ছেঁড়া ঘুড়ি রঙিন বল ।ছেঁড়া ঘুড়ি, রঙিন বল। ।বরাবর মেধাবী ও আত্মকেন্দ্রিক মৃগাঙ্ক বিলাসিতার লালনে বেড়ে ওঠা মায়ের আপত্তি থাকলে ও দাদুর আসকারায় মা হেরে যায় ।আজ তাঁরা কেউ বেঁচে নেই পঁচাওর বছরের মা ছাড়া ।বাবার আটপৌঢ়ে দোতলা বাড়ি ছেড়ে আধুনিক ডিজাইনের পাঁচ তলা একটা বাড়ি বানিয়েছে বাড়ির নাম “মায়ের আশীর্বাদ ” মন্ত্রী দের বানিজ্য বিভাগে উচ্চ পদেই সে কর্ম রত মোটা অঙ্কের পণ নিয়ে বিয়ে ও সেরে ফেলেছে সে কামনা একটি বেসরকারি স্কুল পরিচালনা করে ।অন্যদিনের মতো আজ ও সে অফিস থেকে ফিরছিল ঐ ‘সবলা ‘মেলায় যেখানে হস্তশিল্পের প্রদর্শনী চলছে গোড়া বাজার মোড়ে সেখানে গাড়ি টি থামায় মর্মর বাবুর সঙ্গে পরিকল্পনা টা সেড়ে ফেলতে ঐ ‘মায়ের আশীর্বাদ ‘বাড়িটাকে কিভাবে চারতলা পর্যন্ত শপীংমল বানানো যায় আর কি ।পাশেই লোক জন Accident Accident বলে ছুটে আসছিল মৃগাঙ্কের বড্ড তারা তাছাড়া পাশের হোটেল থেকে ভেঁসে আসা মাংসের গন্ধটা তার খিদেকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল ।বাড়িতে পৌছে যায় মৃগাঙ্ক ।দাড়োয়ান বরাবরের মতো গেট খুলে দেয় খাওয়া সেড়ে বিশ্রাম নিতে নিতে টিভি তে News channel টা চালিয়ে দেয় হঠাৎ চোখ আটকে যায় মৃগাঙ্কের ঐ তো গোড়া বাজার সবলা মেলার পাশে যে accident টা ঘটেছিল সেটি দেখাচ্ছে কিন্তু একি!মৃত মহিলাটি তারই মা ছিল?গত রাতে সে মাকে বলে ছিল তোমার বৌমা কামনা তো বাড়িতেই থাকেনা তুমি বরং একটা হোমে চলে যাও মা সেখানে তোমার সঙ্গীদের সঙ্গে থাক ।তবে কি মা….মায়ের লেখার হাত বা হাতের লেখা কোন টি ভালো ছিলো না তবু টেবিলের ওপর নীল কাগজ টিতে কি লিখেছিল মা তারা তাড়ি কাগজ টি তুলে নেয় মৃগাঙ্ক ওতে লেখা আছে ‘বিষ পান করলে কিছুক্ষনের মধ্যে শরীরের মৃত্যু অবধারিত কিন্তু মনে প্রবেশ করলে মৃত্যু যন্ত্রণা আনে আমি মৃত্যু যন্ত্রণা নিয়ে বাঁচতে চাই না মৃগাঙ্ক মড়ে গিয়ে বেঁচে যেতে চাই তোমাকে ও বাঁচিয়ে গেলাম কি বল।টেবিলে ‘আঁধার কার্ড ‘টি খান খান করে টুকরো করা পাশে ঘুমের ওষুধের শিশি টি যেটি সে তিন দিন আগে মাকে এনে দিয়েছিল সেটি ও শূন্য ।মৃগাঙ্ক তো মাকে চাই নি সে তো এটাই চেয়েছিল তবে আজ কি হল ভেতরের হিংস্র পশুও ম্রিয়মান কেন !হৃদ স্পন্দন ছাড়া শাড়া শরীর যেন গভীর “কোমায়” আচ্ছন্ন যেন মায়ের ডেড বডিটা নিয়ে তার বাড়িতে জনতার ডাকাডাকি তে আচ্ছন্ন দশা কেঁটে যায় ।মৃগাঙ্ক বুঝতে পারে এতদিনের গতিহীন ঘুড়ি ও চাহিদার রঙিন বল যেটিকে সে শৈশব থেকে লালন করেছে অঙ্কুরিত কিশলয় আজ মহিরুহ বৃক্ষ হয়ে তার পতন ঘটালো। সব থেকে ও শূন্যে এনে দাঁড় করিয়ে কপালে উল্কি এঁকে দিয়ে গেল ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *