কবিতার প্রেম, প্রেমের কবিতা – দেবদাস কুণ্ডু

এক

যেদিন হয়ে গেল সব সম্পর্ক মিথ্যে

সেদিন কোর্টের বাইরে এসে তুমি বললে, 

আমারা বিয়ে করেছিলাম ভালোবেসে। 

আমি বলেছি, তুমি কাঁদছো? এটাই তো জীবন! 

তুমি আহতো পাখির ছানার  গলায়

বলেছিলে, কই কাঁদছি? বৃষ্টি নেমেছে তো!

সত্যি সুপর্না, আজ শহর জুরে নেমেছে বৃষ্টি

আমার  কান্না আর বৃষ্টি হয়ে গেছে একাকার।

  দুই

তুমি কি এখনো অভিমান হলে

পাশ ফিরে শোও?

তুমি রেগে গেলে এখনও দিন কাটে উপবাসে?

তুমি দু:খ পেলে এখনও গিয়ে দাঁড়াও

জানালা পথে উদাসিন চোখ রেখে 

সেই দূরের রেল লাইনের দিকে?

এখনও কি আগের মতো অফিস যাও

জামদানি কিংবা ফিরদৌসি শাড়ি পড়ে? 

এখনও কি তোমার ফেরার অপেক্ষায়

দাঁড়িয়ে থাকে আমার জায়গায় কৌনিশ?

তোমার হাত ধরে স্কুল যায় কি কোন শিশু? 

তাহলে ওকে ভালো করে শেখাও যোগ

বিয়োগ বড় অসহ্য,বিয়োগ বড় একা। 

  তিন

সেদিন আকাশে ছিল বড্ড মেঘ

তবু সাহসি যোদ্ধার মতো আমরা গিয়েছিলাম

মোহনায়। বিস্তৃত জলরাশির চুম্বনে। 

তখন মোহনায় নৌকো স্থির, চারপাশ

বৃষ্টিতে কুয়াশার মতো ঝাঁপসা

তুমি রয়েছো ছইয়ের ভিতর গুটিশুটি

আমি তখন টাইটানিক জাহাজের হিরো

নৌকায় মাথায় দাঁড়িয়ে পাখির মতো 

দু হাত মেলে হরপ্পা সভ্যতা থেকে ভিঁজছি

তুমি দমকা বাতাসের মতো এসে পড়লে বুকে

বৃষ্টি তুমি আমি মিলে হয়ে গেছি তখন পৃথিবী। 

   চার

তুমি যেদিন বললে, সংঘমিতা দিয়েছে প্রস্তাব

আপনি কি রাজি? 

আমি ধ্যানমগ্ন  ঋষির মতো চুপচাপ কিছু সময়

তুমি অন্ধকার সিঁড়িতে 

 দাঁড়িয়ে ছিলে শোনার অপেক্ষায়

আমি বলেছিলাম, আলো এলে 

আয়নায় একবার দেখো,। 

 

 পাঁচ

তুমি যেদিন চলে গেলে শিমূল তলার পাহাড়ে

পৃথিবীতে সেদিন প্রলয়ের মতো অন্ধকার। 

তোমাকে যেতে হবে, নতুন চাকরি

আমি সাদা পাতায় বার বার এঁকেছি তোমার মুখ

বৃষ্টিতে ঝাঁপসা হয়েছে আমার চোখ

রক্তে ভেসে গেছে বন্যার মতো আমার হৃদয়

তারপর কেটেছে দীর্ঘ গ্রীষ্মকাল, 

বরফের মতো শীতকাল

ধূষর হেমন্তকাল

বসন্তে এলো চিঠি

চারপাশ সোনা মেখে ঝলমল করছে পৃথিবী।____

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *