আমি ভয় পাই
––
সুমিত মোদক
মানুষ যখন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পায় ,
তখন প্রেতভূমি জাগে ;
জাগে রাতচরা পাখি , নৈঃশব্দ্য …
মানুষ যখন মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলে ,
তখন দাউ দাউ করে জ্বলে শ্মশানের চিতা কাঠ ;
প্রেত গুলো নাচে ;
সকাল থেকে সন্ধ্যা , সন্ধ্যা থেকে রাত ,
সব সময়ের জন্য একটা ভয় তাড়া করে বেড়ায় ,
মানুষটা বাড়ি ফিরবে তো !
মা , তুলসী তলায় জল ঢালে , শান্তির জল ,
শুদ্ধির জল …
লাজুক বউ আগলে রাখে কোলের শিশুটিকে ;
ঘুঘু পাখি উঠানে নামে ;
শ্মশানের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটিও
একবার থমকে দাঁড়ায় ,
মেপে নেয় অন্ধকারের গভীরতা ;
তার পর নিজস্ব চলার পথে …
সে নদীর বুকে থেকে যখন উঠে আসে মাঝি-মল্লারের ভাটিয়ালি গান ;
আমি তখন শ্মশান জাগাই ;
জাগে বোধ …
রুক্ষ মাটির বুকে ভরে যায় রাঙা পলাশ ;
বেজে ওঠে মাদলের বোল ;
আর বাতাসে বাতাসে মহুয়া ফুলের ঘ্রাণ ;
আমি আকন্ঠ মহুল পিয়ে তন্ত্র সাধনা করি ;
ঝুলিতে ধরে রাখি প্রেত ;
কোনটাই আমার পূর্বজ নয় ;
অথচ , অতিপরিচিত ;
ওরাও এখন পুনর্জন্ম চায় ;
চারপাশের মানুষ গুলো কেমন যেনো বদলে নিলো আত্মা ;
শরীর থেকে আত্মা গুলো বেরিয়ে পড়ছে ;
তারা ভেবেই পাচ্ছে না কোথায় গিয়ে বাসা বাঁধবে !
প্রেতাত্মায় ! পরমাত্মার ! নাকি আগের শরীরে !
সে কারণে , মানুষ এখন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পায় ;
আর আমি ভয় পাই আমার আমিত্বকে ;
তাই , বসন্ত উৎসবে আবিরে রাঙিয়ে দিতে পারি তোমাকে ।।
সুমিত মোদক