এই সময়ের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পত্রিকা – তৈমুর খান

পূজা পরবর্তী সময়েও বেশকিছু পত্রপত্রিকা সাহিত্যের আঙিনাকে উজ্জ্বল করেছে। কোনো না কোনো দিক দিয়ে পত্রিকাগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে আমাদের কাছে। আজকের নিবেদনে সেইসব বাছাই করা কয়েকটি পত্রিক।

শ্বেতকলম

দীপাবলি সংখ্যা ‘শ্বেতকলম'(১৪২৮) কবিতা, ভৌতিক গল্প, রহস্য গল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, থ্রিলার, কল্পবিজ্ঞান, মুক্তগদ্য ইত্যাদি বহু বিষয় নিয়েই সংখ্যাটি সমৃদ্ধ হয়েছে। যে কোনো শ্রেণির পাঠক এই সংখ্যাটি থেকে তাদের মনের মতো লেখাটি পেতে পারেন। প্রতিটি লেখার সযত্ন উপস্থাপনা বেশ আকৃষ্ট করে। এমনকী নতুন লিখতে আসা হামিদুল ইসলামের কবিতাও ভালো লেগে যায়: ‘অথৈ শূন্যতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে গাছ/ কারুকাজ করা অস্ট্রিক সভ্যতা’। কিংবা সুস্মিতা চক্রবর্তীর কবিতাও: ‘দুর্গা বাড়ি থেকে বেরোতেই/ হাথরাস পৌঁছে যায়।’ যোগাযোগ: সম্পাদক অয়ন ব্যানার্জি, অনুভূতি প্রকাশন, বেনাচিতি, দুর্গাপুর, দূরভাষ:৯৩৮২৬৪৪০৮৩, দাম-১০০ টাকা।

মউল

উৎসব সংখ্যা ‘মউল’ (১৪২৮) এই সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য পত্রিকা। সৈয়দ হাসমত জালাল শঙ্খ ঘোষকে নিয়ে স্মৃতিতর্পণ করেছেন সেইসঙ্গে কবির প্রতিবাদী কবিতার নানা বাঁকগুলি চিহ্নিত করেছেন। ‘ছন্দের সামান্য’ নিয়ে আলোকপাত করেছেন অনিন্দ্য রায়। সতীনাথ ভাদুড়ীর কথাসাহিত্যের অনন্যতা নিয়ে একটি গভীর আলোচনা করেছেন সিক্তা মুৎসুদ্দি। মুনিরা চৌধুরীর অপ্রকাশিত রচনা, মধুছন্দা মিত্রঘোষের অনুবাদ কবিতা ও জয়িতা ভট্টাচার্যের নারীবাদী সাহিত্যে সংঘাত ও প্রণয় নিয়ে ভাবনাগুলিও চমৎকার সংযোজন। অজস্র কবিতা ও গল্প আছে যা খুবই সুনির্বাচিত। ঝরঝরে রুচিশীল পত্রিকাটি বেশ সমীহ জাগায়। যোগাযোগ: সম্পাদক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, পখন্না, বাঁকুড়া-৭২২২০৮, দূরভাষ:৬২৯৭৩১২৭০৩,দাম-১০০ টাকা।

সময়ের আনন্দ

তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সংখ্যা ‘সময়ের আনন্দ'(১৪২৮) এই প্রথম হাতে এসে পৌঁছেছে। বেশ পরিপাটি এবং একটি সংকলন গ্রন্থ বলেই মনে হয়েছে। ভাঙনকালে দাঁড়িয়ে চোখে চোখ রেখে অসংগতি এবং অন্তরায়গুলিকে মেলাতেও চেয়েছেন। শুধু গতানুগতিক গল্প-কবিতা নয়, গ্রাম বাংলার অজানা অচেনা প্রতিভার অনুসন্ধানও করেছেন। যেমন উপন্যাস লিখিয়েছেন আবদুস সালামকে দিয়ে। ভ্রমণ কাহিনি লিখিয়েছেন সৌরভ চাকীকে দিয়ে। নাটক লিখিয়েছেন সোমনাথ দে, নলিনীরঞ্জন মণ্ডল, সুস্মেলি দত্তকে দিয়ে। এছাড়া আছে অসংখ্য কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধও। প্রচ্ছদসহ প্রতিটি পৃষ্ঠা বেশ মনোরম। যোগাযোগ: সম্পাদক চিরনজিৎ সরকার, চক্রবর্তী অ্যান্ড সন্স পাবলিকেশন, বারুইপুর, পুরাতন থানা, দূরভাষ: ৭০০১৫৯৫৪৩৫, দাম-২২০ টাকা।

এক পশলা বৃষ্টি

দশম বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা ‘এক পশলা বৃষ্টি'(২০২১-২২) ভিন্ন প্রকৃতির একটি পত্রিকা। স্মরণে-শ্রদ্ধায় বেশকিছু সাহিত্যিক-কবির মূল্যায়ন ব্যতিক্রমী প্রয়াস। এঁদের মধ্যে আছেন: জগন্নাথ বিশ্বাস, সুবোধকুমার চক্রবর্তী, সমীর চক্রবর্তী, দেবেশ রায় প্যারীমোহন, বিমল ভট্টাচার্য, অরুণেশ ঘোষ, বেণু দত্তরায়, নিত্য মালাকার, সুনীল পাল, জ্যোৎস্নেন্দু চক্রবর্তী, পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত, শিপ্রা ধর সেন, অশোক বসু, তনুময় সরকার প্রমুখ। এঁদের মূল্যায়ন করেছেন এই সময়ের উল্লেখযোগ্য কবি-সাহিত্যিক, গবেষক ও অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা। ব্যক্তিগত গদ্য বিভাগটিও খুব আকর্ষণীয়। এতে লিখেছেন দেবজ্যোতি রায়, শুভময় সরকার, সুবীর সরকার, মনোনীত চক্রবর্তী, সুমন গোস্বামী প্রমুখ। গল্প এবং কবিতাতেও ভিন্নধারার ছবিটি বজায় আছে। শৌভিক দে সরকার ও শুভঙ্কর পালের অনুবাদ কবিতাগুলিও চমৎকার। যোগাযোগ: সম্পাদক অম্বরীশ ঘোষ, দেবীনগর, আলিপুরদুয়ার-৭৩৬১২১, দূরভাষ : ৯৮৩২৪২০৭০৬, দাম-১০০ টাকা।

কচিপাতা

বিজয়া সংখ্যা ‘কচিপাতা'(১৪২৮) বিজ্ঞাপনহীন আগাগোড়া স্মার্ট ঝকঝকে একটা পত্রিকা । প্রতিটি কবিতার পৃষ্ঠাতেই স্কেচ-অলংকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। প্রবন্ধ লিখেছেন: সমুদ্র বসু, অসিত দাস,সৌভিক রাজ, শুদ্ধশীল ঘোষ, কৌশিক চন্দ, শাশ্বতী মণ্ডল, কৌশিক চক্রবর্তী, শুভশ্রী দত্ত, বিষ্ণু চক্রবর্তী, আশুতোষ ঘোষাল, মিঠুন মুখার্জি, বটকৃষ্ণ হালদার, শৌণক ঠাকুর, দীপ মান্না, পার্থসারথি চক্রবর্তী, নির্মলেন্দু কুণ্ডু, তুষার রায় প্রমুখ। এছাড়াও গল্প, গুচ্ছ কবিতা, কবিতা, ছোট উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনি, গ্রন্থ আলোচনা প্রভৃতি। একটা ভালো লাগার উপলব্ধি পাঠককে ঘিরে থাকে সর্বদা।

যোগাযোগ :সম্পাদক দীপাঞ্জন দাস, পানাগড় বাজার,পশ্চিম বর্ধমান, দূরভাষ:৯৬৩২৬৭২৬৯৭, দাম-১৬৫ টাকা।

শব্দযাপন

হেমন্ত সংখ্যা ‘শব্দযাপন'(১৪২৮) মূলত কবিতা কেন্দ্রিক একটি ছোট পত্রিকা। প্রতিটি পৃষ্ঠায় সযত্ন নিষ্ঠার ছাপ স্পষ্ট। উল্লেখযোগ্য কবিরা হলেন: গোলাম রসুল, রবীন বসু, জয়দীপ লাহিড়ী, শ্যামশ্রী রায় কর্মকার, দিলীপ মাশ্চরক, রণজিৎ মাইতি, উদয়ন চক্রবর্তী, শ্যামাপ্রসাদ সরকার, দেবাশিস ঘোষ, সুচরিতা চক্রবর্তী, অমিত মজুমদার, অলক্তিকা চক্রবর্তী, সোমনাথ মুখার্জী, ঈশিতা পাল, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সুজিত রেজ, হামিদুল ইসলাম, দীপক বেরা, আশুতোষ বিশ্বাস, কাজল মৈত্র,শাশ্বতী ভট্টাচার্য, স্বাগতা রায়, গোবিন্দ মোদক আরও অনেকেই। মামনি দত্তের উচ্চারণে ধরা পড়ে এই সময়ের আত্মযাপন: “স্তব্ধতা নিয়েই দিন পার হয়/ সন্ধ্যার উজ্জ্বল অন্ধকার নিয়ে বসে আছি/ আমৃত্যুকাল।” বৈদ্যনাথ ধাড়ার আত্মদর্শন ভালো লাগে: “আমাদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে বিষণ্ন বিকেল।” যোগাযোগ: সম্পাদক অনির্বাণ ঘোষ, ২/এ,আচার্য গোস্বামী লেন, নেদিয়ার পাড়া, কৃষ্ণনগর, নদীয়া-৭৪১১০১, চলভাষ:৯৭৩৪৫৪৩০৪৮, দাম-৭৫ টাকা।

শব্দপিয়াসী

আত্মপ্রকাশ সংখ্যা ‘শব্দপিয়াসী'(২০২১) খুব মনোহর একটি পত্রিকা। সুন্দর প্রচ্ছদ ও পরিবেশনা ভালো লাগল। কবিতা, অণুগল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধও সুনির্বাচিত।সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে :”একটা বড় বৃক্ষ পেতে হলে প্রথমে প্রয়োজন হয় বীজ পোঁতার।” এই সংখ্যাটিই সেই বীজ। সম্পাদক নিজের কবিতাতেই লিখেছেন:”তবুও আগুন!/বুকের মধ্যে অদম্য এক জেদ” পত্রিকা প্রকাশ যে এক জেদই তা বলাই বাহুল্য। সংখ্যাটিতে অনেক ভালো ভালো লেখা আছে। পাঠকদেরও ভালো লাগবে। যোগাযোগ: সম্পাদক আমিনা তাবাসসুম, সোনারপুর, কলকাতা, চলভাষ:৯০৬৪৮০৭৮৭১, দাম উল্লেখ নেই।

স্বপ্নের ভেলা

দ্বিতীয় বছর দ্বিতীয় সংখ্যা ‘স্বপ্নের ভেলা'(২০২১) হাতে এসে পৌঁছেছে। সুদূর মুর্শিদাবাদের অরঙ্গাবাদ থেকে প্রকাশিত হলেও পত্রিকাটিকে যথাসম্ভব নিষ্ঠার সঙ্গে লালন করার ছাপ আছে। গ্রামবাংলার বহু লেখক-কবি এই সংখ্যায় লিখেছেন। প্রবন্ধ-নিবন্ধ, অণুগল্প, কবিতা সব বিষয়ই উপস্থিত। ভালো লাগে লোকসংস্কৃতির আলোকে আঞ্চলিক ইতিহাসের বিবরণগুলি। ভারত-বাংলাদেশের ১২৭ জন কবি সাহিত্যিক এই সংখ্যায় কলম ধরেছেন। সম্পাদক মোঃ ইজাজ আহামেদ লিখেছেন: “তুমি যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ো/ তাকিয়ে দেখো মহাকাশের দিকে”।

পত্রিকাটি সেই মহাকাশই হয়ে উঠেছে। যোগাযোগ:সম্পাদক মোঃ ইজাজ আহামেদ, অরঙ্গাবাদ, সুতি-২,মুর্শিদাবাদ, চলভাষ:৮১০১৭৪০৩৪৫, দাম-৭০ টাকা।

