দরজা খুলেই চমকে গেল বর্ষা। দরজার ওপারে দাঁড়িয়ে সুমিত, ওর স্বামী , হাতে চার-চারটে বাজার ভর্তি ব্যাগ। ব্যাগগুলো সুমিতের হাত থেকে নিয়ে রান্নাঘরে চলে গেল ও।
“এই জন্য আমি তোমাকে বাজারে পাঠাই না। লিস্ট করে দিলাম, কোনও লাভ হল না, সেই উল্টোপাল্টা জিনিস ব্যাগ ভরে নিয়ে এলে!” ব্যাগগুলো রান্নাঘরে রেখে এসে রাগে গজগজ করতে করতে বর্ষা ডাইনিং রুমের সোফায় বসা সুমিতকে বলল ।
” উল্টোপাল্টা কেনও হবে , কিছু সবজিই তো বেশি এনেছি, ফ্রিজে রেখে দিও, চার- পাঁচ দিন চলে যাবে।” সোফায় আয়েস করে বসে সুমিত বলল।
” লোক তো আমরা মোটে দু’জন , এত ঢেঁড়স, গাজর ,থোড় কবে খাব? নিশ্চয়ই ওই বুড়ো সবজিওয়ালাটা তোমায় এগুলো গছিয়েছে! ” গলা চড়িয়ে বর্ষা বলল।
” গছাবে কেনও ! আমিই এনেছি।বুড়ো বলল আজ ওর একটুও বিক্রি হয়নি, তাই একটু বেশি করে নিয়ে নিলাম।”সুমিত উত্তর দিল।
“বুড়োর বিক্রি হয়নি তো তুমি কী করবে? ওঁর যদি টাকার দরকার থাকে তুমি ওঁকে এমনিতেই দিয়ে দিতে, অহেতুক একগাদা সবজি এনে ফ্রিজ ভরানোর দরকার কী ছিল !” বর্ষা জানতে চাইল।
আয়েস করে বসে থাকা সুমিত সোজা হয়ে বসল, বর্ষাকে পাশে বসিয়ে বলল ” দেখো মানুষটার পঁয়ষট্টির উপর বয়স, শরীর চলে না, তবু কারো থেকে চেয়ে বা ভিক্ষা করে খায় না , নিজের পরিশ্রমে খায়।আমি জানি হয়ত কিছু জিনিস আমি অহেতুক কিনেছি কিন্তু ওই বুড়ো মানুষটাকে ওঁর শ্রমের প্রাপ্য সম্মানের সাথে সাহায্য করার এ ছাড়া আমার কাছে অন্য কোনও পথ ছিল না ।”