কে , খোকা ফিরলি !
ঘুম ভেঙে যায় মাঝরাতে ;
কে যেন দরজায় কড়া নাড়ে !
কে যেন ডেকে ওঠে – মা !
বুকের ভিতরটা চড়াৎ করে ওঠে ;
বলে উঠি –
কে , খোকা ফিরলি !
এখন প্রায় রাতে এঘটনা ঘটে ;
অথচ , কিছুতেই ধরে রাখতে পারিনি
নিজেকে ;
বিছানা ছেড়ে উঠে এসে দরজা খুলি ;
উঠানে নেমে খুঁজে নিতে চাই
খোকার মুখ ;
চারিদিকে গাঢ় অন্ধকার ;
ধ্বংস লীলার প্রতিচ্ছবি ;
গোয়াল ঘরের দিকে চোখ গেলে
একটা চাপ কান্না বেরিয়ে আসে
দুচোখ বেয়ে ;
দুধেল গাইটা দেওয়াল চাপা পড়ে
মরেই গেল ;
তবে , বেঁচে গেছে বাছুরটা ;
খড়ের চাল উড়ে গেছে ;
পলিথিন টাঙিয়ে কোনো রকমে
চার দেয়ালের মধ্যে মাথা গোঁজা ;
ওটুকুও কখন উড়ে যাবে কে জানে !
কে জানে , খোকা কবে ফিরবে !
সেই যে কবে হাঁটা দিয়েছে
বাড়ি ফিরতে ,
এখনও ফিরলো না ;
খোকা এখন কোথায় আছে ,
কি ভাবে আছে ,
কি খাচ্ছে ,
কে জানে !
প্রথম কদিন মোবাইলে যোগাযোগ ছিল ;
এখন সেটুকুও নেই ;
খোকা এখন হাঁটছে তো হাঁটছে ,
হাঁটছে তো হাঁটছে …
আমার খোকা হাঁটছে .…
একের পর এক আতঙ্ক
তাড়া করে চলেছে আমাকে ,
আমাদের ;
তবুও বুক বাঁধি আশায় ;
খোকা আমার বাড়ি ফিরছে ;
খোকা বাড়ি ফিরবে .…
রাতে দুচোখে ঘুম নামলে
কে যেন ডাকে –
মা …
তাই বুকের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে –
কে , খোকা ফিরলি !
খোকা একদিন ফিরবে ;
এ মাটির বাড়িতে দেবে খড়ের চাল ;
খোকা একদিন ফিরবেই ।।