প্রয়াস এই সময়

তৃতীয় বর্ষের দীপাবলী সংখ্যা ‘প্রয়াস এই সময়'(১৪২৮) স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি পত্রিকা।শতাধিক কবির কবিতা ও গদ্য এবং গল্প নিয়ে সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়েছে। ঝরঝরে রুচিপূর্ণ প্রতিটি লেখাই আকৃষ্ট করে। উল্লেখযোগ্য লেখকেরা হলেন :সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, শ্রীজাত, সুবোধ সরকার, পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, কৃষ্ণা বসু, ভবানীপ্রসাদ মজুমদার, আরণ্যক বসু, অসীম চট্টরাজ, অরুণ চক্রবর্তী, জয়দীপ চক্রবর্তী, সঞ্জয় কর্মকার, অজিত বাইরী, চুমকি চট্টোপাধ্যায়, রাজা ভট্টাচার্য, শ্যামাচরণ কর্মকার, কমলেশ কুমার, ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় এবং আরও অনেকেই। নতুন কবিদের কবিতাও চুম্বকের টানে। যেমন প্রিয়দর্শিনী মিত্র যখন লেখেন :”নিত্য আমার পথচলা অনিত্যের এই সংসারে”, কিংবা পাপিয়া সাধু খাঁ যখন লেখেন : “একলা পথে আকাশ রেখে দিও” তখনও আপ্লুত হই। এরকমই অসংখ্য লেখা পত্রিকাটির প্রতিটি পৃষ্ঠা জুড়ে। যোগাযোগ:সম্পাদক পিনাকী গাঙ্গুলী, উত্তর মৌড়ী, খটির বাজার, আন্দুল-মৌড়ী, হাওড়া-৭১১৩০২,চলভাষ : ৮৭৭৭৩৭০৩৮৯,দাম-১০০ টাকা।

১০

গানের কথা

শারদ সংখ্যা ‘গানের কথা'(১৪২৮) বৈচিত্র্যময়তায় ভরপুর একটা পত্রিকা। অসাধারণ প্রচ্ছদসহ প্রায় দেড় শতাধিক লেখা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। গান, কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, গ্রন্থ আলোচনা, ছোটগল্প, রম্যগল্প, মুক্তগদ্য, ছড়া সাহিত্যের বহুমুখী সৃষ্টিসম্ভারে পরিপূর্ণ একটি সংখ্যা। সব রকম পাঠকেরই মনের খোরাক পাওয়া যাবে এখানে। পত্রিকার পাতা উলটে গানের পংক্তিগুলি মনে গুন গুন করে উঠবে : “আয় গো তোরা দেখবি যদি প্রেমের লীলা বৃন্দাবনে… ” পত্রিকাটি যে সাহিত্যেরও লীলাভূমি তা না বললেও চলে। যোগাযোগ : সম্পাদক আহামাদুল্লা, ব্রহ্মত্তর, ছোট সুজাপুর, মালদহ-৭৩২২০৬,চলভাষ :৮৬৭০৭৩৭০১১, দাম-৭০ টাকা।

১১

দৌড়

৩৭ বছরের তরুণ কবিদের মৃগয়া ভূমি শারদ সংখ্যা দৌড়(১৪২৮) সংখ্যাটি বেশ নতুনত্বে ভরপুর। সুতপা নন্দীর প্রচ্ছদেই আকৃষ্ট হই। লেখাগুলিও সুনির্বাচিত। গতবছরের শারদ সংখ্যা তথা জীবনসঙ্গী সংখ্যা ‘দৌড়’ এর দীর্ঘ পাঠ প্রতিক্রিয়া লিখেছেন বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক চিত্তরঞ্জন হীরা। কবিদের দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে এক সুগভীর আলোকপাত উঠে এসেছে। মধুমঙ্গল বিশ্বাসের ‘নিরুচ্চার মেঘ’এর আলোকপাতে বিশ্বজিৎ কর্মকার কাব্যদর্শনের এক নতুন দিগন্তের সন্ধান দিয়েছেন। বহু তরুণ কবি এই সংখ্যায় কবিতা লিখেছেন। দেবাশিস সাহার মগ্ন উচ্চারণ ‘রাত হলেই/ মাঠের ধারে ভাত খেতে আসে নদী’; পার্বতী রায়ের ‘স্মৃতির সরীসৃপ ঢেউগুলি/ মায়া নদীর অদ্ভুত বাঁকে/ হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত’; অমল শুভ্র ভট্টাচার্যের ‘শ্মশানের প্রসন্নতায় শুয়ে আছে/ বিষণ্ণ অপরাহ্ন’ মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। উৎপল কুমার মণ্ডল, গোবিন্দ তালুকদার, চন্দন ঘোষ, সৌরভ দেবনাথ, সৌগত মুখোপাধ্যায় প্রমুখ লেখকের অণুগল্পগুলি দুর্দান্ত। বাংলাদেশের একগুচ্ছ কবির কবিতা এবং সমীরণ কুণ্ডুর গদ্য এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। যোগাযোগ: সম্পাদক মধুমঙ্গল বিশ্বাস, মিলনপল্লি, হৃদয়পুর, কলকাতা-৭০০১২৭,চলভাষ :৭৫৯৫০৬০৯৭৭, দাম:১০০ টাকা।

storyandarticle

পত্রিকা

#তৈমুর_খান

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *