় রেকাবিতে ।
এছাড়া ক্ষেত্রব্রত, সেঁজুতিব্রত, নাটাইচন্ডী ব্রত, মুলোষষ্ঠীর ব্রত প্রভৃতি ব্রত আছে যেগুলি এই মাসেই পালন করতে হয়।
নাটাইচন্ডীর ব্রতে রবিবারে মায়ের কাছে বর চাওয়া হয়। ধন সম্পত্তি হারায় না  কোনোদিন এই ব্রত পালন করলে। নাটাই চন্ডীর কাছে প্রার্থনা করতে হয়,মা নাটাই চন্ডী, আমরা যেনো হারানো ধন  খুঁজে পাই।
নানা উপাচারে পূজা করা হয় নাটাই চন্ডীর।
কুমারী, সধবা,পুত্রবতী ও বিধবা সকলেই এই ব্রত পালন করতে পারেন।অষ্টচাল,অষ্টদূর্বা কলসপাত্রে ধুয়ে, শোন  সবে ইতুর কথা ভক্তিযুক্ত হয়ে।
এই ব্রত কার্তিক মাসের সংক্রান্তিতে আরম্ভ করতে হয় এবং অগ্রহায়ণ মাসের সংক্রান্তির দিন পুজো শেষ করে সেইদিন ইতুরসাধ দিয়ে সকলে প্রসাদ পায়।সন্দে, মন্ডা,মিঠাই ও সাধ্যমত ফলমূল দিয়ে নৈবেদ্যের রেকাবি সাজাতে হয়। পুজো হওয়ার পরে সকলে প্রসাদ পায়।
মা গোঠষষ্ঠী ব্রত ও অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীতে করতে হয়। ঘটে বটের ডাল,দধি,তৈল,হলুদবাটা, ফল,ফুল সবই দিতে হয়।পিঠুলির গোঠ গঠন করে দিয়ে বাঁশের পাতায় বারো মাসে তেরো  ষাট দিতে হয়। রালদুর্গা ব্রত যে নারী করেন তার সকল দুঃখের শেষ হয়ে সুখের উদয় হয়।
কুলুই মঙ্গলবার ব্রত এই মাসে পালন করতে হয়। কুলের ডাল পুঁতে ঘটস্থাপন করতে হয়। একটি বড় কুলোতে পিঁটুলির আলপনায় ১৭টি ডিঙি অঙ্কিত করে ১৭টি কুল, ১৭টি কুলপাতা,  জোড়া মূলা,জোড়া কড়াইশুঁটি , ১৭ভাগ নতুন চিঁড়ে,নতুন খইয়ের মুড়কি দিয়ে কুলোয় সাজাতে হয়। আতপ চালের নৈবেদ্য সাজাতে হয় রেকাবিতে ।
এছাড়া ক্ষেত্রব্রত, সেঁজুতিব্রত, নাটাইচন্ডী ব্রত, মুলোষষ্ঠীর ব্রত প্রভৃতি ব্রত আছে যেগুলি এই মাসেই পালন করতে হয়।
নাটাইচন্ডীর ব্রতে রবিবারে মায়ের কাছে বর চাওয়া হয়। ধন সম্পত্তি হারায় না  কোনোদিন এই ব্রত পালন করলে। নাটাই চন্ডীর কাছে প্রার্থনা করতে হয়,মা নাটাই চন্ডী, আমরা যেনো হারানো ধন  খুঁজে পাই।
নানা উপাচারে পূজা করা হয় নাটাই চন্ডীর।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *