ভাদোরে
05, 09, 2018
বুধবার
নতূন দিল্লী
© অঞ্জলি দেনন্দী, মম
রান্না ঘরের উনুনশাল।
মাটির দেওয়াল।
টালির চাল।
গামলা ভরা তাল।
ভাজা হচ্ছে গরম তেলের কড়ায়,
ফুলুরী, গোল, গোল…..
ফুলো, ফুলো, টোলমাটোল।
দেওয়ালে, উনুনের কাছে,
আছে,
অনেক ঘুলঘুলি।
বাতাস সেখান দিয়ে সুবাস ছড়ায়।
মন ভরায়।
খায় বাঙালী, মন খুলি,
মুখ খুলি।
ভাদোরে, এ তো, চাই!
যত পাই,
তত খাই!
হোয়াই?
এর কোনোই উত্তর নাই।
এ হ্যায় দিল কে লিয়ে।
খেয়ে, ভোরে যায়, হিয়ে।
মুখর নিশি ভালোবাসি
09, 10, 2018
© অঞ্জলি দেনন্দী, মম
আঁধার বড়ই বিজি!
জোনাকী জ্বলে
শাখে শাখে।
ফুল, কুঁড়ি, পাতার ফাঁকে ফাঁকে…
খোলা গগণতলে।
গাঁয়ের বাঁকে বাঁকে।
ঝিঁঝিঁ ডাকে,
ঝিঁ… ঝিঁ….. ঝিঁ……..
ওদের পেয়ারের নিশি;
ওরা কাকে কাকে যে ডাকে,
তা জানে কে কে কে? ? ? …..
চাঁদ তো তাকিয়েই থাকে! …..
সবাই সবায়ের সঙ্গে
করে মেশামিশি।
নিশি মুখরতাকে মাখে,
সারা অঙ্গে।
তাকে, মনে, হৃদয়েও রাখে!
চঞ্চলতা আসে,
জোয়ারের জলে,
জোছনার বলে।
চাঁদ মধুর হাঁসি হাঁসে
জলের তলে।
প্রতিবিম্ব ভিজি ভিজি,
ভালোবাসে।
টেস্টি ব্যাঙের চপ
27, 09, 2018
© অঞ্জলি দেনন্দী, মম
লাফায় ব্যাঙ হপ হপ হপ…..
ধরে নিয়ে খপাখপ,
বানলো ব্যাঙের টেস্টি চপ।
চায়না খায় টপাটপ।
সত্যি কৈছি, দিচ্ছি নি গো ঢপ।
খাবে নাকি?
চায়না যাবে নাকি?
খেয়ে দেয়ে এমন ঢেঁকুর তুলো,
ঠিক যেন ক্যাঁ কোঁ ডাক হয়, ওগুলো!
হাঃ হাঃ হাঃ! ব্যাঙ, গোলাফুলো।
এখন চপ, মচমচে ওগুলো।
আমার তবে খেতে মন চায় না।
কিন্তু যাবো চায়না।
যাস যদি, আয় না!
দুপুরে, ডোবার ধারে……….
© অঞ্জলি দেনন্দী, মম……
গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুর। /
চাতকের করুন সুর /
আমি বসে, /
বাঁশ তলায়। /
মাঝে মাঝে, জল ঢালছি, শুষ্ক গলায়। /
পাশে রাখা আছে, /
জল ভরা, কাঁসারের ঘটিটি, বেশ বড়! /
এ জায়গাটি, নিকোনো আছে, /
গোবর গোলায়। /
পাশে মন্দির, শীতলা মাতার, /
মা, জাগ্রত, বড়! /
তার কাছে, /
ডোবা, আছে। /
বাচ্চাগুলো তার, /
জল ঘোলায়। /
আমি রোজই বসি, এসে, /
এই ডোবার ধারে। /
ডোবার পাড়ে, /
কত কত, /
পাখি যত, /
নাম তাদের, ছাতার /
না কি তাতার। /
ঠিক জানি না! /
তবে, এ জানি, ওদের বড়, তৃষ্ণা! /
হ্যাঁ, তৃষ্ণায়, যে ওদের ছাতি ফেটে যায়! /
তাই, ওরা জল খায়, /
ডোবায় এসে। /
পায়রাগুলো তো আবার, নেয়েও নেয়,/
জলে, নেমে এসে! /
ডোবার জল, সবারেই শীতল করে দেয়। /
কত কত, /
বাঁশপাতা, শুষ্ক যত, /
ঝরে ঝরে, পরে, /
আমার মাথার ‘পরে। /
আমি বসে, বসে, /
খেঁজুর পাতা দিয়ে, /
চ্যাটা বুনি। /
কাল যাবো, /
হাটে নিয়ে। /
বেচে ক’টা টাকা পাবো। /
বসে, বসে, /
ঘুঘুদের একটানা ডাকও শুনি। /
দাদু
© অঞ্জলি দেনন্দী, মম
এক নাতী দেয় হামাগুড়ি।
আর এক নাতী দেয় সুড়সুড়ি,
খোলা পেয়ে, দাদুর মসৃণ ভুঁড়ি।
দাদুর হাতে, সড়া ভরা, গুড়, মুড়ি।
গুড়ের ওপরে, মাছি করছে, হুড়হুড়ি।
দিদিমা বুড়ী,
ঝনঝনিয়ে হাতের হীরে বসান বারো গাছা চুড়ি,
শীলের ওপরে, সানাচ্ছে, ফল কাটা ছুরি।
দাদুর বয়স চার কুড়ি।
দিদিমার দশ কম, চার কুড়ি।
দুজনেই লাঠি ধরে হাতে, করে বিচে ঘোরাঘুরি।
পূজ্য ওদের, শালগ্রাম, নুড়ি।
পূজর ভোগের খাজা বিলোয়, তারা, ঝুড়ি ঝুড়ি…
বাড়ী ওদের, ওড়িশার পুরী।
শরতের ডাকে আমি
29, 08, 2018
বুধবার
নতূন দিল্লী
© অঞ্জলি দেনন্দী, মম
শরতের ডাকে আমি বিহ্বল।
প্রকৃতির আহ্বানে আমি বিহ্বল।
আকাশ, বাতাস, আলো,
লাগে বড় ভালো!
