কিশোর গল্প পত্রিকার সহ সম্পাদক জয়ন্ত ভট্টাচার্য ও সহকারী সম্পাদনা সচিব হৈমন্তী দি অনেক অভিযান করেছেন কুসংস্কারের বিরুদ্ধে । এখনও কত জায়গায় এই কুসংস্কার মানুষের বিপদ ডেকে আনে তার ইয়ত্তা নেই ।
জয়ন্ত দা বললেন, তবু আমরা চিরকাল এই ভ্রান্ত ধারণা দূরে সরিয়ে এক নতুন পৃথিবী গড়বো আগামী প্রজন্মের শিশুদের জন্য।
হৈমন্তী দি বললেন, একটা ফোন এসে ছিলো সকাল আটটার সময় ।
কোনো খবর আছে নাকি, বললেন জয়ন্ত দা ।
হৈমন্তী দি বললেন, একটু মরুভূমির পাশে যেতে হবে ।
এখন কিন্তু দাদা ও দিদি বাংলার মাটিতে নেই । তারা চলে এসেছেন রাজস্থানের থর মরুভূমির কাছাকাছি একটা অজানা পাড়া গ্রামে ।
এখানে লোকজন অনেকে অজ্ঞতার কারণে ভয় পায় ,ভূত বিশ্বাস করে । ভাষা ,পোষাক সব আলাদা হলেও অন্তরের আবেগের ঐক্য থেকে গেছে ।
ওরা কিছুদিন ধরেই মরুভূমির বালির উপর দশ বারোটি অদ্ভুত প্রাণী দেখেছে । তাদের মারতে গেলেই গোল পাথরের মতো হয়ে যাচ্ছে। তারপর পাথরের মতো হয়ে লাফাতে শুরু করছে ।
এতে অনেকে আঘাত পেয়েছে। ওদের মুখিয়া বলেছে , এ নাকি ভয়ংকর বিপদের সংকেত ।তারপর মুখিয়ার বিধান মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে । সবাই শীতকালীন রাতে জলে ভিজে তার নির্দেশে হত্যে দিয়ে পড়ে আছে গাছতলায় ।
একদিন দাদা ও দিদি গিয়ে ওদের অনেক বোঝালো । কিন্তু চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী । ওদের বুঝিয়ে কোনো কাজ হলো না ।
শেষে জয়ন্ত দা বললেন , এবার অই প্রাণী টি দেখলেই আমাদের খবর দেবে । কিন্তু সহজে ওদের দেখা যায় না ।
এরই মধ্যে ওনারা রাজস্থানের অনেক জায়গা ঘুরে দেখে নিলেন ।
হৈমন্তী দি বললেন, দাদা সত্যজিৎ রায়ের সোনার কেল্লা মনে আছে।
দাদা বললেন, এই সেই জয়সলমীর । দেখো কি সুন্দর অই ময়ুরটা ।
ঘোরাঘুরির মাঝে হঠাৎ সেই গ্রাম থেকে মুখিয়া মানে অঞ্চল প্রধানের ফোন ।
হ্যাঁ বলুন, আমি জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলছি । কথাবার্তা হিন্দি ভাষা য় হচ্ছে।
আরে মুশাই,কুছ দিন কে লিয়ে আপলোগ চলা আইয়ে । আবার অই শয়তান টা হামাদের ইখানে আসছে । চার রোজ পর পর আয়া হ্যায় ।
মুখিয়াজি বাংলা বলছে, দাদা জানালেন ।
তারপর বললেন মুখিয়াজিকে, ঠিক আছে আমরা কাল যাবো ।
তারপর আরও অনেক জায়গা ঘুরে ওনারা চলে গেলেন মুখিয়ার গ্রামে র কাছাকাছি বাসায় । সকাল আটটার পর শুরু হবে অভিযান ।
পরের দিন আট টা বাজার আগেই একদল লোক চলে এলো বাসায় । চলিয়ে আভি আয়া হ্যায় ওহি জানোবার । ওরা বললো ।
সঙ্গে সঙ্গে দাদা ও দিদি তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়লেন ।
ওখানে গিয়ে দেখলেন, ওদের বর্ণনা র সঙ্গে মিল আছে । এক বিচিত্র প্রাণী । ঘুরে ঘুরে বালি খুঁড়ছে ।আর বালির তলার পোকা মাকড় খাচ্ছে । দাদা ধরতে গেলেন আর প্রাণী টি গোলাকার হয়ে গেলো ।
আর এদিকে হৈমন্তী দি একটা প্রাণী হাতে তুলে নিয়েছেন । জয়ন্ত দা ও তুলে নিয়েছেন । এরা সবাই অবাক । গোলাকার প্রাণী টি দুই হাতে ধরে জয়ন্ত দা বললেন, এই প্রাণী টির নাম আর্মাডিলো । এরা খুব নিরীহ প্রাণী ।
হৈমন্তী দি বললেন, আর্মা কথার অর্থ হলো বর্ম । এটা স্প্যানিশ ভাষা । যখন আত্মারক্ষার প্রয়োজন হয় তখন এরা গুটিয়ে গোল হয়ে যায় এবং বর্মধারী হয়ে যায় ।
জয়ন্ত দা বললেন, জায়েন্ট আর্মাডিলো বা অতিকায় আর্মাডিলোর দেহের মাঝখানে নয়টি শক্ত বন্ধনী থাকে। তাদের দেখলে অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে ।
হৈমন্তী দি বললেন, এই পৃথিবীর সমস্ত কথা জানা অসম্ভব । তবু আপনারা যদি কুসংস্কার দূর করে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেন তাহলে এই পৃথিবীর মঙ্গল হবে ।
সকলে দাদা ও দিদিকে নমস্কার জানিয়ে চলে গেলো ।
জয়ন্ত দা আর্মাডিলো দুটো অনেক দূরে একটা কাঁটা ঝোপের পাশে রেখে এলেন ।