নেই আর কোন মেঘ যত, কালো।
ভরা নদী, লয়ে,
আপন গতি,
সদাই, চলমতি।
না থামা তার অগ্রগতি….
মহাসাগরের পানে,
যায় সে বয়ে,
ব্যাকুল টানে।
প্রস্ফুটিত সহস্রদল।
অতি রঙোজ্জ্বল!
গুনগুনায়িত ভ্রমরদল।
ওরা বড় চঞ্চল!
মিলনে সকলেই আকুল, তারা।
কুসুমের পরে, তারা,
গুনগুন – শব্দহারা।
আমি আনমনা, নাও।
দুকূল ডেকে কয় মোরে,
” কোথা যাও?
ইধার আও! “
আমি মোর পালে পবন ধরে,
হালে শক্তি ভরে,
অজানা, অচেনার উদ্দেশ্যে,
চলি ভেসে, ভেসে………
দিই না সারা, কারোর ডাকে।
শুধু শরতের ডাকে,
আমি দিশাহারা।
তারই আহ্বানে মোর সামনে বাড়া।
উচ্ছ্বল কল্লোলদল,
সাথী আমার, তারা।
ওরা ডাকে,
চল চল চল,
আমাদের সাথে!
কোনও থামা নেই যাতে,
সদাই গতি তাতে।
বড় আগুয়ান, ওরা সকল!
সেই সে গতির ছন্দে ছন্দে,
আমি, নাও, চলি সদানন্দে।
চিরসাথী মোদের উন্মুক্ত গগন্তল।
শরৎ ডেকে কয়,
গাও গাও গাও! ! !
ও নাও!
মোর মনের গান!
বর্ধিত কর হৃদয়-টান!
জাগ্রত কর আপন প্রাণ!
সময় যে বয়।
শরৎ, ঋতুরানী।
গাইনু আমি, আজি,
তব অন্তরের গান-ই।
তব প্রেম-অভিসারে সাজি।
সন্ধ্যার আশে
© অঞ্জলি দেনন্দী, মম
সন্ধ্যা আসে।
অন্ধকার তার আশেপাশে।
তাকে পেয়ে, সন্ধ্যতারা নাচে, উল্লাসে।
চাঁদও আহ্লাদে, আবেগে, ভাসে।
সন্ধ্যামনি পাপড়ি খুলে হাঁসে।
তারারদল, হাজির হয়, আকাশে।
জোনাকী যত রাশে রাশে,
আঁধারকে ভালোবাসে।
কুলবধূ, দীপ-ধুপ জ্বালে, আবাসে।
তা পবিত্র হয়, আলো ও সুবাসে।
……
ভোজ
© অঞ্জলি দেনন্দী, মম
ভোজ।
রোজ রোজ রোজ…..
রন্ধনশালে, পাকে।
ধনীর প্রাসাদে চলতেই থাকে,
অনুষ্ঠানের মৌজ।
কে রাখে,
খোঁজ?
লাখে লাখে লাখে….
গরীব কত, ভুখাই থাকে!
ওরা তো দুনিয়ার বোঝ!
……….
মালা
© অঞ্জলি দেনন্দী, মম
ফুলের মালা।
ভালোবাসার ভরা ডালা।
বংশীধারী কালা।
রাধার বিরহ জ্বালা।
অবুঝ ব্রজবালা।
হৃদয় – কলসের প্রেমবারি ঢালা।
যমুনা উতলা।
ঝুলনায় দোলা।
ওদের তরে, বৃন্দাবন, সুফলা।
ধন্য ধরার ধূলা।
নদীর স্রোতের পদ্য
© অঞ্জলি দেনন্দী, মম
আমি শুনি,
নদীর স্রোতের পদ্য।
কূলে বসে,
ঢেউ গুনি, গুনি, আর গুনি…
উড়ন্ত পাখির পালক, এর পরে,
খসে খসে……
এসে পরে।
ও নদী! তুই তো দুকূল-মধ্যে,
আবোধ্য।
তবুও এই সংকীর্ন মনে,
সৃষ্টি করিস কেমনে,
এতো সুন্দর স্রোত-পদ্য ?
তোর পদ্যে,
সাগর হয় ব্যাকুল।
তাই তো,
সে তোরে,
কাছে লয়, টেনে।
তখন তোর বধ্য,
ও দুকূল,
হয়, সীমাহীন।
আমি পাই তো,
সদাই তোরে,
বড় আপন করে!
তোর, সকল ঢেউই, মোরে,
খুব ভালো করেই চেনে!
তোর স্রোতের পদ্যের টানে,
আমার হৃদয় হয়, অতি আকুল!
তাই তো,
বারে বারে,
ছুটে আসি,
তোর পানে।
তোর স্রোতের পদ্যেরে,
আরও বেশি ভালবাসি!
আরও বুঝি, অনুভব করি,
তারে !
আমার চাওয়া পাওয়া পূরণ করি,
তোর স্রোতের পদ্যেরে,
রক্তের স্রোতে টেনে এনে,
হার্ট, আর্টারি ও ভেনে।
তু মেরি পেয়ার। মহব্বত।
প্রিয় মোর, তোর, স্রোতের পদ্যের পথ !